Posts

ভ্রমণ

প্রতিরোধের ট্রায়াঙ্গল ফোর্ট

April 3, 2025

রাহিল

17
View

মোগল আমলের বাঙলার সুবেদার মীর জুমলা বা শায়েস্তা খাঁ কর্তৃক নির্মিত দুর্গগুলোর সন্ধান পেয়েছি মাসখানেক হলো। ঢাকাকে পর্তুগীজ জলদস্যুদের আক্রমণ থেকে রক্ষার তাগিদে নারায়ণগঞ্জের হাজীগঞ্জ, সোনাকান্দা ও বিক্রমপুর তথা মুন্সিগঞ্জের ইদ্রাকপুর জলদুর্গ ট্রায়াংগেল আকৃতিতে শীতলক্ষ্যা ও ধলেশ্বরীর তীরে দাঁড়িয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখত। দুর্গগুলো এখনও বিদ্যমান। কালের গর্ভে হারিয়ে যায়নি। তাই একটা একটা করে দুর্গ-রহস্য সমাধানকল্পে বের হলাম।

১৬৫০ থেকে ১৬৭০ এর মধ্যে এ তিন দুর্গের আনুমানিক নির্মাণ বলে জানা যায়।

১.

শুক্রবার। হাজীগঞ্জ যাব। এক বন্ধু মাহমুদ রাজি হলো। এদিকে আমার পকেট খালি। আছে মাত্র ৫০ টাকা। ভাবলাম, যাইহোক; হবে। প্রয়োজনে হেঁটেই যাব।

মুক্তিনগর গিয়ে বন্ধুর সাথে একত্রিত হলাম। এখনই এত রৌদ্র! দুপুরে তো সহ্য ক্ষমতার অধিক হয়ে যাবে। চিটাগাংরোড বাজার পার হয়ে হিরাঝিলের রাস্তায় উঠলাম। গোদনাইল থেকে বিশ টাকায় দু’জনে কেল্লার সামনের মোড়ে নামলাম।

ফটকটা দেখা যাচ্ছে। মাথার ওপর প্রচন্ড রোদের কড়া ভাষায় গালিগালাজ— ‘অবোধ! এ সময় মানুষে বের হয়?!’ এখন এগারোটা বাজছে ঘড়িতে। বোঝাই যাচ্ছে, আশেপাশের লোকজনের আনাগোনা নেই। দু-চারজন থাকলেও এ জায়গাটা যথেষ্ট অযত্নে, অবহেলায় দিনাতিপাত করছে। কেউ কেউ বলে খিযিরপুর দুর্গ। এখন হাজিগঞ্জ দুর্গ নামেই পরিচিত। একসময় এই দুর্গের কোল ঘেঁষে বয়ে যেত শীতলক্ষ্যা নদী। এখন নদী কিছুটা দূরে সরে গেছে। তখন প্রাচীন বুড়িগঙ্গা নদী এসে লক্ষ্যা নদীর সাথে এই স্থানে এসে মিলিত হতো। এই জায়গাটা মোগল আমলের প্রথম দিকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

দুর্গটা চারকোণা, পঞ্চভুজি বেষ্টন-প্রাচীরে রয়েছে একটা করে ফুঁটো, যা দুই বা তিনটি করে অপর পাশে বের হয়েছে। এছাড়া বেশ কয়েকটাতে বড় ছিদ্রও রয়েছে। তা থেকে হয়তো গোলাবর্ষণ করা হত। 

প্রাচীরের চারদিকে অভ্যন্তরভাগে দেয়ালের ভিত থেকে ১.২২ মিটার উঁচুতে রয়েছে চলাচলের পথ। প্রাচীরগুলো দেড় ফুট করে চওড়া। আমরা কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করলাম ভেতরে।

প্রাচীরবেষ্টিত দুর্গের মধ্যভাগে কোনো স্থাপনা নেই। দুর্গের চতুর্ভুজাকৃতির অঙ্গনের এক কোণে রয়েছে ইটের তৈরি একটি সুউচ্চ চৌকা স্তম্ভ। এটি সম্ভবত একটি পর্যবেক্ষণ বুরুজ। কিছু অংশ ধসেও পড়েছে। আশপাশে কিছু ঝোঁপ-ঝাড় গজিয়েছে। অনেক স্থানে পলেস্তারা খসে পড়ছে।

