Posts

গল্প

আলোর নিচে অন্ধকার পর্ব:-০৩ লেখক:-বিদ্যুৎ

April 14, 2025

Op Biddut

95
View

গোবিন্দ মাষ্টার চিঠিটা শক্ত করে ধরে তাকাল সেই আঁকা ম্যাপের দিকে। ডাকঘরের মেঝেতে বাঁদিকে একটা ছোট বৃত্তচিহ্ন দেওয়া — ঠিক যেন কোনো গোপন দরজার ইঙ্গিত। পরদিন ভোরবেলায় তিনি ডাকঘরে এলেন। কারও উপস্থিতি নেই। চারপাশ নিঃস্তব্ধ।

মেঝের ওই জায়গায় লণ্ঠন রেখে টোকা দিতেই একটা খটাস শব্দ হলো, তারপর যেন কাঠের নিচে একটা ফাঁপা শূন্যতা। তিনি কাঠ সরাতেই বেরিয়ে এলো পাথরের তৈরি এক সরু সিঁড়ি—নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে, যেন সময়ের অতল গহ্বরে।

তিনি নামতে থাকলেন… প্রতিটি ধাপে যেন অতীতের স্মৃতিরা চোখে ভেসে উঠতে লাগল—একবার যেন বাবার মুখ, আরেকবার হারিয়ে যাওয়া প্রথম প্রেম… কিন্তু আশ্চর্য, এই স্মৃতিগুলো তাঁর নিজের নয়!

সিঁড়ির শেষে একটি লোহার দরজা—তার উপর লেখা:

“সময় নিজেকে বারবার পুনরাবৃত্ত করে। প্রবেশ মানেই ভুলের পুনরাবৃত্তি।”

গোবিন্দ মাষ্টার কিছুটা কাঁপা কাঁপা হাতে দরজাটি ঠেলে খুললেন। ভেতরে এক গোলাকার কক্ষ, দেওয়ালে ঘুরছে শত শত ঘড়ি—সবগুলো উল্টো ঘোরে, আর মাঝখানে রাখা একটি পাথরের চক্র—তার চারপাশে ছায়ামূর্তি ঘুরে বেড়াচ্ছে, এক এক করে মিলিয়ে যাচ্ছে আবার জেগে উঠছে।

হঠাৎ একটি ছায়ামূর্তি তাঁর দিকে এগিয়ে এল। এবার মুখ দেখা গেল। অবিকল… তাঁর নিজের মুখ!

কিন্তু সেই মুখ থমথমে, চোখ দুটি ফাঁপা। মুখ খুলে বলল,

“তুমি শেষ গোবিন্দ। আমরাও একদিন তোমার মত ছিলাম। সময়কে বাঁকাতে গেলে সময় নিজেই বাঁকিয়ে দেয় মানুষকে…”

গোবিন্দ মাষ্টার কিছু বলার আগেই চারপাশে আলো নিভে গেল, আর তিনি টের পেলেন—সময় থেমে গেছে। এখন আর কোনও দিন নেই, রাত নেই—শুধু সময়ের বাইরে এক চক্রাকার দুঃস্বপ্ন, যেখান থেকে কেউ ফেরে না…

চলবে…


কীভাবে গোবিন্দ সময়ের এই ফাঁদ থেকে বের হতে চেষ্টা করে… নাকি সেও ছায়ায় রূপান্তরিত হয়ে যাবে?

Comments

    Please login to post comment. Login