আরিয়ান ফোনের ওপাশে কিছুক্ষণ চুপ করে থাকল, তারপর গভীর গলায় বলল, "ঠিক আছে, তৃষ্ণা। আজ তুমি আমার সাথে থাকবে। আমি চেয়েছিলাম না তুমি এই জগতের কষ্ট বুঝো, কিন্তু যদি তুমি সত্যিই আমার পাশে থাকতে চাও, তাহলে আমি তোমাকে দূরে সরিয়ে রাখব না।"
তৃষ্ণার বুকের ভেতর হালকা প্রশান্তির ঢেউ বয়ে গেল। এইটুকু শোনার জন্য সে কতক্ষণ অপেক্ষা করছিল! সে ধীর গলায় বলল, "ঠিক আছে, তাহলে বলো কোথায় আসব?"
আরিয়ান একটু হেসে বলল, "তুমি রেডি হয়ে নাও, আমি তোমাকে নিতে আসছি।"
তৃষ্ণার মুখে একরাশ হাসি ফুটে উঠল। এতদিনে মনে হলো, তাদের মধ্যে দূরত্বের দেয়ালটা একটু হলেও কমেছে।
সারাদিন তারা একসঙ্গে কাটাল। আরিয়ান তার ব্যবসার কাজের ফাঁকে তৃষ্ণাকে সময় দিল, তার সাথে পরিকল্পনা শেয়ার করল। তৃষ্ণা ধীরে ধীরে বুঝতে পারছিল, কেমন করে আরিয়ান তার ভবিষ্যৎটা তৈরি করছে, কীভাবে সে প্রতিটি ছোটখাটো সিদ্ধান্ত নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।
এরপর থেকে বিয়ের প্রস্তুতি আরও জোরেশোরে চলতে লাগল। দুই পরিবারই এখন ব্যস্ত হয়ে পড়ল কেনাকাটা, অতিথি তালিকা, মেন্যু ঠিক করা, এবং আরও অনেক কিছু নিয়ে। তৃষ্ণা প্রথমবারের মতো নিজেকে সত্যিকারের কনে মনে করতে লাগল।
একদিন বিকেলে, তৃষ্ণা আরিয়ানকে বলল, "আমাদের বিয়েতে আমি চিরায়ত লাল শাড়ি পরব, তুমি কী পরবে?"
আরিয়ান মৃদু হেসে বলল, "তুমি যেটা চাও, সেটাই পরব। কিন্তু আমার ইচ্ছে, আমরা দুজনেই মিলিয়ে কিছু পরব। তুমি লাল পরলে, আমি সাদা আর লালের মিশ্রণে কিছু পরব।"
তৃষ্ণার চোখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল। এতদিনে সে অনুভব করতে পারল, ভালোবাসার আসল রূপটা আসলে একে অপরের সাথে মানিয়ে নেওয়ার মধ্যে লুকিয়ে আছে।
সব ঠিকঠাক চলছিল, মনে হচ্ছিল এবার আর কোনো বাধা নেই। কিন্তু জীবন কি এত সহজেই দু'জন ভালোবাসার মানুষকে এক করে দেয়?
বিয়ের ঠিক আগের রাতেই এক ভয়ংকর কিছু ঘটতে চলেছে, যা সবকিছু ওলট-পালট করে দেবে…
চলবে……