এই স্তম্ভের অবস্থান থেকেই দুর্গটিকে সমসাময়িক অপরাপর জলদুর্গের সমগোত্রীয় বলে ধরে নেয়া যায়। কামান বসানোর উপযোগী উঁচু বেদীর অবস্থান দুর্গটির একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। একপাশে কিছুটা নিচ দিয়ে বের হওয়ার জন্য লুকানো ফাঁকা রাস্তা আছে। আমরা বের হলাম।

কিছুক্ষণ ছায়ায় অপেক্ষা করে আবার কেল্লায় আসলাম। এলাকার দুই পিচ্চি মাঝের গাছটার নিচে খেলছে। ওদের আনন্দে আমরাও যোগ হলাম।

আযান হয়ে গেছে আরো আগেই। রোদে ঘেমে একাকার। সোয়া ১ টা বাজে। মসজিদ সন্ধানে হাঁটা ধরলাম। বড় মাদ্রাসার নতুন মসজিদটায় প্রবেশ করতেই আকাশের রোদটা স্তিমিত রূপ ধারণ করল। মেঘে ঢাকছে আকাশ, সাথে এ দুপুরের মৃদুমন্দ বাতাস। জামাত হলো। মুনাজাতের পর মসজিদ থেকে বের হতেই বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। ইতিহাস দর্শনে এ বৃষ্টি খারাপ লাগল না।

২.

মাসের শেষে আরেকটা সুযোগ পেয়ে গেলাম। এটা আবার বেশ রোমাঞ্চকর! কারণ, মুন্সিগঞ্জ যেতে বন্ধুদের বললেও কেউ রাজি ছিল না, বিভিন্ন অযুহাতে। আবার নিজের সত্তাকে দমিয়ে রাখতেও আমি অত পারদর্শী না। তাই একাই বেরিয়ে পড়লাম। 

এ দিনটাও শুক্রবার। মুন্সিগঞ্জের আনাচে-কানাচে আনমনে চষে বেড়িয়েছি। তা পুরা কাহিনী আরেক গল্পে বলব। এখন বরং জলদুর্গের অন্যতম ‘ইদ্রাকপুর’ নিয়ে কথা হোক।

সূর্য মাত্রই নিজের তেজ ছড়াতে শুরু করেছে। তাপে উষ্ণ হচ্ছে সবকিছু। মুন্সিগঞ্জের এই অপরিচিত অঞ্চলের পরিচিত প্রকৃতি দেখতে দেখতে সদরে পোঁছে গেলাম। এবার হেঁটে ইদ্রাকপুর যেতে হবে। রাস্তাগুলো পিচঢালা হলেও এর দু’পাশের অবকাঠামো জানান দিচ্ছে এ রাস্তা প্রাচীন আমলের। এক মোড়ে এসে রাস্তা তিনদিকে চলে গেছে, আর আমিও গুলিয়ে ফেললাম। ভিন্ন রাস্তায় ধরে আবার ওই মোড়েই ফিরে এসে এক রিকশাওয়ালাকে জিজ্ঞেস করলাম, কেল্লায় যাওয়ার রাস্তা কোনটা?

