রবিনের খুব শখ ছিল ঘুড়ি ওড়ানোর। ছোটবেলা থেকেই সে রঙিন ঘুড়ির দিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকত। কিন্তু তাদের গ্রামে ঘুড়ি ওড়ানোর খুব একটা প্রচলন ছিল না।
একদিন রবিন ঠিক করল, সে নিজেই একটা ঘুড়ি বানাবে। বাবার পুরনো খবরের কাগজ, বাঁশের চিকন কাঠি আর মায়ের সেলাই সুতো দিয়ে সে একটা সুন্দর ঘুড়ি তৈরি করল। লাল, নীল আর হলুদ কাগজ দিয়ে ঘুড়ির গায়ে কিছু নকশা করল সে। নাম দিল—"আকাশপরী"।
পরদিন বিকেলে রবিন মাঠে গেল। বাতাস বেশ ভালোই বইছিল। সে ধীরে ধীরে ঘুড়িটা উড়ানোর চেষ্টা করল। প্রথম কয়েকবার ঠিকমতো উড়ল না। কিন্তু রবিন হাল ছাড়ল না। কিছুক্ষণ পর বাতাসে ভেসে উঠল তার "আকাশপরী"।
ঘুড়িটা যত ওপরে উঠছিল, রবিনের আনন্দ তত বাড়ছিল। একসময় সে দেখতে পেল, পাশের গ্রামের কিছু ছেলেও ঘুড়ি নিয়ে এসেছে। শুরু হলো এক অসাধারণ ঘুড়ি যুদ্ধ! রবিন খুব মনোযোগ দিয়ে সুতো টানছিল, কাটছিল, সামলাচ্ছিল।
হঠাৎ, রবিনের ঘুড়িটা আরও ওপরে উঠে গেল, এতটাই যে সেটা তার চোখের আড়ালে চলে গেল। কিছুক্ষণ পর আর দেখা গেল না।
রবিন একটু দুঃখ পেল, কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে তার মুখে হাসি ফুটে উঠল। কারণ সে জানত, তার "আকাশপরী" কোনো এক জায়গায় নতুন কারও হাতে পৌঁছাবে, নতুন করে উড়বে, নতুন স্বপ্ন দেখাবে।
রবিনের মনে হলো, ঘুড়ির মতো স্বপ্নকেও আকাশ ছোঁয়াতে হয়। যদি মন থেকে চাওয়া যায়, তবে স্বপ্ন একদিন ঠিকই বাস্তবে রূপ নেয়!