নোবেলজয়ী তানজানিয়ান বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ উপন্যাসিক আব্দুলরাজাক গুরনাহর নতুন উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। 'থেফট' নামের ৩৬৮ পৃষ্ঠার এই বইটি র্যান্ডম হাউজ থেকে ১৮ মার্চ প্রকাশিত হয়। এটি নোবেল পাওয়ার পর তার লেখা প্রথম উপন্যাস।
গুরনাহ জানান, ২০২১ সালে উপন্যাসটি লেখার সময় তিনি নোবেল পুরস্কার পান। এরপর দীর্ঘদিন ধরে নানা ব্যস্ততার কারণে বইটি লেখা থেকে বিরতি নিতে হয়েছিল তাকে।
এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নোবেল পাওয়ার পর বইটির ওপর আমি আর মনোযোগ দিতে পারিনি। বুঝতে পারছিলাম, আমি আর আগের মতো কাজ করতে পারব না। আমি এই ধরণের চাপের মধ্যে কাজ করতে পছন্দ করি না।’
তবে ব্যস্ততা কাটিয়ে তিনি আবার অসমাপ্ত উপন্যাসটি শেষ করবেন বলে ঠিক করেন। অবশেষে তিনি সেই অসমাপ্ত বইয়ের পৃষ্ঠাগুলোতে ফিরে আসেন এবং দেখতে পান এখনও এটি শেষ করার কিছু সুযোগ আছে।
থেফট উপন্যাসটি নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে তানজানিয়ার প্রেক্ষাপটে লেখা হয়েছে। সে সময় দেশটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। সরকার তার বৈদেশিক মুদ্রা আইন পরিবর্তন করেছিল। ফলে পর্যটকরা পূর্ব আফ্রিকার উপকূলের ঠিক কাছে অবস্থিত জাঞ্জিবার দ্বীপে ব্যাপকহারে আসতে থাকে। সেখানে জন্মগ্রহণকারী গুরনাহ বলেন, 'পর্যটনের বিপুল অর্থ তার সঙ্গে নতুন হোটেল, নতুন মানুষ, এনজিও নিয়ে এসেছে। কিন্তু পর্যটকদের আগমন অনেক দুর্নীতিও এনেছে।'
তিনি বলেন, ‘কিছু সৈকত এবং রেস্তোরাঁ একচেটিয়াভাবে পর্যটকদের জন্য হয়ে ওঠে। সেখানে স্থানীয়দের যাওয়ার অনুমতি ছিল না। লোকেরা পর্যটকদের খুশি করার জন্য তাদের কাছে মিথ্যা গল্প বিক্রি করতে শুরু করে।’
থেফট উপন্যাসে তিনটি কেন্দ্রীয় চরিত্র রয়েছে। সেখানে আছে শিক্ষিত এবং একধরনের অহংকারী করিম। তার তরুণী স্ত্রী ফৌজিয়া, যে মৃগীরোগে ভুগছে। এছাড়া তাদের তরুণ চাকর বদর। ফৌজিয়া এবং করিম চাকর বদরকে ছোট ভাইয়ের মতোই দেখে। তারা সবাই ভিন্ন জগৎ থেকে এসেছে, তবুও তাদের মধ্যে কিছু মিল রয়েছে। ন্যায়সঙ্গত হোক বা অন্যায়, তারা সকলেই তাদের বাবা-মায়ের কাছে কোনও না কোনওভাবে অবাঞ্ছিত বোধ করে।
উল্লেখ্য, আব্দুলরাজাক গুরনাহ ১৯৪৮ সালে তানজানিয়ার জাঞ্জিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬০ সালে শরণার্থী হিসেবে যুক্তরাজ্যে চলে আসেন। ২০২১ সালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান। তার উল্লেখযোগ্য বইগুলো হলো, প্যারাডাইস, বাই দ্য সি, আফটারলাইভস, গ্রাভেল হার্ট।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, এনপিআর