প্রথম অধ্যায়: পুরনো বাড়ি
গ্রামের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে ছিল সেই ভাঙা বাড়িটি। কেউ জানত না বাড়িটি কবে থেকে আছে, শুধু গল্পে শোনা যায়, বহু বছর আগে এখানে এক জমিদার পরিবার বাস করত। কিন্তু এক রাতে অজানা কারণে সবাই মারা যায়। বাড়িটি আজও অক্ষত, কিন্তু কেউ সেখানে যায় না। স্থানীয়রা বলে, বাড়িটিতে ভূতের আবাস।
রহিম নতুন স্কুলে যোগ দিয়েছিল। তার বাবা চাকরির সুবাদে এই গ্রামে এসেছেন। গ্রামের ছেলেমেয়েরা তাকে একা পেয়ে নানা গল্প শোনাত। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর গল্প ছিল ওই পুরনো জমিদার বাড়িটার।
"সেখানে রাতে আলো জ্বলে," বলল শফিক, রহিমের ক্লাসমেট। "কিন্তু বাড়িতে কেউ থাকে না। কেউ গেলে ফিরে আসে না।"
রহিম বিশ্বাস করত না। সে ভাবল, এগুলো সব গল্প। একদিন বিকেলে সে বাড়িটির দিকে হাঁটল। গেটটা ভাঙা, জঙ্গলে ঢাকা। ভিতরে ঢুকতেই একটা ঠাণ্ডা হাওয়া গায়ে লাগল।
দরজা আস্তে আস্তে খুলে গেল...
দ্বিতীয় অধ্যায়: অদৃশ্য উপস্থিতি
ভিতরে অন্ধকার। ধুলো আর মাকড়সার জালে ভরা ঘরগুলো। রহিম টর্চ জ্বালিয়ে এগোতে লাগল। হঠাৎ শুনতে পেল, কেউ তার নাম ধরে ডাকছে—
"রহিম..."
সে পিছনে ফিরল, কিন্তু কেউ নেই। আবার ডাক শুনল, এবার আরও স্পষ্ট। ডাকটা যেন আসছে উপরের তলা থেকে।
রহিম সিঁড়ি বেয়ে উঠতে লাগল। প্রতিটি ধাপে কাঠের শব্দ হয়, যেন কেউ তার পিছনে আসছে। উপরে পৌঁছেই সে দেখল, একটা দরজা সামান্য খোলা। ভিতরে ঢুকতেই দরজা নিজে থেকে বন্ধ হয়ে গেল!
ঘরে একটা বড় আয়না ছিল। রহিম আয়নায় নিজের প্রতিবিম্ব দেখল, কিন্তু... তার পিছনে আরেকটা ছায়া দাঁড়িয়ে আছে!
তৃতীয় অধ্যায়: রক্তের দাগ
রহিম চিৎকার করে ছুটে দরজার দিকে গেল, কিন্তু দরজা খুলছে না! আয়না থেকে রক্ত ঝরতে শুরু করল। ছায়াটা ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছিল।
"এখানে এসো..." একটা নারীকণ্ঠ ফিসফিস করল।
রহিম জানালা দিয়ে লাফ দিতে গিয়েই দেখল, নিচে একটা সাদা পোশাক পরা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তার মুখ নেই! শুধু কালো খালি জায়গা!
পরের দিন সকালে রহিমের লাশ পাওয়া গেল বাড়ির সামনে। তার চোখ দুটো খোলা, মুখে চিরে যেন চিৎকার জমে আছে।
গ্রামবাসীরা বলল, জমিদার বাড়ির ভূত আরেকটা প্রাণ নিয়ে নিল।
কিন্তু রাত হলে আজও বাড়িটার জানালায় একটা সাদা ছায়া দাঁড়িয়ে থাকে...
কে তুমি?