
ধ্বংশের আহ্বান
- Ultra Thinker
প্রথম অধ্যায়: পতনের শুরু
রাজীব আজ আবার ছাদে এসেছে। ২০ তলা ভবনের এই ছাদ তার কাছে এক অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এখানে এলে মনে হয়, সে আবার নীহারিকার কাছে যেতে পারবে। মনে হয়, তার স্ত্রী এখনো পাশেই আছে, কেবল একটা ডাকে ফিরে আসবে।
রাতের শহরটা অদ্ভুত সুন্দর। জ্বলজ্বলে আলো, নিচে ছুটে চলা গাড়িগুলো, আর আকাশে ঝুলে থাকা এক ফালি চাঁদ—সবকিছু যেন একসাথে জীবন্ত। কিন্তু রাজীবের চোখে এগুলো কেবলই ছায়া, নিস্তেজ, অনুভূতিহীন।
সে দাঁড়িয়ে আছে ছাদের কিনারায়, নিচের দিকে তাকিয়ে। বাতাসে একটা চাপা গুঞ্জন, যেন কেউ ওর নাম ধরে ডাকছে।
"এবার চল না, রাজীব! আমরা একসাথে উড়বো!"
কান পাতলে সে শুনতে পায় প্রিয়তমা স্ত্রী নীহারিকার কণ্ঠস্বর। কিন্তু নীহারিকা তো মারা গেছে—তিন বছর হলো! তারপরও সে স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছে, অনুভব করতে পারছে তার অস্তিত্ব।
রাজীব কাঁপতে থাকা ঠোঁটে মৃদু হাসির রেখা টানে।
"আমি প্রস্তুত, নীহা। এবার তো আর হাত ছাড়বে না, তাই তো?"
সেদিনও তারা একসাথে দাঁড়িয়েছিল এই ছাদে। কিন্তু নীহারিকা হাত ছেড়ে দিয়েছিল। বাতাস চিরে নিচে পড়ে গিয়েছিল সে, রেখে গিয়েছিল অসীম শূন্যতা।
এরপর থেকে সে বারবার এই ছাদে আসে, বারবার লাফ দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু প্রতিবারই পা আটকে যায়, এক অদৃশ্য হাত তাকে ধরে ফেলে।
হাসপাতালের ডাক্তাররা বলে, এটা তার মানসিক অসুস্থতা—সিজোফ্রেনিয়া। কিন্তু রাজীব জানে, নীহারিকা তাকে ডাকে, তাকে প্রতীক্ষা করায়।
হঠাৎ অনুভব করল, তার হাতের ওপর আরেকটা হাত রাখা। নরম, উষ্ণ।
"এইবার একসাথে রাজীব। আমি তোমার হাত ছাড়বো না।"
সে মৃদু হেসে চোখ বন্ধ করল। আর পর মুহূর্তে...
"রাজীব!"
একটা শক্তিশালী টান তাকে পেছনে ফেলে দিল। কয়েকজন নিরাপত্তারক্ষী তাকে ধরে ফেলেছে।
"না! আমাকে যেতে দাও!" রাজীব চিৎকার করে কাঁদতে থাকে।
কিন্তু চারপাশের সবাই বোবা চোখে তাকিয়ে থাকে। নিচে তাকালে, সেখানে কিছুই নেই। কোনো ছায়া, কোনো হাত—শুধুই অন্ধকার।
নীহারিকা কি সত্যিই ডাকছিল? নাকি সেটা শুধুই তার ভাঙা মনের কল্পনা?
কেউ জানে না। শুধু রাজীব জানে, প্রতিদিন রাতের বাতাসে কেউ তাকে ডেকে যায়—"রাজীব, এবার তো হাত ছাড়বে না, তাই তো?"
দ্বিতীয় অধ্যায়: সুখের ছদ্মবেশ
নীহারিকার সাথে রাজীবের পরিচয়টা ছিল সিনেমার গল্পের মতো। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় পরিচয়, তারপর প্রেম, আর অবশেষে বিয়ে। তারা একে অপরের সবকিছু হয়ে উঠেছিল।
কিন্তু রাজীবের কিছু বন্ধু ছিল, যারা সবসময় ওদের সম্পর্ক নিয়ে ঠাট্টা-তামাশা করত। বিশেষ করে রনি, শুভ আর দীপ—এই তিনজনের আচরণ নীহারিকার প্রতি সবসময়ই কিছুটা অস্বস্তিকর ছিল। রাজীব সেটা বুঝত, কিন্তু কখনো গুরুত্ব দেয়নি। ওদের সে ছোটবেলার বন্ধু বলে মানত, ভাবত, ওরা কেবল মজা করছে।
বিয়ের কয়েক মাস পরই রাজীবের অফিসের কাজে সপ্তাহখানেকের জন্য বাইরে যেতে হয়। সে ফিরে এলে দেখল, নীহারিকা বদলে গেছে। আগের মতো প্রাণবন্ত নেই, সারাক্ষণ ভয় ভয় চোখে তাকিয়ে থাকে, রাতে একা থাকতে চায় না।
"নীহা, তোমার কী হয়েছে? তুমি এত চুপচাপ কেন?"
