গ্রামের নাম কলিমপুর। গ্রামটা ছোট হলেও তার চারপাশ জুড়ে ছিল বিশাল বিস্তৃত মাঠ আর গভীর বন। সেই বনের মাঝখানে একটা পুরোনো বিশাল নিম গাছ দাঁড়িয়ে ছিল বছরের পর বছর। জনশ্রুতি ছিল, এই নিম গাছের নিচে সন্ধ্যার পর কেউ গেলে আর ফিরে আসত না! কারণ, এখানে একটা ভয়ংকর ডাক শোনা যেত— "নিম তুলবি? নিম?..."
গ্রামের বয়স্করা বলত, বহু বছর আগে এখানে এক বৃদ্ধা থাকত, যার ওষুধ বানানোর জন্য নিমের পাতা দরকার হতো। এক রাতে, সে নিম পাতা তুলতে এসে আর ফিরে যায়নি। তারপর থেকে নাকি মাঝরাতে তার আত্মার ডাক শোনা যায়!
একদিন, গ্রামের দুই বন্ধু— রাজু আর আনিস— ঠিক করল, তারা এ কুসংস্কার ভাঙবে। তারা মশাল হাতে বের হলো রাতের অন্ধকারে।
নিম গাছের কাছাকাছি পৌঁছাতেই, চারপাশের বাতাস হিমশীতল হয়ে গেল। ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক বন্ধ হয়ে গেল। হঠাৎই গভীর অন্ধকারের মধ্যে থেকে একটা কর্কশ কণ্ঠ শোনা গেল— "নিম তুলবি? নিম?"
রাজু ভয়ে পা জমিয়ে ফেলল। আনিস সাহস করে বলল, "কে আছো?"
কিন্তু উত্তর এল না। বরং ঝোপের আড়াল থেকে একজোড়া লালচে চোখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল!
তারপর?
গ্রামের লোকেরা সকালে এসে শুধু একটা মশাল আর ছেঁড়া জামা খুঁজে পেল... কিন্তু রাজু আর আনিস? তারা আর কখনও ফিরে এল না!
আজও রাতে, যদি কেউ ওই গাছের নিচে যায়, শোনা যায় সেই গলায়—
"নিম তুলবি? নিম?..."