সেই রাতে ঘড়ির কাঁটা উল্টো ঘোরা দেখে গোবিন্দ মাষ্টার প্রথমে ভেবেছিলেন চোখের ভুল। কিন্তু ঘড়ির টিকটিক শব্দটা এখন যেন উল্টো দিক থেকে আসছে। ঠিক যেন সময় নিজের গতিপথ পাল্টে দিয়েছে।
খামটা আবার হাতে নিয়ে তিনি জানালার ধারে বসলেন। বাইরে তীব্র চাঁদের আলো, অথচ আশ্চর্যভাবে ডাকঘরের পাশের বটগাছটা অন্ধকারে ডুবে আছে—সেই অন্ধকারে যেন কিছু একটা নাড়াচাড়া করছে। গাছের নিচ থেকে কেউ একজন ফিসফিস করে বলছে,
“তুমি খুলেছো না এখনো, তাই সময় আটকে গেছে…”
খামটা এবার খুলতেই হবে—এই অনুভূতি তাঁর মনে ছড়িয়ে পড়ে বিষের মতো। খামটা খুলে ভিতরে একখানা পুরোনো, হলুদ হয়ে যাওয়া চিঠি পান। কালি প্রায় মুছে গেছে, কিন্তু কয়েকটি লাইন এখনো স্পষ্ট:
> “যদি তুমি এই চিঠি পাও, তবে তুমি একমাত্র ব্যক্তি যে সময়ের ফাঁদে পা দিয়েছে।
এই চিঠি লিখেছি আমি—গোবিন্দ। কিন্তু আমি ১৯৪৭ সালের গোবিন্দ।
ডাকঘরটা আসলে একটা ফাঁদ। যার খামে হাত পড়বে, সে আটকে যাবে সময়ের গহ্বরে…”
গোবিন্দ মাষ্টারের গলা শুকিয়ে এলো। "আমি তো... গোবিন্দ! তাহলে...?"
হঠাৎ জানালার কাঁচে একটা হাতের ছাপ দেখা গেল—একটা কালো, ছায়াময় হাত, যার আঙুলগুলো ছিল অস্বাভাবিক লম্বা, আর নখগুলো খাঁচা-পড়া হাঁসের মতো মোটা ও বাঁকানো।
আরেকবার সেই গলা শোনা গেল, এবার অনেক কাছে—
“তুমি এবার সময়কে ফিরিয়ে আনো… নয়তো সব হারাবে।”
চিঠির নিচে একটা ম্যাপ আঁকা—ডাকঘরের নিচে লুকানো একটা গোপন ঘরের ইঙ্গিত, আর সেখানে নাকি সময়ের মূল কক্ষপথ আটকে রাখা আছে...
---
চলবে…