
সংখ্যা, গাণিতিক দৃষ্টিকোণ থেকে, আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। ছোট-বড় সংখ্যার ব্যবহারে আমরা প্রায় সবকিছু পরিমাপ করি, কিন্তু যখন আমরা সংখ্যাগুলির সীমানা ছাড়িয়ে যাই, তখন অসীম পরিমাণে বড় সংখ্যার ধারণা আমাদের সামনে আসে। এই বিশাল সংখ্যাগুলি গাণিতিকভাবে ব্যবহার হয়, এবং সেগুলি আমাদের বিশ্বকে আরও বিশদভাবে বোঝার সুযোগ দেয়। তবে, আজকের আলোচনা শুধু সংখ্যা নিয়েই নয়, এর সাথে গুগল নামক বিশ্বের সবচেয়ে বড় সার্চ ইঞ্জিনের নামকরণের রহস্যও জড়িত।
সংখ্যাগুলির বিশালতা
সংখ্যা গুলির ক্রম অনুযায়ী যখন আমরা এগুলি পর্যবেক্ষণ করি, তখন তা আমাদের বিস্মিত করে। শুরু থেকে গুগোলপ্লেক্স পর্যন্ত বিভিন্ন বড় সংখ্যাগুলির নাম এবং সংখ্যা নিম্নরূপ:
- ১০ (Ten) - ১০
- শত (Hundred) - ১০০
- হাজার (Thousand) - ১,০০০
- লাখ (Lakh) - ১,০০,০০০
- কোটি (Crore) - ১,০০,০০,০০,০০০
- বিলিয়ন (Billion) - ১,০০০,০০,০০,০০০ (১০^৯)
- ট্রিলিয়ন (Trillion) - ১,০০০,০০০,০০০,০০০ (১০^১২)
- কোয়াড্রিলিয়ন (Quadrillion) - ১,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০ (১০^১৫)
- কুইন্টিলিয়ন (Quintillion) - ১,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০ (১০^১৮)
- এক্সাটিলিয়ন (Sextillion) - ১,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০ (১০^২১)
- সেপ্টিলিয়ন (Septillion) - ১,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০ (১০^২৪)
- অক্টিলিয়ন (Octillion) - ১,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০ (১০^২৭)
- নোনিলিয়ন (Nonillion) - ১,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০ (১০^৩০)
- ডেসিলিয়ন (Decillion) - ১,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০ (১০^৩৩)
- হেনটিলিয়ন (Hentillion) - ১,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০০,০০০,০০০ (১০^৩৬)
- ডুটিলিয়ন (Dutillion) - ১,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০ (১০^৩৯)
- ট্রিলিয়ন (Trillion) - ১,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০ (১০^৪২)
- কুইন্টিলিয়ন (Quintillion) - ১,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০ (10^48)
- গুগোল (Googol) - ১০^১০০
- গুগোলপ্লেক্স (Googolplex) - ১০^গুগোল (10^10^100)
এই বিশাল সংখ্যাগুলি স্রেফ তাত্ত্বিকভাবে গণনা করা হয় এবং সাধারণত মহাবিশ্বের পরিসর বা অন্যান্য বিশাল পরিমাণ পরিমাপ করতে ব্যবহৃত হয়। এই ধরনের সংখ্যা আমাদের জ্ঞান এবং ধারণার সীমাকে প্রসারিত করে।
গুগলের নামকরণের রহস্য
গুগল, বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন, তার নামকরণের পেছনে একটি বড় সংখ্যা—গুগোল—থাকা সত্ত্বেও, এটি সম্পূর্ণভাবে একটি ব্যতিক্রমী গল্প। গুগোল হলো ১ এর পর ১০০টি শূন্য, যা এক বিশাল সংখ্যার প্রতীক। গুগলের প্রতিষ্ঠাতারা, ল্যারি পেজ এবং সার্গেই ব্রিন, যখন তাদের সার্চ ইঞ্জিনের জন্য একটি নাম খুঁজছিলেন, তারা এই বিশাল সংখ্যাটিকে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন।
গুগোল নামটি তারা বেছে নিয়েছিলেন কারণ এটি প্রতিফলিত করত তাদের উদ্দেশ্যকে, যা ছিল বিশ্বব্যাপী সমস্ত তথ্যকে এত বিশাল পরিমাণে সংগঠিত করা এবং সহজে মানুষের কাছে পৌঁছানো। গুগোল এর দ্বারা তারা বুঝিয়েছিলেন যে, তারা একটি সংখ্যা যা পৃথিবীর সমস্ত তথ্যকে ধারণ করতে পারে, এমন একটি বিশাল ধারণা তৈরি করতে চান।
গুগোল নামটি আসলে গুগোল নামক সংখ্যার একটি বিকৃত রূপ, যা এডওয়ার্ড ক্যাসনার নামক এক গণিতবিদ প্রথম পরিচিত করেন। গুগোল নামটি এমন একটি বিশাল সংখ্যা, যা পৃথিবীতে থাকা সমস্ত অণু এবং পদার্থের থেকেও অনেক বড়।
উপসংহার
বিশাল সংখ্যাগুলির ধারণা আমাদের মহাবিশ্ব এবং পৃথিবীর গাণিতিক বিশালতা বুঝতে সাহায্য করে, আর গুগলের নামকরণ সেই বিশালতার প্রতিফলন। গুগল নামটি যা উদ্দেশ্যকে প্রতিফলিত করে, তা হলো অসীম তথ্যের সংকলন এবং প্রতিটি অনুসন্ধানে সঠিক উত্তর সরবরাহ করা। গুগলের নাম এবং বিশাল সংখ্যাগুলির গাণিতিক গুরুত্ব একে অপরের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত, যা আমাদের চিন্তাভাবনাকে আরও গভীরভাবে প্রসারিত করে।