— এদিকে যান। সময় কম লাগবে।

সামান্য হাঁটতেই বিশাল এক পুকুর আবিষ্কৃত হল। এর সামনে তাকাতেই মাটি রঙা দুর্গটা স্বাগত জানাল। পুকুরে ছেলেপেলেরা ঝাঁপাঝাপি করে সাঁতরাচ্ছে। প্রবেশের জন্য এগিয়ে গেলাম। রাস্তার কোণে দুর্গের ভিতরে টিকিট দিচ্ছে প্রবেশের জন্য। বললাম, একটা টিকিট দিতে। বসে রইল। ফাঁক দিয়ে তাকিয়ে দেখি টিকিট হাতে ধরে আছে; টাকা দিলে তবেই দিবে, এর আগে না। বিশ টাকা দিয়ে টিকিটটা নিলাম। নির্ধারিত মূল্য ‘দশটাকা’, উপরে সিল দিয়ে ‘বিশটাকা’ বানিয়ে দেয়া হয়েছে। এমন বিশিষ্ট স্থানেও ওদের ধান্ধাবাজি দূর হলো না। কেল্লা ফটকে একজন বয়স্ক লোক দাঁড়ানো। টিকেট ছিড়ছেন। ভেতরে ঢুকে হালকা প্রশান্তি অনুভূত হলো। একা একা আমিই শুধু এখানে ব্যতিক্রম। সবাই বন্ধু-বান্ধব বা স্বামী-স্ত্রী ধরনের মানুষ।

এই জলদুর্গটি একসময় ইছামতী ও মেঘনা নদীর সংগমস্থলে সামরিক গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নির্মিত হয়েছিল। দুর্গটিতে রয়েছে দুটি অংশ পশ্চিমাংশ ও পূর্বাংশ। এর প্রথম অংশ হলো শীর্ষভাগ খিলানাকার ফোকর বিশিষ্ট মারলন শোভিত প্রাচীর বেষ্টিত উন্মুক্ত চত্বর। বেষ্টন প্রাচীরের চারকোণে রয়েছে শীর্ষভাগ মারলন শোভিত চারটি গোলাকার সন্নিহিত বুরুজ। বুরুজের গায়ে রয়েছে বন্দুকে গুলি চালাবার উপযোগী ফোকর। দুর্গটির সর্বাধিক লক্ষ্যনীয় বৈশিষ্ট্য হলো এর পূর্ব অংশে ৩২.৫ মিটার ব্যাসের একটি গোলাকার উঁচু বেদী। ৯.১৪ মিটার উঁচু এই বেদীতে উঠার জন্য রয়েছে একটি সিঁড়ি। ওখানে গিয়ে চারপাশটা আরো স্পষ্ট হলো।

মোঘল স্থাপত্যশৈলী চোখ ধাঁধিয়ে দেওয়ার মতো। দেয়ালের মাঝ বরাবর প্রত্যেকটাতে চার কোনা ছিদ্র, এটাই অপর পাশে চারটি করে বের হয়েছে। দোনোদিকের সাথে উপর-নিচের বহিঃদৃশ্য স্পষ্ট অবলোকন করা যায়।

উঁচু ফটকটার সামান্য ডানে সুরঙ্গের মতো সিঁড়ি নিচে নেমে গেছে। একদম সরু গলি। একজনের বেশি দু’জন আসা যাওয়া মুশকিল। আমি নিচে নামলাম। শেষ মাথায় ছোট দরজা, কত বছর ধরে লাগানো রয়েছে যে! এর পুরোটা লতা-পাতায় পেঁচিয়ে আছে।

পুকুরের সামনে প্রবেশদ্বারের পাশে একটি গুপ্ত পথ দেখতে পেলাম। বাংকার বা ছোট ঘরের মতো মনে হচ্ছে। বৃষ্টির পানির জমে থাকায় ভেতরটা স্পষ্ট বোঝা গেল না। উপরে উঠে দেখার চেষ্টা করলাম, বুঝলাম না অতটা। প্রচলিত আছে এই দুর্গের সাথে নাকি অন্য দুই জলদুর্গ ছাড়াও লালবাগ দুর্গ বা সোনারগাঁয়ের পানামের সাথে সুরঙ্গ পথে যোগাযোগ রাখা হতো। কিন্তু কিভাবে সম্ভব? সম্ভব হলেও সুরঙ্গ মুখটা কি এটা?