নীহারিকা কিছু বলত না। শুধু রাজীবকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখত, যেন ওর শরীরেই আশ্রয় খুঁজছে।
রাজীব সেটা বুঝতে পারেনি। যদি বুঝত, তাহলে হয়তো সবকিছু পাল্টে যেত।
তৃতীয় অধ্যায়: নীহারিকার স্বীকারোক্তি
সেদিন ছিল বর্ষার এক কালো রাত। নীহারিকা বারবার ভয় পেয়ে উঠছিল।
"রাজীব, আমি তোমাকে কিছু বলব। কিন্তু তুমি আমাকে ভুল বুঝো না। তুমি আমাকে বিশ্বাস করো, প্লিজ!"
"বলো, নীহা।"
নীহারিকার কাঁপা কাঁপা ঠোঁট থেকে বেরিয়ে এলো ভয়ানক সত্য।
রাজীব যখন শহরের বাইরে ছিল, তখন রনি, শুভ আর দীপ ওদের বাসায় এসেছিল। নীহারিকা তাদের বিশ্বাস করেছিল। কিন্তু সেই বিশ্বাস ওরা ভেঙে দিয়েছিল। প্রথমবার যখন নীহারিকাকে একা পেয়ে ওরা ওর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, তখন সে চিৎকার করেছিল। কিন্তু ফাঁকা ফ্ল্যাটে ওর চিৎকার কেউ শুনতে পায়নি।
দ্বিতীয়বার যখন তারা এলো, তখন নীহারিকা বাধা দেওয়ার শক্তিটুকুও হারিয়ে ফেলেছিল।
নীহারিকা চেয়েছিল সব বলবে, কিন্তু পারল না। কারণ ওরা হুমকি দিয়েছিল—"রাজীবকে যদি কিছু বলিস, তাহলে ওকেও শেষ করে দেব।"
এতদিনের জমে থাকা কান্না ঝরতে শুরু করল নীহারিকার চোখ থেকে।
রাজীব প্রথমে বিশ্বাস করতে পারেনি। কিন্তু নীহারিকার ফাঁকা দৃষ্টি, দুঃস্বপ্নের মতো জড়োসড়ো হয়ে থাকা শরীর দেখে সে বুঝতে পারল—এটা মিথ্যে নয়।
"আমি বাঁচতে চাই না, রাজীব। আমি কীভাবে বাঁচব এই বোঝা নিয়ে?"
রাজীব সেদিন কিছুই বলতে পারেনি।
চতুর্থ অধ্যায়: নীহারিকার শেষ চিঠি
নীহারিকার স্বীকারোক্তির পর থেকে রাজীব আর আগের মতো থাকতে পারেনি। রাতের ঘুম চলে গেছে, খাবারের স্বাদ হারিয়েছে। ঘরটাও যেন একটা অদৃশ্য অন্ধকারে ভরে গেছে, যেখানে কেবল নীহারিকার ভীত চোখের ছায়া ভাসে।
রাজীব প্রতিজ্ঞা করেছিল, সে কিছু করবে। কিন্তু কী করবে? পুলিশের কাছে গেলে কি কিছু হবে? রনি, শুভ, দীপ—ওরা তো সমাজের উঁচু তলার মানুষ, টাকা দিয়ে সব কিনে ফেলতে পারবে।
রাজীব ভেবেছিল, নীহারিকাকে সময় দেবে। ওকে বোঝাবে, একসঙ্গে সব ঠিক করবে।
কিন্তু সে ভুল করেছিল।
সেদিন অফিস থেকে ফেরার পর দরজা বন্ধ পাওয়া গেল। অনেক ডাকাডাকির পরও দরজা খুলছিল না। ভেতর থেকে কোনো সাড়া নেই।
আতঙ্কিত হয়ে রাজীব দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকল।
বেডরুমে ঢুকেই দেখল, নীহারিকা ফ্লোরে পড়ে আছে। শরীর নিথর। তার পাশে একটা ছোট্ট চিঠি।
"আমি বাঁচতে চাইনি, রাজীব। আমি তোমার জন্যই এতদিন ছিলাম। কিন্তু আমি পারছি না। আমি তোমাকে বোঝাতে পারব না, প্রতিদিন নিজেকে কীভাবে ধ্বংস হতে দেখছি। আমি বেঁচে থেকেও মৃত হয়ে গেছি। ক্ষমা করো আমাকে।"
রাজীবের হাত থেকে চিঠিটা পড়ে গেল।
তারপর?
