
এক শহরে, অরণ্য নামের এক ছেলে থাকত, যে ছিল খুব সাধারণ। তার জীবনের সবকিছুই ছিল সাদামাটা, কিন্তু তার মন ছিল অতি সংবেদনশীল ও ভালোবাসায় পূর্ণ। তার জীবনে ছিল শীতল একটি অনুভূতি, সে কখনো কাউকে তার ভালোবাসা জানাতে পারত না। অরণ্য একদিন শহরের পাশে একটি ছোট ক্যাফেতে কাজ শুরু করল, সেখানে তার দেখা হলো মিথিলার সঙ্গে। মিথিলা ছিল শহরের এক প্রভাবশালী পরিবারে জন্ম নেয়া সুন্দরী একটি মেয়ে, যার জীবন ছিল পূর্ণ অভ্যস্ততা, তার স্বপ্ন ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছিল অনেক বড়। কিন্তু কিছু কিছু সময়ে, মিথিলার চোখে দেখা যেত এক ধরনের একাকিত্ব, যেন কিছু একটা তার অভাব ছিল।
অরণ্য মিথিলাকে প্রথম দেখে এক নিঃশ্বাসে প্রেমে পড়ে যায়। সে জানত না কীভাবে তার অনুভূতিটা প্রকাশ করবে, কিন্তু যখনই মিথিলা ক্যাফেতে আসত, তার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করত। মাঝে মাঝে তাদের মধ্যে ছোট্ট কিছু কথোপকথন হত, তবে কখনোই অরণ্য তার অনুভূতি প্রকাশ করতে পারল না। মিথিলা কখনো বুঝতে পারল না, অরণ্য তার পেছনে লুকিয়ে থাকা অনুভূতিগুলো।
দিন মাস কেটে গেল। মিথিলা একদিন অরণ্যকে বলল, "আমি বুঝতে পারছি না, কিন্তু তোমার মাঝে কিছু একটা আলাদা রয়েছে। আমি কি তোমার সম্পর্কে কিছু ভুল বুঝছি?" অরণ্য হঠাৎ ভয় পেয়ে গিয়েছিল, তার চোখে মুখে ধোঁয়াশা ছিল, যেন সে কিছু বলার সাহস পাচ্ছিল না। সে শুধু বলল, "না, কিছু না। আমি কেবল তোমাকে ভালোবাসি, কিন্তু কখনোই তোমাকে বলতে পারব না।"
মিথিলার চোখে কোনো পরিবর্তন হলো না। সে শূন্যতার দিকে তাকিয়ে বলে, "এটা জানতাম। কখনো আমাদের পথে মিলন হবে না, আমাদের দুটি পৃথিবী কখনো এক হতে পারবে না।"
অরণ্য বুঝতে পারল, তার ভালোবাসা কখনোই পূর্ণ হবে না, কারণ তাদের দুইজনের পথ কখনো এক হবে না। মিথিলা চলে গেল। অরণ্য তার হৃদয়ে এক গভীর দুঃখ নিয়ে বসে রইল, তার ভালোবাসা না পাওয়ার ব্যথা সাথে নিয়ে।
এভাবে, অরণ্য শিখল যে, অনেক সময় জীবন এমন হয়, যেখানে আপনি কাউকে ভালোবাসতে পারেন, কিন্তু সেই ভালোবাসা কখনোই পূর্ণতা পায় না। তবে এই "না পাওয়া ভালোবাসা" তার জীবনের এক অমূল্য শিক্ষা হয়ে রয়ে গেল।