সায়ন বসে আছে পুরোনো কাঠের বেঞ্চে, সামনের লেকের পানিতে চাঁদের আলো পড়ে মৃদু ঝিকিমিকি করছে। এই বেঞ্চটা একসময় তার আর মায়ার প্রিয় জায়গা ছিল। এখন শুধু একা আসে, স্মৃতিগুলো ছুঁয়ে দেখার জন্য।

ছয় বছর আগের কথা— ইউনিভার্সিটির করিডোরে প্রথম দেখা হয়েছিল মায়ার সঙ্গে। মেয়েটার চোখে ছিল অদ্ভুত এক আকর্ষণ, হাসিতে ছিল একধরনের সারল্য। ধীরে ধীরে ওদের বন্ধুত্ব গাঢ় হলো, তারপর সেটা প্রেমে রূপ নিল।
কিন্তু এই ভালোবাসার কপালে পরিণতি ছিল না।
মায়ার পরিবার কড়া শৃঙ্খলার মধ্যে বেড়ে ওঠা মেয়েটিকে কখনোই সায়নের সঙ্গে মেনে নেবে না, এটা সে জানত। তবুও ওরা স্বপ্ন দেখেছিল, একসঙ্গে থাকার। কিন্তু একদিন হঠাৎ করেই মায়া চলে গেল— না কোনো চিঠি, না কোনো ফোনকল, শুধু একটা খালি শূন্যতা রেখে।
সায়ন অনেক খুঁজেছিল, মায়ার পরিবারও কিছু জানায়নি। সময়ের সঙ্গে সবাই বলেছিল, "ভুলে যা, জীবন তো থেমে থাকে না!"
কিন্তু সায়নের কাছে জীবন থেমেই ছিল।
আজ ছয় বছর পর, একটা চিঠি এল তার ঠিকানায়। প্রেরকের নাম— মায়া।
চিঠির ভেতরে মাত্র একটাই লাইন লেখা— "আমার অপেক্ষা কি করেছিলে?"
সায়নের চোখ ঝাপসা হয়ে এল। না-পাওয়া ভালোবাসার ব্যথাটা কি কখনো ফুরোয়?