Posts

গল্প

"কখনোই কি ফেমাস হবো না

April 17, 2025

মোঃ আকাশ শেখ

118
View

"কখনোই কি ফেমাস হবো না?"

আকাশের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল তিতলি। শহরের এক কোণে ভাড়া বাড়ির ছোট্ট ঘরে তার দিন কাটে—নীরব, নিরালম্ব, কিন্তু স্বপ্নে পরিপূর্ণ। তার স্বপ্ন আকাশছোঁয়া—একদিন সে হবে বিখ্যাত গায়িকা। তার গলায় এক অনন্য মাধুর্য আছে, এমন সুর যা মানুষের মন ছুঁয়ে যায়।

তবু বাস্তবতা বড় কঠিন। দিনের পর দিন স্টুডিওর দরজায় দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো সুযোগ আসে না। পরিচিতরা কটাক্ষ করে, “এত স্বপ্ন দেখে কী হবে? সময় নষ্ট ছাড়া আর কিছু না।” এই কথাগুলো মাঝে মাঝে তিতলির বুকের গভীরে গেঁথে যায়। নিজেকেই প্রশ্ন করে সে— “কখনোই কি আমি ফেমাস হবো না?” প্রশ্নটা যেন ছায়ার মতো অনুসরণ করে তাকে, মনের ভেতর বিষাদের মেঘ জমে।

একদিন, তিতলির হাত পড়ে মায়ের পুরনো ডায়েরির উপর। মা-ও গান গাইতেন একসময়—স্বপ্ন দেখতেন বড় শিল্পী হবেন। কিন্তু সংসার আর জীবনের বাস্তবতায় সেই স্বপ্ন চাপা পড়ে গিয়েছিল। ডায়েরির পাতায় পাতায় মায়ের না-বলা কষ্ট, অভিমানের স্তব্ধ ভাষা যেন কথা বলে ওঠে।

তিতলি বুঝে ফেলে, তার ভয়, তার সংশয়ের শিকড় কোথায়। মায়ের অপূর্ণ স্বপ্ন আজও তাকে তাড়া করে বেড়ায়। কিন্তু সে হাল ছাড়ে না।

সেই রাতেই তিতলি একটা সিদ্ধান্ত নেয়। খ্যাতির পিছনে না ছুটে, সে নিজের ভালোবাসার পথ বেছে নেবে। পরদিন, স্টুডিওর লাইনে না গিয়ে, নিজের ছোট্ট ঘরে, সাদামাটা আলোতে নিজের লেখা একটি গান গেয়ে রেকর্ড করে। গানটায় ছিল তার মনের সব কথা, যন্ত্রণা আর স্বপ্নের সুর। কোনো সাজগোজ নয়, কোনো প্রত্যাশা নয়—শুধু নিখাদ ভালোবাসা। ভিডিওটি সে একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে আপলোড করে দেয়।

তারপর কেটে যায় কয়েকটি দিন।

হঠাৎ করেই তার ফোনের নোটিফিকেশন একের পর এক বাজতে শুরু করে। অসংখ্য মানুষ তার গানে মুগ্ধ, মনের গভীর থেকে প্রশংসা করছে। কেউ কেউ লিখছে, “তোমার গান মন ছুঁয়ে গেল।” এমনকি নামী কিছু সঙ্গীত পরিচালকও যোগাযোগ করতে চায় তার সঙ্গে।

তিতলি অভিভূত। সে বুঝে যায়—আপন সত্য দিয়ে তৈরি শিল্প কখনো না কখনো জায়গা করে নেয় মানুষের মনে। খ্যাতির পেছনে না ছুটেও, ভালোবাসা দিয়ে সে পৌঁছে গেছে মানুষের হৃদয়ে।

সেই রাতে আকাশের দিকে তাকিয়ে তিতলি হাসে। এবার আর কোনো দীর্ঘশ্বাস নেই—শুধু এক অদ্ভুত শান্তি আর নতুন আশা।

হয়তো সে একদিন সত্যিই বিখ্যাত হবে। হয়তো না-ও হবে। কিন্তু আজ সে জানে—তার গান বেঁচে থাকবে, তার সুর মানুষের মন ছুঁয়ে যাবে। আর সেটাই তো একজন শিল্পীর সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।
 

এই গল্পটি মানুষকে বোঝানোর জন্য চেষ্টা কর দেওয়ার মালিক আল্লাহ এবং গান-বাজনা ইসলামে হারাম এটা ভুলে গেলে হবে না।

Comments

    Please login to post comment. Login