রাতের আঁধার ঘনিয়ে এসেছে। গ্রামের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা পুরনো পরিত্যক্ত বাড়িটি আজও রহস্যে ঘেরা। কুসংস্কারে বিশ্বাসী গ্রামবাসীরা বলে, সন্ধ্যার পর কেউ সেখানে গেলে আর ফিরে আসে না। শ্যামল, সুজন, আর রাকিব ছিল ভয়হীন স্বভাবের তিন বন্ধু। তারা ঠিক করল, যাই হোক, আজ রাতেই ওরা সেই বাড়ির রহস্য উদঘাটন করবে।
তিন বন্ধু টর্চলাইট হাতে বাড়িটির দিকে এগিয়ে গেল। দরজার সামনে পৌঁছাতেই হঠাৎ বাতাসের ঝাপটায় দরজাটি নিজে থেকেই খুলে গেল! গা ছমছম করা অন্ধকার, চারপাশে পোকামাকড়ের শব্দ, আর দূর থেকে ভেসে আসা শিয়ালের ডাক—সব মিলিয়ে এক অজানা আতঙ্ক চেপে বসল ওদের মনে।
ভেতরে ঢুকে তারা দেখল, দেয়ালজুড়ে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ! পুরনো আসবাবপত্র এলোমেলো পড়ে আছে। এমন সময় পেছন থেকে এক ঠান্ডা বাতাসের ঝাপটা এলো, আর সাথে সাথে দরজাটা বিকট শব্দে বন্ধ হয়ে গেল! তিনজনেই চমকে উঠল।
হঠাৎ করেই একটা চাপা হাসির শব্দ এল ঘরের কোণ থেকে। টর্চের আলো ফেলতেই ওরা দেখতে পেল—একটা ছায়ামূর্তি ধীরে ধীরে ওদের দিকে এগিয়ে আসছে। চোখদুটো জ্বলজ্বল করছে, আর মুখে অস্বাভাবিক এক হিংস্র হাসি!
শ্যামল ভয়ে চিৎকার করে উঠল, "চলো পালাই!"
কিন্তু পা যেন জমে গেছে মাটির সাথে। তখনই সেই ছায়ামূর্তি গর্জন করে উঠল, "তোমরা চলে যাও! নাহলে তোমাদেরও আমার মতো ভাগ্য হবে!"
আর দেরি না করে তিনজন জানালা ভেঙে দৌড় দিল। সকাল হলে গ্রামবাসীদের সব বলল তারা। বৃদ্ধ মোক্তার মিয়া শোনার পর বললেন, "ওই বাড়িতে একসময় জমিদারের পরিবারের সবাইকে হত্যা করা হয়েছিল। তখন থেকেই সেখানে তারা ঘুরে বেড়ায়…"
সেই রাতের পর কেউ আর সাহস করেনি ওই বাড়ির সামনে যাওয়ার। আর তিন বন্ধু? তারা আর কখনো ভূতের অস্তিত্ব নিয়ে সন্দেহ করেনি…
শেষ