আজ সেই দিন।
যে দিনটা হওয়ার কথা ছিল তাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন।
তৃষ্ণার মনে পড়ছে, ঠিক এই দিনেই তাদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই জায়গায় এখন সে দাঁড়িয়ে আছে একটা অদ্ভুত টানাপোড়েনের মধ্যে।
সকালে আরিয়ান ফোন করল।
"তৃষ্ণা, আজ আমার ডিল ফাইনাল হওয়ার কথা। আমার বস বলেছেন, আমি চাইলে তোমাকে সঙ্গে নিয়ে যেতে পারি। তুমি কি যাবে?"
তৃষ্ণা অবাক হয়ে গেল।
সে কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল, "আজ?"
আরিয়ান যেন কিছু বুঝতে পারল না, স্বাভাবিক গলায় বলল, "হ্যাঁ, আজকেই। আজকের দিনটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।"
তৃষ্ণার শরীর হিম হয়ে গেল।
আজকের দিনটা তাদের বিয়ের দিন হওয়ার কথা ছিল! আরিয়ান কি সেটা ভুলে গেছে? নাকি ইচ্ছে করেই এড়িয়ে যাচ্ছে?
তার গলায় হতাশা ফুটে উঠল, "তুমি আজকের দিনটা বেছে নিলে?"
আরিয়ান একটু বিরক্ত হয়ে বলল, "তৃষ্ণা, এটা এমন একটা সুযোগ যা আমি মিস করতে পারি না। এখন তুমি যাচ্ছ কি না, সেটা বলো।"
তৃষ্ণা গভীর শ্বাস নিয়ে বলল, "আমি যাব না।"
তারপর আরিয়ান এক মুহূর্তও অপেক্ষা না করে বলল, "ঠিক আছে," আর গাড়ির দরজা খুলে বসে পড়ল।
গাড়ি চলতে শুরু করল, আর তৃষ্ণা জানলার ধারে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে থাকল। তার ভেতরে যেন একটা অদ্ভুত রাগ আর অভিমান জমে উঠছিল।
কিছুক্ষণ পরেই ফোন এলো, আরিয়ান বলল, "আমার বস সত্যিই অসাধারণ একজন মানুষ। তার বয়স আমাদের থেকে বড়জোর পাঁচ বছরের বেশি, কিন্তু তিনি যা অর্জন করেছেন, তা অবিশ্বাস্য।"
তৃষ্ণার রাগ বাড়তে থাকল।
আরিয়ান থামল না, আরও বলে যেতে লাগল, "জানো, বস শুধু প্রতিভাবান নন, তার মনও অনেক ভালো। তিনি এমন একজন যাকে কোনো মেয়ে না বলতে পারবে না। এত সুন্দর, এত জেন্টেলম্যান, এত প্রভাবশালী! অনেক মেয়েরাই তাকে স্বপ্নের রাজকুমার ভাবে।"
তৃষ্ণার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেল।
সে আরিয়ানকে থামিয়ে দিয়ে বলল, "তুমি আসলে কী বলতে চাচ্ছো? তুমি কি আমাকে বোঝাতে চাচ্ছো যে তোমার বস আমার থেকেও ভালো? নাকি তুমি চাইছো আমি তার প্রতি আকৃষ্ট হই?"
আরিয়ান একটু চুপ করে গেল, তারপর ধীর গলায় বলল, "আমি শুধু বোঝাতে চেয়েছি, সফল হতে হলে কতটা ভালো হতে হয়।"
তৃষ্ণার চোখ জলে ভরে উঠল।
আজকের দিনে, যখন তাদের একসাথে থাকার কথা ছিল, তখন আরিয়ান তাকে অন্য একজন পুরুষের প্রশংসা শুনিয়ে যাচ্ছে।
তৃষ্ণা ফোনটা কেটে দিল।
চলবে......