রাত তখন প্রায় বারোটা। নির্জন গ্রামের পাশে পুরনো এক বাংলা বাড়ি, যা সবাই "ভূতুড়ে বাংলো" বলে ডাকে। কথিত আছে, বাড়িটিতে যারা রাত কাটাতে যায়, তারা আর ফিরে আসে না!

তিন বন্ধু—রিয়াদ, আদিব, আর নিশাত—সেই রহস্য উদ্ঘাটন করতে সাহস করে বাংলোটিতে রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত নেয়। লোকজন তাদের সাবধান করলেও, তারা ভয় পায়নি। ব্যাগে টর্চ, মোবাইল, আর কিছু খাবার নিয়ে বাংলোর দিকে পা বাড়ায়।
বাড়িটিতে ঢুকতেই অদ্ভুত এক শীতল অনুভূতি তাদের চমকে দেয়। দেওয়ালে সাদা-কালো পুরনো ছবি, ধুলোমাখা আসবাবপত্র, আর ভাঙা জানালা চারপাশে এক অদ্ভুত পরিবেশ তৈরি করেছিল।
রাত গভীর হলে, আচমকা এক বিকট আওয়াজ শোনা যায়। নিশাত চিৎকার করে ওঠে, "ওই যে! কেউ একজন জানালার পাশে দাঁড়িয়ে আছে!" রিয়াদ দ্রুত টর্চ মারতেই সেখানে কিছুই দেখা গেল না।
আদিব হেসে বলল, "ভূত-টুত কিছু নেই, এগুলো আমাদের কল্পনা মাত্র।"
ঠিক তখনই দরজা নিজে থেকে বন্ধ হয়ে গেল! বাতাস বইতে লাগল ভেতরেই, যেন কেউ ফিসফিস করে কিছু বলছে। মোবাইলের আলো ঝাপসা হয়ে আসছিল, আর পায়ের নিচে কে যেন হেঁটে যাচ্ছে এমন শব্দ হচ্ছিল!
ভয় কাটিয়ে উঠে তারা উপরের ঘরে গেল। দরজা খুলতেই দেখতে পেল একটি পুরনো ডায়েরি পড়ে আছে। তাতে লেখা—
"আমি এই বাড়ির শেষ বাসিন্দা। এক রাতে কিছু দস্যু আমাকে হত্যা করে এখানে পুঁতে রেখেছে। কেউ যদি আমার কথা পড়ে, তাহলে দয়া করে আমাকে মুক্তি দাও!"
এই পড়ে তিন বন্ধু ভয় পেয়ে যায়। কিন্তু তারা হাল ছাড়ল না। পরদিন গ্রামবাসীদের নিয়ে বাংলোর পুরনো উঠোন খুঁড়তেই পাওয়া গেল এক কঙ্কাল!
তারপর থেকে বাংলোর অশরীরী কণ্ঠস্বর বন্ধ হয়ে গেল। আর কেউ রাতে চিৎকার শুনল না। রহস্যের সমাধান হলেও, তিন বন্ধু সেই রাতটার কথা আর কখনও ভুলতে পারেনি...
শেষ।