এই দুর্গটি হতে আব্দুল্লাপুরে মঙ্গত রায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালিত হয়েছিল। মীর জুমলার সেনাপতি সদলি খান ও মগ রাজা মঙ্গত রায় উভয়েই মারা যান। মঙ্গত রায় শাহ সুজার সেনাপতি ছিলেন বলে অনেকে ধারণা করেন। ইদ্রাকপুর কেল্লায় আবুল হোসেন নামে একজন সেনাধ্যক্ষ সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকতেন। আবুল হোসেন ছিলেন নৌ বাহিনীর প্রধান। তার নিয়ন্ত্রণে ২০০ নৌযান পদ্মা, মেঘনা, ধলেশ্বরী ও ইছামতির তীরে প্রস্তুত থাকত। যে সব নৌযান ইদ্রাকপুর কেল্লার নিয়ন্ত্রণে থাকত তা হলো কোষা, জলবা, গুরব, পারিন্দা, বজরা, তাহেলা, সলব, অলিল, খাটগিরি ও মালগিরি। ইদ্রাকপুর কেল্লার নিয়ন্ত্রণে যে সব পদাতিক বাহিনী ছিল তার প্রধান ছিলেন সদলি খান।

মোগলদের প্রতিটি স্থাপনা মুগ্ধ করে সন্ধানী ভ্রমনীয় মনের অধিকারীকে। আমাকেও ব্যতিক্রম করল না। অবাক-বিস্মিত হয়ে বাইরের পথ ধরলাম। 

৩.

পরের শুক্রবারে নামাজের পর বের হলাম। দুই সাথী যোগ হলো এ যাত্রায়। আকাশের কড়া চোখ রাঙানীকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ধীরে ধীরে বৃষ্টির মাঝে রওনা হলাম। এবার যাব সোনাকান্দা। আকাশটা বৃষ্টিকে খুব কড়া শাঁসাচ্ছে, তাই ধরে রাখতে না পেরে বৃষ্টি ঝরেই যাচ্ছে। 

দ্রুত হাঁটা ধরলাম। চিটাগাং রোড মোড় থেকে হাজীগঞ্জ পর্যন্ত জনপ্রতি ২০ টাকায় অটোতে চড়ে বসলাম। আর ততক্ষণে আবার বৃষ্টি বেড়ে গেল। আমাদের নিয়ে অটোওয়ালা ছুটল চলল সর্বোচ্চ গতিতে। মনে হচ্ছে বৃষ্টি পাল্লা দিচ্ছে একসাথে। প্রবল বৃষ্টি গতির কারণে ভিতরে ঝাঁপটা দিতে লাগলো। ২৫ মিনিট পর হাজীগঞ্জ মোড়ে এসে নেমে গেলাম। বৃষ্টি মুষলধারে ঝরছেই। আশেপাশে ছাউনিযুক্ত আশ্রয়স্থল খুঁজলাম। পাশে চোখ ফেরাতে একটা দোকান পেলাম।

আধাঘন্টা অপেক্ষার পর আচমকা বৃষ্টি কমে গেল। শুকরিয়া আদায় করে হাজীগঞ্জ দুর্গটা একনজর দেখে, ঘাটে গেলাম। কুমারী শীতলক্ষ্যার মাঝারি ঢেউয়ের তালে মৃদুমন্দ বাতাসের আদর কিছুটা গায়ে মেখে নৌকা ওপারে ভিড়ল। এরপর অটোতে রেলগেইট পর্যন্ত গিয়ে রাস্তার মোড়ে নেমে গেলাম। বৃষ্টি এখনো ঝরছে। এ রাস্তায় হেঁটেই চলে যাওয়া যায়। যদি বৃষ্টি না হতো তাই করতাম। একটা ছোট অটোতে ৬০ টাকার বিনিময়ে উঠে বসলাম। ২০ মিনিট পর বড় রাস্তা থেকে গলি-ঘুপচির ভেতর দিয়ে সুন্দর এক রাস্তায় উঠল। কেল্লা দেখা যাচ্ছে। প্রধান ফটকের সামনে নেমে পড়লাম। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি; বাড়ে আর কমে। পুরো কেল্লা মাঠ ভিজে আছে।

