
- গাজা গণহত্যা
- ইফাত ইসতিয়াক
- বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্ব সাক্ষী হচ্ছে এক বর্বরচিত গণহত্যার।বিশ্ব মানচিত্রে নিজেদের পরাশক্তি দাবি করা ইসরাইল যেভাবে গাজার নিরীহ মানুষদের হত্যা করছে তা দেখে বিশ্ব বিবেক কেঁপে উঠেছে।এমতাবস্থায় কিছু সুবিধা বাদী দেশগুলো তাদের নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে এই বর্বর ইসরাইলকে সমর্থন করে যাচ্ছে।জাতিসংঘের একটি বিশেষ কমিটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে গাঁজা যুদ্ধের অংশ হিসেবে গাজা উপত্যকায় চলমান আক্রমণ এবং বোমাবর্ষণের সময় ইসরাইল, ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যা করেছে।ইসরাইলি অনুশীলন তদন্তের জন্য জাতিসংঘের বিশেষ কমিটি, অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলের জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফ্রান্সেসকা আলবানিজ এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সহ বিভিন্ন পর্যবেক্ষক ইসরাইলি কর্মকর্তাদের বিবৃতি উদ্ধৃত করেছেন যা ইঙ্গিত দিতে পারে যে গাজায় জনসংখ্যা সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে " ধ্বংস করার অভিপ্রায় " যা গণহত্যার আইনি সীমা পূরণের জন্য একটি প্রয়োজনীয় শর্ত।৭ ই অক্টোবর ২০২৩ দিনটি ছিল গাজার জন্য এক নির্মম বিভীষিকাময়।এই দিনে গাজা শহরে চলে এক ভয়াবহ তান্ডব।
গাজা শহরের আল- শিফা হাসপাতালের জনাকীর্ণ জরুরি বিভাগে মেঝেতে ফিলিস্তিনিদের নিতে হয়েছিল চিকিৎসা।
এই গণহত্যায় নারী-পুরুষ এমনকি নাবালক অনেক শিশু শহীদ হয়েছে।ইসরাইলি দের আক্রমণের ধরণ ছিল গণহত্যা, জাতিগত নির্মূল, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি,বোমাবর্ষণ, লক্ষ্যবস্তুতে হত্যা, অনাহার নির্যাতন ও ধর্ষণ।এই গণহত্যায় কমপক্ষে ৫০,৫০০ জন সরাসরি নিহত হওয়ার খবর মিলে। ধ্বংসস্তূপের নিচে ১০০০০ এর ও বেশি লোকের অস্তিত্ব অনুমান করা যায়।পরোক্ষ মৃত্যু সরাসরি নিহতদের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি হতে পারে, আহত হয়েছে কমপক্ষে ১১৪,৭০০।জনসংখ্যার ২০%" খাদ্যের চরম অভাব, অনাহার এবং ক্লান্তির সাথে জড়িত এবং তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার বিপর্যয়কর স্তরের সম্মুখীন।প্রায় ১৯ লক্ষের অধিক অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি গাজার প্রায় ৮০% বাড়িঘর এবং ৫০% ভবনের ক্ষতি বা ধ্বংস হয়।এই বর্বরচিত গণহত্যার পেছনে ছিল ইসরাইলি নেতা বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ইসরাইলি যুদ্ধ মন্ত্রিসভা এবং এর সরকার।ইজরায়েল কাটজ এবং ইয়াভ গ্যালান্টের নেতৃত্বে ইসরাইল প্রতিরক্ষা বাহিনী।ইটামার বেন -গভির এবং হাইম কাটজের নেতৃত্বে ইসরাইলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়।ইজরায়েল কে যে দেশগুলো প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সাহায্য করেছে সে দেশগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, যুক্তরাজ্যসহ আরো অনেক ক্ষমতাধর দেশ।এভাবে পরাশক্তির দেশগুলোর ইসরাইলকে একচেটিয়া সমর্থন সত্যিই হৃদয় বিদারক।কিন্তু আশার খবর হচ্ছে যে আমাদের দেশ "বাংলাদেশ" ইসরাইলের বিপক্ষে ফিলিস্তিনিদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৫ সালের ৭ ই এপ্রিল ঢাকার শাহবাগে ইসরাইলি গণহত্যার প্রতিবাদে লং মার্চ টু গাজা শিরোনামে শান্তিপূর্ণ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।এখনই সময় বিশ্ব বিবেক জাগ্রত হওয়ার। মানবতার মৃত্যু প্রতিবাদী জনতা মেনে নেয় না। যতদিন রবে এই ইসরাইলি আগ্রাসন ততদিন পর্যন্ত চলবে এই কর্মসূচি। পৃথিবীর সকল দেশগুলোকে এ বিষয়ে সচেতন হয়ে ফিলিস্তিনি ভাই-বোনদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।তবেই স্বাধীনতা আসবে পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে।স্বাধীনতা এমন এক জিনিস যতক্ষণ পর্যন্ত অপরকে আপনি তা না দেবেন ততক্ষণ পর্যন্ত নিজে তা পাবেন না।
"কে চাই হে পরাধীনতায় বাঁচতে,
বাচলে বাঁচবো, মরলে মরবো ;
স্বাধীন হয়েই ফিরবো।"
(বাংলা)
