একদিন, ইতিহাসের গহিনে হারানো কিছু মুহূর্তের সন্ধানে বেরিয়ে পড়েছিলাম। আমি বেছে নিয়েছিলাম বাংলাদেশের অন্যতম ঐতিহাসিক স্থান আড়ং মসজিদকে, যা মোগল যুগের অমূল্য রত্ন হিসেবে পরিচিত। এটি যশোর জেলার শার্শা উপজেলার আড়ংগ্রামে অবস্থিত।
আড়ং মসজিদটি মোগল স্থাপত্যের এক অনবদ্য উদাহরণ। এটি নির্মিত হয়েছিল ১৫৯৫ সালে, মোগল শাসক আকবরের সময়। মসজিদটি নির্মাণশৈলীতে বিশেষভাবে আকর্ষণীয়, যার গম্বুজ, মিনার এবং সুসজ্জিত দরজা-জানালা মোগল স্থাপত্যের ক্লাসিক বৈশিষ্ট্য ফুটিয়ে তোলে। আমি যখন সেখানে পৌঁছালাম, তখন চারপাশে ইতিহাসের গন্ধ ভেসে আসছিল। মসজিদের প্রবেশমুখে দাঁড়িয়ে আমি বুঝতে পারলাম, এটি কেবল একটি ধর্মীয় স্থান নয়, বরং এক একটি সময়ের সাক্ষী।
মসজিদের অভ্যন্তরে প্রবেশ করার পর, আমি অবাক হয়ে দেখলাম তার বিশাল গম্বুজ এবং সূক্ষ্ম খোদাইকৃত মিনার। এর অন্দরমহলে শান্তি এবং পূণ্য অনুভূত হচ্ছিল। মসজিদের ভেতরের দেয়ালগুলোতে মোগল কালচারের ঐতিহ্য ফুটে উঠেছে। গম্বুজের নীচে দাঁড়িয়ে মনে হচ্ছিল যেন মোগল যুগের কোনো রাজা এখানে বসে ধর্মীয় আচার পালন করতেন।
এখানে কিছু সময় কাটানোর পর আমি মসজিদের আশেপাশের এলাকা ঘুরে দেখলাম। আড়ং গ্রামটা একেবারে শান্তিপূর্ণ। এখানকার স্থানীয় মানুষদের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম, মসজিদটি তাদের কাছে শুধু এক ধর্মীয় স্থান নয়, বরং তাদের ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
যখন সূর্য অস্ত যেতে শুরু করল, তখন আড়ং মসজিদটি তার পুরো সৌন্দর্য ও মহিমা নিয়ে যেন আরো উজ্জ্বল হয়ে উঠল। আমি এই ঐতিহাসিক স্থানটি পরিদর্শন করে বুঝতে পারলাম, ইতিহাস শুধুমাত্র বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ নয়, এটি আমাদের চারপাশে, প্রতিটি প্রাচীর, প্রতিটি স্থাপত্যের মধ্যে বাঁচে।
মোগল যুগের গৌরবময় ইতিহাসের অংশ হতে পেরে আমার ভ্রমণটা ছিল সত্যিই অতুলনীয়।