শুভ নববর্ষ ১৪৩২।
দ্বিতীয় দিনে আমি শুভেচ্ছা জানালাম। কারণ গতকাল থেকেই তাকিয়ে ছিলাম কিছু বন্ধু/কলিগ বা পরিচিত মুখের দিকে, যারা প্রতি বছর আল্লাহর নাম নিয়ে বাংলা সনের প্রথম দিনেই সামাজিক মাধ্যম বা সরাসরি কথা-বার্তায় মুখে যা আসত তাই বলত। যথারীতি তারা যেহেতু কপি-পেস্টে সিদ্ধহস্ত তাই প্রায় একই ধরনের লেখা সবার ওয়ালেই ঘুরে বেড়াত। সেখানে সরকারকে খোচার মাধ্যমে চারুকলার "কলা" বিজ্ঞানীদের নিয়ে বিভিন্ন কথা ঘুরিয়ে পেচিয়ে বলত। যেমন ভারত বা আমেরিকা চাঁদে যাচ্ছে বা উন্নত ধরনের গবেষণা করে এগিয়ে যাচ্ছে ইত্যাদি। যদিও চারুকলার শিক্ষা কাঠামো ভিন্ন।
তবে এবছরের প্রেক্ষাপট একেবারে ভিন্ন। সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে যেন সব জায়েজ হয়ে গিয়েছে। তাদের কারো ওয়ালে কোন বিদ্রুপ নেই। অবার করা বিষয় হল তাদের কেউ কেউ শুভেচ্ছাও জানাচ্ছে। কেউবা এবছরেরটা সেরা হইছে দেখানোর জন্য গতবারের বিভিন্ন ভিডিওর ছোট ক্লিপ বা ইউনুস সাহেবের শুভেচ্ছার ছবি শেয়ার দিচ্ছে। আমরা দেখলাম, প্রতিবারের মত এবারেও সেখানে মুর্তি বানালো, ছেলেমেয়েরা একসাথে মিছিল করল, বাদ্য বাজাল, গান গেল ইত্যাদি ইত্যাদি কিন্তু এবার কোন প্রতিবাদ নেই, নেই কোন টক শোতে সমালোচনা? হুজুরেরা নিশ্চুপ ঠিক যেন সুদ নিয়ে অতিবিজ্ঞ ব্যক্তিদের মাহফিলে কথা না বলার মত। চাটুকার ফারুকি মঙ্গল শোভাযাত্রা নাম চেঞ্জ করে দিলেন আনন্দ শোভাযাত্রা। এটা হল সুদ না মুনাফা/ইন্টারেস্ট খাওয়ার মত বা একই গ্লাসে মদ/পানি নেয়ার মত। আর যাইহোক আনন্দ শোভাযাত্রা নাম দিয়ে জাতীয় পার্টির লাভ হয়েছে। এর ফলে ৯০ পরবর্তি স্বৈরাচারের ইতিহাস সবাই ভুলে যাবে।
মাশাআল্লাহ এই না হলে বাঙ্গালী মুসলিম। কয়েকমাস আগেও বলা হত এটি হিন্দুয়ানা কালচার যদিও মুঘল সম্রাট আকবর ১৫৫৬ সালে এটি খাজনা আদায়ের লক্ষ্যে প্রচলন করেছিলেন। এরপর পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর নিপীড়ন ও সাংস্কৃতিক সন্ত্রাসের প্রতিবাদে ১৯৬৭ সাল থেকে ছায়ানটের বর্ষবরণ শুরু হয়েছিল এবং সর্বশেষ ১৯৮৯ সালে শুরু হয় আনন্দ শোভাযাত্রা যেটা এরশাদের পতনের পর মঙ্গল কামনায় “মঙ্গল শোভাযাত্রা” নামে নতুন যাত্রা শুরু হয়।
তো আশা করি নতুন বছরটি সবার জন্য শুভ হোক। আমাদের ম্পনে রাখা উচিত, মানুষের সবচেয়ে নিকৃষ্ট চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হলো মুনাফেকি তথা দ্বিচারিতা। এটি পরিহার করি কারন এটা মুনাফেকের লক্ষন এবং তাদের স্থান হবে জাহান্নামের সর্বনিম্নস্থানে।
224
View