Posts

গল্প

আলোর নিচে অন্ধকার পর্ব ৬ লেখক:-বিদ্যুৎ

April 16, 2025

Op Biddut

98
View

ঘরের মধ্যে দু’জন গোবিন্দ মুখোমুখি। একজন জানে সে মানুষ, আরেকজন জানে সে ছায়া। সময় থেমে আছে। বাতাস স্তব্ধ। অথচ বাতিল ঘরের দেয়াল থেকে যেন অজানা কিছুর শ্বাস-প্রশ্বাস শোনা যাচ্ছে।

হঠাৎ আলোর ঝুলন্ত বাতিটা দুলে উঠল নিজে থেকেই। এক বিকট ঠাণ্ডা হাওয়া ঘরটাকে গ্রাস করল। ছায়া-গোবিন্দ হেসে উঠল—কিন্তু সেই হাসিতে কোনও মানবিকতা নেই, যেন কবর থেকে ভেসে আসা কারও ফিসফাস।

“তুমি জানো না, গোবিন্দ,” সে বলল, “তোমার ছায়া আমি নই, বরং তুমি নিজেই আমার ছায়া হয়ে উঠছিলে, ধীরে ধীরে… কারণ তুমি খামের গন্ধ পেয়েছিলে, ওটা ছুঁয়েছিলে…”

এক মুহূর্তে সব বাতি নিভে গেল। চারপাশে অন্ধকার, কেবল ছাদের ফাটল থেকে নামতে লাগল কালো ধোঁয়া… আর সেই ধোঁয়ার ভেতর থেকে গলার স্বর এল—চেনা, কিন্তু মৃতদের মতো গম্ভীর।

“সবাই ভাবে সময় একটা চক্র… কিন্তু এটা এক শ্মশান… যারা ঘাঁটে, তাদের ছায়া টিকে থাকে, শরীর নয়…”

গোবিন্দ মাষ্টার হাঁপাতে লাগলেন। হঠাৎ তিনি দেখলেন—ঘরের আয়নায় তাঁর নিজের প্রতিবিম্ব আর নেই, বরং সেখানে এক রক্তাক্ত মুখ, চোখ উপড়ে গেছে, আর গলা কাটা—কিন্তু মুখটা তাঁরই!

দেয়ালের আড়াল থেকে বেরিয়ে এল তিনটি ছায়ামূর্তি—এদের চেহারা অস্পষ্ট, কিন্তু প্রত্যেকেই একেক সময়ের গোবিন্দ—একজন ১৯৪৭, এক ১৯৭১, আরেকজন ২০০১-এর। সকলেই মৃত, কিন্তু আটকে আছে—সময় তাদের খেয়ে ফেলেছে, আত্মা শোষে রেখেছে এই ভৌতিক ঘরে।

একজন বলল—

“তুমি যদি চাও বাঁচতে, তবে কাউকে এই খাম দাও… কাউকে সময়ের দরজায় ঠেলে দাও… নয়তো তুমি হবে পরের ছায়া…”

গোবিন্দ মাষ্টার কাঁপতে কাঁপতে বললেন,
“না… আমি কাউকে টানব না… আমি এই ফাঁদ ভাঙব!”

ছায়া-গোবিন্দ তখন সামনে এসে বলল—
“তবে প্রস্তুত হও… আজ রাতেই তোমার আত্মা ছায়ায় মিলিয়ে যাবে… আর এই বাড়িটা পরিণত হবে শবঘরে…”

ঠিক সেই মুহূর্তে দরজা নিজে থেকেই খুলে গেল… আর বাইরের অন্ধকারে দাঁড়িয়ে ছিল একটা শিশু… তার হাতে সেই সাদা খাম

চলবে…

Comments

    Please login to post comment. Login