বাংলাদেশের তরুণরা রাজনৈতিক অঙ্গনে বরাবরই মেধাবী আর সৃষ্টিশীল। ১৯৭১ এর স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সিরাজুল আলম খানের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল মেধাবী তরুণ জাসদ গঠন করে। তারা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে "বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র" নামের এক কল্পনা বিলাসী শাসন কাঠামোর স্বপ্ন দেখায় বাংলাদেশিদের। জাসদ দলটার অগ্রভাগে ছিলেন আ স ম আব্দুর রব, শাহজাহান সিরাজ, হাসানুল হক ইনুর মত রণাঙ্গনের তরুণ মুক্তযোদ্ধা।
৭০ দশকের সময়টা ছিলো শীতল যুদ্ধের। পুজিবাদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর সমাজতান্ত্রিক রাশিয়ার পাল্টাপাল্টি যুদ্ধাস্ত্র প্রদর্শনের যুদ্ধ। তখন বিশ্বে সুপার পাওয়ার সোভিয়েত ইউনিয়ন অর্থাৎ সমাজতান্ত্রিক রাশিয়া। মাও সে তুং এর চীনও সমাজতান্ত্রিক আদর্শ গ্রহণ করে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে। বিশ্বব্যাপী তখন সমাজতন্ত্রের জয়জয়কার। দলে দলে মেধাবী তরুণরা সেদিকে ছুটছে।
এরই ধারাবাহিকতায় জাসদের "বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র" ধারণাটি সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষমতাচ্যুত ও নিহত হলে জাসদের রাস্তা পরিষ্কার হয়। কিন্তু সামরিক বাহিনী জাসদের Prescription অনুযায়ী দেশে সমাজতন্ত্র কায়েম করেনি। একের পর এর সামরিক অভ্যুত্থান এবং শেষ পর্যন্ত মার্শাল ল'য়ের মধ্য দিয়ে জাসদ এবং তাদের "বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র" দুই মিলে হারিয়ে যায়।
ইতিহাস ফিরে ফিরে আসে। এরই ধারাবাহিকতায় একটা গণ অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ২৪ এর তরুণ প্রজন্ম আমাদের সামনে নিয়ে এসছে নতুন "সেকেন্ড রিপাবলিক" ধারণা। এই তত্ত্বটা প্রয়োগ করতে হলে একেবারে কৃষক-মজুর শ্রেণির কাছে বোধগম্য করতে হবে যেটা "বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র" নিয়ে জাসদ তখন করতে পারেনি।