তারপর সে শুনতে পেল একটা আওয়াজ—উপরে ছাদে কেউ হাঁটছে!
সে পাগলের মতো দৌড়ে ছাদে গেল, আর ঠিক তখনই দেখল—নীহারিকা কিনারার ধারে দাঁড়িয়ে আছে, চুলগুলো বাতাসে উড়ছে।
"নীহারিকা!"
সে হাত বাড়াল, কিন্তু ঠিক তখনই নীহারিকা নিচে পড়ে গেল।
---
পঞ্চম অধ্যায়: অন্ধকারের মাঝে ডুবে যাওয়া
নীহারিকার মৃত্যু রাজীবের জন্য একটা স্থায়ী দুঃস্বপ্ন হয়ে গেল। সে পুলিশের কাছে গিয়েছিল, মামলা করেছিল।
কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শী কেউ ছিল না, মেডিকেল রিপোর্টে আত্মহত্যাই লেখা হলো।
"আপনার স্ত্রী মানসিকভাবে দুর্বল ছিলেন, আপনি জানেন না?"
"কিন্তু… ওর সাথে যা হয়েছে…"
"আপনার কাছে কোনো প্রমাণ আছে?"
কোনো প্রমাণ ছিল না।
অভিযুক্ত তিনজন তখনও রাজীবের আশেপাশেই ছিল। শুভ একদিন ওকে ফোন করল।
"ভাই, এসব নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি কইরো না। তুই তো জানিস, কিছুই করতে পারবি না। তোর বউ মরছে, মরছে। এটা তো আমাদের দোষ না, তাই না?"
রাজীব কিছু বলল না।
এরপর একদিন রাতে সে রনির মুখোমুখি হলো।
রনি সিগারেট হাতে হাসছিল। "ওই পাগলিটার জন্য এত টেনশন নিস না, ভাই। মেয়েদের লাইফ এমনই হয়। তোর বউ তো…"
এরপর কী হলো, রাজীব মনে করতে পারে না।
সে শুধু মনে করতে পারে, কীভাবে তার মুঠো খুলে গিয়েছিল, কীভাবে তার চোখের সামনে রনি ছাদ থেকে নিচে পড়ে গিয়েছিল।
পুলিশ এলো। কিন্তু তারা এটাকে একটা দুর্ঘটনা বলেই ধরে নিল।
কিন্তু রাজীব জানত, এটা দুর্ঘটনা ছিল না।
---
ষষ্ঠ অধ্যায়: রক্তের প্রথম স্বাদ
রনির মৃত্যু সংবাদ শহরে আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়ল। সবাই বলছিল, সে নাকি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছাদ থেকে পড়ে গেছে।
কিন্তু রাজীব জানত, এটা মিথ্যে।
রনি ছাদ থেকে পড়ে যাওয়ার আগে তার চোখে ভয় ছিল, অসহায়ত্ব ছিল। সে রাজীবকে চিৎকার করে বলেছিল, "তুই এটা করছিস কেন? প্লিজ থাম! আমি… আমি তো শুধু…!"
এরপরই তার শরীর বাতাসে উড়তে লাগল, তারপর নিচে আছড়ে পড়ল।
রাজীব ছাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে নীচে তাকিয়েছিল।
তার ভেতরে কোনো অনুশোচনা কাজ করেনি।
কিন্তু একটা অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছিল—এক ধরনের শান্তি।
তবে কি প্রতিশোধই একমাত্র পথ?
সেদিন রাতে সে আবার শুনতে পেল সেই কণ্ঠস্বর।
"রাজীব… এবার আমি হাসতে পারছি…"
সে দ্রুত আয়নার দিকে তাকাল।
নীহারিকা সেখানে দাঁড়িয়ে আছে। চোখে জল, ঠোঁটে এক অদ্ভুত প্রশান্তি।
এতদিন পর প্রথমবার সে তাকে হাসতে দেখল।
---
সপ্তম অধ্যায়: দ্বিতীয় শিকার
রনির মৃত্যুর কয়েকদিন পর থেকেই শুভ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। সে বুঝতে পারছিল, এটা কোনো দুর্ঘটনা নয়।
একদিন অফিস থেকে ফেরার পথে সে রাজীবের সামনে গিয়ে দাঁড়াল।
"রাজীব, প্লিজ আমাকে মাফ করে দে! আমি… আমি দোষী ছিলাম, কিন্তু আমি জোর করিনি! আমি শুধু চুপ ছিলাম!"