প্রবেশ করলাম, যেখান দিয়ে একসময় মোগল বাংলার সৈন্য-সেনাপতিগণ প্রবেশ করতেন। আগে ফটকে কোনো দরজা ছিল না। এখন মোটা লোহা বিশিষ্ট দরজা লাগানো হয়েছে। খিলানযুক্ত এ প্রবেশপথ একটি আয়তাকার ফ্রেমে আবদ্ধ এবং উভয়দিক পলেস্তরায় বিভিন্ন আকৃতির প্যানেল নকশায় সজ্জিত। প্রবেশপথের মূল খিলান ছিল চতুষ্কেন্দ্রিক এবং চার কোণায় রয়েছে চারটি পার্শ্ববুরুজ। হাজীগঞ্জ এবং ইদ্রাকপুরের দুর্গ প্রাচীরের পার্শ্ববুরুজগুলির সাথে এ দুর্গের পার্শ্ববুরুজগুলির মিল নেই। সোনাকান্দা দুর্গের পার্শ্ববুরুজগুলি অষ্টভুজাকার।

ফটক পেরিয়ে মাঠ দৃশ্যমান হলো। চতুর্ভুজাকৃতির এ দুর্গ আয়তনে ৮৬.৫৬ মিটার ৫৭.০ মিটার এবং ১.০৬ মিটার পুরু দেওয়াল দ্বারা পরিবেষ্টিত যার উচ্চতা ৩.০৫ মিটার। দেওয়ালের তলদেশ নিরেটভাবে তৈরি। বিশেষ ধরনের দেয়ালগুলোর গায়ে মোটা ছিদ্র ভিতরাংশে একটা ছিদ্র দেয়ালের মধ্যভাগে গিয়ে তিনটা ছিদ্রে পরিণত হয়েছে। যাতে এপাশ-ওপাশ ও নিচে দেখা যায়। এত সুনিপুণভাবে তৈরি দুর্গটা প্রমাণ করে তখনকার নির্মাণশিল্পীদের দক্ষতা ও সুবেদারদের দুর্ভেদ্য কৌশল।

ভিজা হওয়ায় চারপাশ না ঘুরে কামান রাখার উঁচু মঞ্চের দিকে হাঁটলাম। প্রতিরক্ষা দেওয়াল এবং শক্তিশালী কামান স্থাপনার জন্য উত্তোলিত মঞ্চটি এখনও পূর্বের অবস্থায় বিদ্যমান রয়েছে। বৃত্তাকার কামান স্থাপনা মঞ্চটির পশ্চিম দিকে সিঁড়ি আছে, যা উত্তোলিত মঞ্চ পর্যন্ত বিস্তৃত। এ উঁচু মঞ্চে প্রবেশের জন্য পাঁচ খাঁজবিশিষ্ট খিলানযুক্ত প্রবেশ পথ রয়েছে। কামান স্থাপনার উঁচু মঞ্চে শক্তিশালী কামান নদীপথে আক্রমণকারীদের দিকে তাক করা থাকত। এটি মোগল জলদুর্গের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

মঞ্চটিতে দুটি বৃত্তাকার অংশ আছে, অভ্যন্তরীণ এবং বাইরের অংশটি যথাক্রমে ১৫.৭০ মিটার এবং ১৯.৩৫ মিটার ব্যাস বিশিষ্ট। মঞ্চটি ৬.০৯ মিটার উঁচু এবং বেষ্টনীপ্রাচীর দ্বারা পরিবেষ্টিত। দুর্গ প্রাচীরের পশ্চিম পার্শ্বের কোণার বুরুজগুলি পূর্বপার্শ্বস্থ বুরুজগুলি অপেক্ষা অধিক প্রশস্ত। পূর্ব বুরুজের ব্যাস ৪.২৬ মিটার এবং পশ্চিম অংশের দুটি বুরুজের ব্যাস ৬.৮৫ মিটার।

আমরা ছাড়া এখানে তিন চার জন লোকও আছে। হয়তো আমাদের মতোই পাগলাটে স্বভাবের। বৃষ্টির লুকোচুরির মাঝে আরো কিছুক্ষণ কেল্লাটা নজরে নিয়ে ফিরার পথ ধরলাম। 

Comments

    Please login to post comment. Login