এক গ্রামে এক বৃদ্ধ লোক থাকতেন। তার ছিল একটি বিশাল বাগান, কিন্তু তিনি এতটা বৃদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন যে বাগান দেখাশোনা আর সম্ভব ছিল না। তাই তিনি ঠিক করলেন, এই জমিটুকু তিনজন বন্ধুকে দিয়ে দেবেন যারা মাঝে মাঝে তাকে সাহায্য করত।
এই তিন বন্ধু ছিল রফিক, সালেহ ও কামাল। তারা ছোটবেলা থেকে একসঙ্গে বড় হয়েছে, তবে বয়সের সাথে তাদের মনমানসিকতায় পার্থক্য আসতে শুরু করে।
একদিন বৃদ্ধ তাদের ডেকে বললেন, “আমি তোমাদের তিনজনকে আমার জমির তিন ভাগ করে দেব, কিন্তু আগে একটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।”
তিনজনই রাজি হলো।
বৃদ্ধ লোক বলল, “তোমরা প্রতিজন এই বাগানের এক কোণে গিয়ে এক ঘণ্টা সময় কাটাও এবং শেষে এসে আমাকে বলো—তোমার কী মনে হলো।”
রফিক গেল পশ্চিম কোণে, যেখানে আগাছা আর কাঁটা গাছ ভর্তি। সে ফিরে এসে বলল, “এই বাগান আর কোনো কাজে আসবে না। এটা নষ্ট জমি। আপনি চাইলে বিক্রি করে দিন।”
সালেহ গেল পূর্ব কোণে, যেখানে মাঝেমাঝে কিছু গাছফল আছে কিন্তু ঝড়ে কিছু গাছ পড়ে গেছে। সে বলল, “পরিশ্রম করে কিছুটা কাজের করা যাবে, তবে অনেক সময় লাগবে।”
কামাল গেল দক্ষিণ কোণে, যেখানে কিছু পুরনো গাছ ছিল, পাখিরা ডাকছিল, আর সূর্যের আলো পড়ছিল। সে ফিরে এসে বলল, “এই জমিটা দুর্দান্ত! একটু যত্ন নিলেই আবার আগের মতন ফল দেবে। আমি এটা সাজিয়ে তুলতে পারি।”
বৃদ্ধ লোক হেসে বললেন, “আমি জানতাম, তিনজন তিনভাবে দেখবে। এখন আমি বুঝলাম, কে আমার জমির প্রকৃত উত্তরাধিকারী হওয়া উচিত।”
শেষে তিনি কামালকে জমির মালিক বানান। কারণ সে নেতিবাচকতা দেখেনি, বরং সম্ভাবনা খুঁজে পেয়েছিল।
---
শিক্ষা:
জীবনের প্রতিটি জায়গায় দৃষ্টিভঙ্গিই আসল। কেউ কাঁটা দেখে পথ ছেড়ে দেয়, কেউ সেই কাঁটার মাঝেও ফুলের আশা রাখে। সাফল্য তারাই পায়, যারা আশাবাদী মন নিয়ে পরিশ্রম করতে জানে।