Posts

ভ্রমণ

আন্দরকিল্লার ঐতিহ্যে হারানো এক দিন

March 15, 2025

Md.Nayeemul Islam Khan

21
View

একটি সুপ্রভাতে চট্টগ্রামের প্রাণকেন্দ্রে প্রবেশ করলাম, যেখানে প্রতিটি ইট আর দেয়ালে যেন হাজার বছরের গল্প লুকিয়ে আছে। আমার আজকের গন্তব্য—আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ। বলা হয়, এই মসজিদটি চট্টগ্রামের পুরোনো ঐতিহ্যের এক নিদর্শন, যেখানে মুগল শাসনের ছোঁয়া ও স্থানীয় স্থাপত্যশৈলীর মিলন ঘটেছে।

যাত্রার শুরু

চট্টগ্রামের ব্যস্ত রাস্তায় দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে, নদীর ধারে ও পুরোনো বাজারের গোলাপী আলোয় মিশে যাওয়া স্মৃতির মধ্যে প্রবেশ করলাম। প্রতিটি মোড়ে, প্রতিটি গলিতে যেন প্রাচীন দিনের সুর বাজছিল। এরপর পৌঁছালাম আন্দরকিল্লার প্রাঙ্গণে, যেখানে পাহাড়ের নরম ছায়া আর হালকা হাওয়ার স্পর্শে সময় যেন থমকে গিয়েছে।

ঐতিহাসিক স্পন্দন

মসজিদের প্রাচীন দরজায় পা রাখতেই মনে হলো—আমি ইতিহাসের এক গভীরে প্রবেশ করেছি। মসজিদের দেয়ালে খোদাই করা সূক্ষ্ম কারুকাজ আর মুগল শৈলীর ছোঁয়া প্রতিটি নিদর্শনে স্পষ্ট। বলা হয়, একসময় এই স্থানে চট্টগ্রাম বন্দরের সুরক্ষা এবং বাণিজ্যের রথ চলত; তখন থেকেই এই প্রাচীন মসজিদ শুধু ধর্মীয় উপাসনার স্থান নয়, বরং সমাজ ও সংস্কৃতির এক অমূল্য স্মৃতি হয়ে আছে।

আমি মসজিদের আশেপাশে একটু হাঁটতে বেরিয়ে এলাম। প্রাচীন কালের ঐতিহ্য, ইতিহাসের রত্নগুলো স্পষ্ট দেখাল—দর্শনীয় ঝিলিক, প্রাচীন পাথরের সৌন্দর্য আর স্থানীয় মানুষের আন্তরিকতা, যারা আজো এই ইতিহাসকে জীবন্ত রাখে। ছোট একটি আঙ্গিনায় বসে স্থানীয়দের কথা শুনতে শুনতে মনে হলো, যেন অতীতের কালের সুর যেন আজকের হাওয়ায় ভেসে আসছে।

বিদায়ের মুহূর্ত

সূর্যের কোমল আলো মসজিদের ছাদের উপর পড়তে শুরু করলে, পুরো প্রাঙ্গণ যেন স্বর্ণালী দীপশিখায় মোড়ানো। বিদায়ের আগে আমি আবারো একবার ফিরে তাকাল—এই ঐতিহাসিক স্থাপত্য, এই নিস্তব্ধ গলি, এই প্রতিটি ইট যেন বলে, “আমাদের ইতিহাসে তুমি চিরকাল অমলিন থাকবে।”

এই ভ্রমণ আমাকে শিখিয়ে দিল, ইতিহাস কেবল বইয়ের পাতায় লেখা নয়, প্রতিটি স্থাপত্য, প্রতিটি স্মৃতি আমাদের চারপাশে বয়ে চলে। আন্দরকিল্লার ঐতিহ্যে হারানো এক দিনের অভিজ্ঞতা চট্টগ্রামের প্রাণে এক অমর ছাপ রেখে গেল, যা আমার হৃদয়ে চিরদিন জ্বলতে থাকবে।

Comments

    Please login to post comment. Login