ফরাসি লেখক ভিক্টর হুগো ‘দ্য হাঞ্চব্যাক অব নটর ডেম’ এবং ‘লা মিজারেবল’ উপন্যাসের জন্য বিখ্যাত। কিন্তু তিনি যে একজন চিত্রকর ছিলেন তা অনেকেরই অজানা। এখন লন্ডনে তার আঁকা ছবির একটি প্রদর্শনী চলছে।
২১ মার্চ লন্ডনের রয়্যাল একাডেমি অব আর্টসে ‘অ্যাস্টোনিশিং থিংস: দ্য ড্রইং অব ভিক্টর হুগো’ নামের এই চিত্র প্রদর্শনীটি শুরু হয়। এটি ২৯ জুন পর্যন্ত চলবে।প্রদর্শনী উপলক্ষে প্রকাশিত একটি পুস্তিকায় বলা হয়েছে, 'রোমান্টিক এই লেখক এবং রাজনীতিবিদ উনবিংশ শতাব্দীতে ফ্রান্সের একজন নেতৃস্থানীয় পাবলিক ফিগারে পরিণত হয়ে উঠলেও একান্তে তার আশ্রয় ছিল ছবি আঁকা।'
রয়্যাল একাডেমি অব আর্টস এক বিবৃতিতে বলেছে, "কালির মাধ্যমে আঁকা হুগোর কাল্পনিক দুর্গ, দানব এবং সমুদ্রের দৃশ্য তার লেখার মতোই কাব্যিক। তার কাজ রোমান্টিক ও প্রতীকবাদী কবিদের এবং অনেক শিল্পীকে অনুপ্রাণিত করেছিল। ভিনসেন্ট ভ্যান গগ ফরাসি এই লেখকের চিত্রকর্মকে 'বিস্ময়কর জিনিসের' সঙ্গে তুলনা করেছিলেন।"
হুগো তার আঁকা ছবিগুলো দীর্ঘদিন ধরে কেবল ঘনিষ্ঠ বন্ধুদেরই দেখাতেন। অবশ্য পরবর্তীতে তিনি এগুলো ফ্রান্সের জাতীয় লাইব্রেরিতে দান করে যান।
রয়্যাল একাডেমি অব আর্টস জানিয়েছে, ইঙ্ক ওয়াশ, গ্রাফাইট পেন্সিল এবং কাঠকয়লা দিয়ে আঁকা এই শিল্পকর্মগুলো খুব কমই জনসমক্ষে প্রদর্শিত হয়েছে। ৫০ বছরেরও বেশি সময় আগে যুক্তরাজ্যে এই ছবিগুলো শেষ দেখা গিয়েছিল।
প্রদর্শনীতে হুগোর আঁকা ৭০টি ছবি প্রদর্শিত হচ্ছে। এতে বিখ্যাত এই লেখকের শৈল্পিক এবং সাহিত্যিক কাজের মধ্যে সম্পর্ক তুলে ধরা হয়েছে। বেশিরভাগ ছবিই ১৮৫০ থেকে ১৮৭০ সালের মধ্যে আঁকা হয়েছিল। সে সময় তিনি গার্নসি দ্বীপে নির্বাসিত ছিলেন। ১৮৫১ সালের ডিসেম্বরে তৃতীয় নেপোলিয়নের অভ্যুত্থানের পর তাকে নির্বাসনে দেওয়া হয়েছিল। নির্বাসনে থাকাকালীন হুগো তার কিছু প্রধান সাহিত্যকর্ম শেষ করেন, যার মধ্যে রয়েছে ‘লেস চ্যাটিমেন্টস’ এবং ‘লা মিজারেবল’।
উল্লেখ্য, ভিক্টর হুগো ছিলেন একজন ফরাসি রোমান্টিক লেখক এবং রাজনীতিবিদ। তিনি ১৮০২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ফ্রান্সে জন্মগ্রহণ করেছেন। তিনি বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা, ন্যায়বিচার এবং মানুষের আত্মার শক্তি নিয়ে লেখালেখি করেছেন। ফরাসি সাহিত্যে তিনি ইংরেজ লেখক শেক্সপিয়ার এবং ডিকেন্সের সমতুল্য ছিলেন।
সূত্র: এএফপি, দ্য গার্ডিয়ান