
ঘরের কোণে টিকটিকির ছোট্ট ছানা তার মায়ের দিকে ধীর পায়ে ছুটে চলেছে। ঘরে তখনো টিম টিম করতে থাকা একখানা হারিকেন জ্বলছে।চৈত্রের মাঝামাঝি। বাহিরে ঝড়ো বাতাস বইছে।তখনো বিছানায় শুয়ে শীর্ণ ছেলেটা জ্বরে কাতরাচ্ছে। জীবন যেন তার বড্ড আপনজন, তার কাছে থাকতেই চাইছে না।
শিয়রে বসে মা ক্রমাগত জল পট্টি দিয়ে চলেছেন।সেই জলের ধারা যেন বয়ে চলেছে তার চোখের অতল মহাসমুদ্র থেকে।
হঠাৎই ছেলেটি উঠে বসল। তার গায়ে যেন কালবৈশাখীর স্নিগ্ধতা। কোথায় জ্বর ! কোথায় সেই আকুতি ! ছেলের সুস্থতার প্রার্থনায় যেন বিদ্যুতের মতো জ্বল জ্বল করছে সেই হারিকেনটা।
অপলক, ঘরের কোণে এক অনাথ টিকটিকি ছানার কান্না। তার মা যে তাকে ছেড়ে চলে গেছে আরো আলোকবর্ষ আগে। ছানাটির দিকে ছেলেটির চোখ পড়ল। তার বড্ড আদরের ছিল সেই টিকটিকি খানা। ছেলেটির চোখে জলের রেখা। এ জল কি কষ্টের ?করুণার ?
বোধহয় না ! এ জল আত্মগ্লানির,এ জল কৃতজ্ঞতার।
সেই রাতে ছেলেটি বুঝল ;
— কেউ মারা গিয়েও কাউকে প্রাণ দান করে যায়।
নাকি !! নাকি মায়ের জাতই এমন ! উৎসর্গ করা।