~~অবহেলিত প্রিয়জন🥀❤️#
writer: Jannatul Mawya
পার্ট:-১
পাঁচ বছর পর আবির তার বাড়িতে ফিরলো।সেই পাঁচ বছর আগে রাগের বশে বাড়ি ছেড়ে পাড়ি জমিয়ে ছিলো বিদেশে।আবিরের উপস্থিতিতে বাড়িতে যেনো খুশির বন্যা বয়ে গেল।কিন্তু আবিরের দু- চোখ যেনো কাউকে খুজে বেড়াচ্ছে। তার খুজে বেড়ানো মানুষ টাকে সে কোথাও দেখতে পাচ্ছে না। আবিরের চোখ জোড়া সজল হয়ে উঠলো। সে তার অবহেলিত মায়াবতি কে কোথাও দেখতে না পেয়ে তার বাবাকে বললো, আমার বউ কোথায় বাবা??
বাবা: তুমি তাকে কেনো খুজছো। সে নেই।
আবির : কোনো বাবা আমার বউকে আমি না খুজলে কে খুজবে। আমার আয়রা কোথায় বাবা?
বাবা: যার কোন দাম নেই তোমার কাছে তুমি তাকে কেনো খুজছো।তুমিই তো একদিন এই মেয়েকে রেখে চলে গিয়েছিলে । তবে আজ কেনো তাকে খুজছো। সে এই বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে
আবির: এসব তুমি কি বলছো বাবা। আমার বউ কোথায় গেল। ও তো এই বাড়ির বউ তাইনা??
বাবা: সেটা কি তুমি মেনে ছিলে?? মেয়েটা তোমার জন্য অনেক কিছু সহ্য করেছে। সমান্য গ্রামের বলে তুমি তাকে কতই না অপমান অপদস্ত করেছো। তুমি তাকে ফেলে চলে গিয়েছিলে তবে আজ কেনো তাকে খুজছো
আবির: বাবা আমি তখন আয়রার ভালোবাসা বুঝতে পারিনি।
আমি শুধু ও কে অপমান করে গেছি দিনের পর দিন।কারন ছিলো আমার অহংকার, দাম্ভিকতা।আয়রা গ্রামের মেয়ে। শহরের মেয়েদের মতো স্মার্ট না।গ্রামের মুরুব্বি দের মতো সারাক্ষণই ঘোমটা টেনে রাখে এজন্য কত ভাবেই না তাকে অপমান করেছি।আমার আয়রা কে আমি যেভাবেই হোক খুজে বের করবো তুমি দেখে নিও বাবা।আমি ওর কাছে ক্ষমা চাবো।
এই বলে আবির বসার ঘর থেকে ছুটে তার রুমে চলে যায়।
এবার আসুন আপনাদের আবিরের পরিচয় টা দিই...........
আবির তার বাবা মায়ের একমাত্র পুএ সন্তান।ওর পুরো নাম আবির আহম্মেদ । ও এবার অনার্স পাস করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর মেনেজমেন্ট বিভাগ থেকে। আবিরের বাবা রাশেদ সাহেব। পেশায় তিনি একজন উকিল। আবিরের মা শাহানা বেগম। তার পরিবার কে ঘিরে তার সময় কাটে।স্নেহা আবিরের ছোট বোন। এবার নবম শ্রেণিতে পড়ে বিজ্ঞান বিভাগে।এছাড়া ও আবিরের পরিবারে আছে তার চাচা,চাচি, দাদা,দাদি ও চাচাতো বোন স্পিহা।স্নেহা ও স্পিহা একই ক্লাসে পড়ে। গল্পের যে মেইন ফোকাস আবির, বয়স তার বেশি নয় সবে মাএ ২৪ এ পা রেখেছে। আাবিরের মা শাহানা বেগম তার এক বান্ধবীকে কথা দিয়েছে তার মেয়েকে সে পুএবধু করে নিয়ে আসবে। শাহানা বেগমের বান্ধবীর স্বামী মারা যাওয়ায় সে সন্তান দের নিয়ে চলতে পারছিলো মা তাই শাহানা বেগম বান্ধবী কে বলেন তার বড় মেয়েকে নিয়ে তার ভাবতে হবে না।
এবার আসি শাহানা বেগমের বান্ধবীর মেয়ে আয়রা কে নিয়ে। ওর পুরো নাম আয়রা ইবনাত। সে অনার্স ২য় বর্ষে পড়াশোনা করছে। আয়রার বাবা মারা যায় কিছু দিন আগে। আয়রার আরো এক ভাই এক বোন রয়েছে। তারা আয়রার চেয়ে বয়সে ছোট।আয়রার ভাই আয়াশ অষ্টম শ্রেণির ছাএ এবং আয়রার বোন আকছা দশম শ্রেণির ছাএী।এ সময় তার বাবা মারা যাওয়ায় তাদের পরিবার টা চালানো তার মায়ের পক্ষে কষ্ট হয়ে পড়েছিলো।এজন্য তিনি বড় মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।আবিরের মা তার পরিবার কে জানান তার এই প্রস্তাবের ব্যাপারে এবং সবাই এতে সম্মতি জানায়। কিন্তু আবির এ বিয়েতে রাজি নয়। সে শহরের একটা স্মার্ট ছেলে । সে কি করে গ্রামের খ্যাত মেয়েকে বিয়ে করবে। কিন্তু মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে সে এই বিয়েতে রাজি হয়।আবির মন থেকে মেনে নিতে পারছিলো না এই বিয়ে।
~~অবশেষে ঘনিয়ে এলো শুভক্ষণ। আবির ও আয়রার বিয়ের দিন। তাদের বিয়ে সম্পূর্ণ হলো।কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা একে অপরের মুখ ও দেখেনি।আয়রা কে আবিরের বাড়িতে নিয়ে আাসা হলো। সারা বাড়ি আলোতে ঝলমল করছে।আয়রা বসে আছে গোলাপে গাঁথা এক খাটে পুরো ঘরটা যেনো একটা গোলাপ বাগান।গোলাপ দিয়ে সুন্দর করে ঘরটা সাজানো হয়েছে। অন্ধকার ঘরে একা বসে আছে আয়রা। নতুন জায়গা নতুন জীবন। আয়রা যেনো মনে এক ভয়ের রাজপ্রাসাদ গড়ে তুলেছে। সে যে বাড়িতে এসেছে এ বাড়ির মানুষজন কেমন। তারা আদো আয়রা কে আপন করে নিতে পারবে তো? আয়রা তাদের মনের মতন হয়ে উঠতে পারবে তো?? বিভিন্ন চিন্তা ঘিরে দরছে আয়রা কে। হটাৎ অন্ধকার ঘরে আগমন ঘটলে এক রমনীর। সে আসাতে আয়রা আরো ভয় পেয়ে গেল। সে এসে আয়রার সামনে এসে বসে বললো ভয় পাচ্ছো কেনো? আমি তোমার একমাএ ননদিনী স্নেহা। আর এ বাড়ির রাজকন্যা। কিন্তু এবার মনে হচ্ছে তুমি তাতে ভাগ বসাবে।এবার আয়রা একটু হেসে উঠলো। স্নেহা বললো তুমি এ বাড়িতে খুব ভালো থাকবে আদরে থাকবে। এসব নিয়ে এতসত ভেবো না। এবার আমি আসি ডিয়ার ভাবি নাহয় তো ভাইয়া সময় কম পাবে বলে স্নেহা চলে যায় আয়রা ও মুচকি হাসে। চলবে.............................