তৃষ্ণা কিছুই বলল না।
আরিয়ান চেয়েছিল সে কিছু বলুক, রাজি হোক বা আপত্তি করুক—কিছু একটা বলুক। কিন্তু তৃষ্ণা শুধু চুপচাপ তাকিয়ে রইল তার দিকে, যেন একটা শব্দও খুঁজে পাচ্ছে না।
তার ভেতরে যেন একটা তীব্র অনুভূতি তৈরি হচ্ছিল—কষ্ট, অভিমান, অথবা হয়তো কিছু না বোঝার অস্থিরতা।
আরিয়ান একটু উসখুস করল।
"তৃষ্ণা, কিছু বলছো না কেন?"
তৃষ্ণা ধীরে মাথা নাড়ল, খুব নরম স্বরে বলল, "তুমি যা ঠিক মনে করো, সেটাই করো।"
এতটুকুই।
তারপর সে ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়াল, আর কিছু না বলে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেল।
আরিয়ান হতবাক হয়ে রইল।
সে চেয়েছিল তৃষ্ণা বুঝবে, তার পাশে থাকবে, তাকে সমর্থন করবে। কিন্তু সে কিছুই করল না, কিছু বলল না! এই নীরবতা যেন হাজারটা অভিযোগের চেয়েও বেশি ভারী লাগছিল তার কাছে।
তৃষ্ণা নিজের ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করল।
সে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিল। ভিতরে কোথাও যেন একটা অদ্ভুত শুন্যতা কাজ করছিল।
সে কি ভুল কিছু ভাবছে?
আরিয়ান কি আসলেই তাদের সম্পর্কের থেকে নিজের ক্যারিয়ারকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে?
কিন্তু সে তো বলেছে এটা তাদের ভবিষ্যতের জন্য ভালো হবে। তাহলে কেন তার মনে হচ্ছে, এই সামান্য ২০ দিনের অপেক্ষা বুঝি আরও দীর্ঘ হবে?
আর অপেক্ষা…
বিয়ের তারিখ বদলে গেল।
আরিয়ান নিজের ব্যবসার কাজে ব্যস্ত হয়ে গেল, দিনে-রাতে শুধু সেই ডিল ফাইনাল করার চেষ্টায় লেগে থাকল। তৃষ্ণা আর তাকে আগের মতো পাচ্ছিল না।
প্রতিদিন কথা বলার জায়গায় এখন হয়ে গেছে শুধু ছোট ছোট মেসেজ, কখনো কখনো সেটাও না।
তৃষ্ণা অনুভব করছিল, সময়ের সাথে সাথে যেন কিছু একটা বদলে যাচ্ছে।
সে কি ভুল ভাবছে? নাকি এই অপেক্ষার মধ্যে সত্যিই তাদের সম্পর্ক বদলে যাচ্ছে?
আরিয়ান কি তৃষ্ণাকে আগের মতোই চায়, নাকি এখন তার জীবনের আসল লক্ষ্য শুধুই সাফল্য?
এই ২০ দিনের অপেক্ষা কি শেষ পর্যন্ত তাদের সম্পর্ককে আরও শক্ত করবে, নাকি আরও দুর্বল করে দেবে?
চলবে......