রাজীব কিছু বলল না।
শুভ কেঁদে পড়ল। "আমি সত্যি ভয় পেয়ে গেছিলাম, আমি কিছু করতে পারিনি।"
রাজীব এবার হাসল।
"তাহলে এবার সাহস নিয়ে মরতে শিখে যা।"
সেদিন রাতে শুভকে পাওয়া গেল তার নিজের ফ্ল্যাটের সিলিং ফ্যানে ঝুলতে।
তার মৃত্যু আত্মহত্যা বলে ঘোষণা করা হলো।
কিন্তু রাজীব জানত, এটা আত্মহত্যা ছিল না।
---
অষ্টম অধ্যায়: শেষ শত্রু
শুভর মৃত্যুর পর দীপ আত্মগোপনে চলে যায়।
তবে রাজীব জানত, সে কোথায় আছে।
এক রাতে সে দীপের আস্তানায় গিয়ে হাজির হলো।
"তুই এসেছিস আমাকে মারতে, তাই না?" দীপ ফিসফিস করে বলল।
রাজীব কিছু বলল না, শুধু চেয়ারে বসে দীপের দিকে তাকিয়ে থাকল।
দীপের চোখে একটা অদ্ভুত উন্মাদনা ছিল। "তুই জানিস না, রাজীব, আমরা সবাই শিকার। আমি, রনি, শুভ—আমাদেরও আমাদের ভয় আছে! আমরা জানতাম না, এটা এতদূর যাবে!"
রাজীব ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়াল।
"নীহারিকাকে বলিস, আমি দুঃখিত…"
এরপর কেবল একটা শব্দ শোনা গেল।
একটা থাপ্পড়ের শব্দ।
তারপর নিস্তব্ধতা।
---
নবম অধ্যায়: ছাদের শেষ ডাক
সবাই মরে গেছে।
তবুও রাজীব রাতে ঘুমোতে পারে না।
তার কানে কেবল একটা কথাই বাজতে থাকে।
"রাজীব… এবার তো হাত ছাড়বে না, তাই তো?"
সে বুঝতে পারে, প্রতিশোধ তাকে মুক্তি দিতে পারেনি।
তাকে মুক্তি দেবে একটাই জিনিস।
সে আবার ছাদে ওঠে।
আকাশের দিকে তাকায়।
এবার সত্যি সত্যি নীহারিকাকে দেখতে পায়।
সে হাত বাড়িয়ে দেয়।
তবে কি এবার রাজীব সত্যিই লাফ দেবে?
নাকি সে মুক্তির নতুন পথ খুঁজবে?
--------------------
দশম অধ্যায়: চিরস্থায়ী পতন
রাজীব আবার ছাদে দাঁড়িয়ে আছে।
এই জায়গাটা তার কাছে স্বপ্ন আর দুঃস্বপ্নের মিলনস্থল হয়ে উঠেছে। এখানেই সে প্রথম নীহারিকার হাত ধরেছিল, এখানেই সে ওকে হারিয়েছিল।
রাত গভীর। বাতাসে একটা অদ্ভুত শীতলতা।
নীচে তাকিয়ে দেখে—শহরটা আজও তার মতোই নির্লিপ্ত। রঙিন আলোয় ভাসছে, কিন্তু কোথাও কোনো অনুভূতি নেই।
সে চোখ বন্ধ করে।
তখনই আবার সেই কণ্ঠস্বর ভেসে আসে।
"রাজীব… এইবার তো হাত ছাড়বে না, তাই তো?"
সে চোখ খুলে তাকায়।
নীহারিকা তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। চোখ দুটো গভীর, দুঃখ আর প্রশান্তির এক অদ্ভুত মিশ্রণ।
"নীহা…"
"তুমি অনেক কষ্ট পেয়েছ, রাজীব। এবার থামো। এবার বিশ্রাম নাও…"
সে হাত বাড়িয়ে দেয়।
রাজীব এবার আর দেরি করে না।
সে ধীরে ধীরে সামনের দিকে এগিয়ে যায়। বাতাস তাকে আলতোভাবে স্পর্শ করে, যেন বিদায় জানাচ্ছে।
তারপর…
একটা নিঃশব্দ পতন।
অন্ধকারে ঢেকে যায় সবকিছু।
তবে কি এটাই মুক্তি?
হয়তো।
নিচে পড়ার ঠিক আগমুহূর্তে রাজীব অনুভব করে—নীহারিকা সত্যি তাকে জড়িয়ে ধরেছে।
এবার আর হাত ছাড়বে না।
এবার তারা একসাথে। চিরদিনের জন্য।