পার্ট :-৩
writer:- JANNATUL MAWYA
সবাই তাদের খাওয়া দাওয়া সেরে রুমে চলে গেলো।আবির আয়রাকে উদ্দেশ্য করে বললো যেহেতু বিয়ে করেছি সেহেতু তুমি আমার বউ।তাই তোমাকে দেখতে আমার কিছু বন্ধু আসবে। তুমি রেডি থেকো। দুপুর ঘরিয়ে বিকেল হলো আবিরের দুই বন্ধু নিশাদ ও রাহাত এলো আবিরের বউকে দেখতে। নিশাদ ও রাহাত আবিরকে বললো কিরে দোস্ত ভাবীকে আসতে বল। তার মুখখানা দেখি।আমরা ও দেখি কোন মেয়ের কপাল পুড়েছে। এ কথা বলে তারা হাসতে লাগলো।
আবির:- কপাল পুড়বে কেন? এ বাড়ির বউ হয়েছে এটা তার সাত কপালের ভাগ্য।
নিশাদ:- যাই হোক। এবার আসতে বল ভাবীকে।
আবির:- আসছে তোদের জন্য খাবার বানাচ্ছে।
আয়রা রান্নাঘরে তাদের জন্য কিছু খাবার করছিলো।খাবার নিয়ে লম্বা ঘোমটা টেনে আয়রা হাজির হলো তাদের সামনে। তাদের কে খাবার দিয়ে সালাম দিলো।তারা বললো তা ভাবী কেমন আছেন? আর মনে হয়না এরকম পিচাশের কাছে ভালো থাকবেন। আসেন আমাদের সাথে নিয়ে যায়। এ কথা বলে তারা হাসলো।
রাহাত: ভাবী ঘোমটা টা সরান আপনার চাঁদ মুখ টা দেখি।
আয়রা:- আমি দুঃখিত।আমাকে মাফ করবেন। আমাদের ইসলামে এমন বিধান নেই। পর পুরুষের সামনে যাওয়া সেখানে নিষিদ্ধ। আমি কেবল আমার সেই ১৪ জন পুরুষের সামনে যেতে পারবো যাদের সামনে যাওয়া জায়েজ আছে।আমি আল্লাহর আদেশ অমান্য করতে পারবোনা।আমাকে মাফ করবেন আমি আসি।
এই বলে আয়রা রুম ত্যাগ করলো। আবির রাগে কটমট করছে।
নিশাদ:- কিরে বাড়িতে এনে অপমান করবি আগেই বলতি বা আসতাম। এভাবে অপমান না করলে ও পারতি।
আবির:- সরি বন্ধু। আমি নিজে ও জানতাম ও এমন করবে। আমি এই পযন্ত ওর সাথে কথা বলিনি।আমি বিয়েটা মন থেকে করিনি। তাই ওর থেকে দুরেই থাকি।
নিশাদ:- আসি আর বলতে হবে না কিছু।
এই বলে তারা ও রুম ত্যাগ করলো।আবির দাঁতে দাঁত কামড়াচ্ছে।
আবির আয়রার কাছে গিয়ে বললো :- এই মেয়ে তোমার সমস্যা কি? আমাকে কেনো এভাবে ছোট করলে সবার সামনে। তোমার মতো মেয়েকে কি যে করা উচিত।বেয়াদব মেয়ে।
আয়রা:- দুঃখিত।কিন্তু আমি ভূল কিছু করিনি আমাদের ইসলামে এমন টায় লেখা আছে। আর এতে আপনি এখানে অপনানিত হলে ও পরপারে আমার জন্য আপনি সম্মানিত হবেন।৷
আবির:- চুপ একদম চুপ । আমি লেকচার শুনতে চাইনি।তোমাকে আমি উচিত শিক্ষা দিব দাড়াও।
এই বলে আবির চলে গেলো।আয়রা চুপচাপ দাড়িয়ে আাছে।আবিরের ব্যবহারে কষ্ট পেলে ও আয়রা ভাবে সে ভুল কিছু করেনি।এতে যদি আরো কিছু সহ্য করতে হয় করবে।
বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা হলো বাসার সবাই মিলে পাকোরা খাচ্ছে আর টিভি দেখছে। আয়রা ও তাতে যোগ দিলো।আবির এমন সময় ঘরে প্রবেশ করলো।আবিরের মা শাহানা বেগম ঢেকে বললো শোন আবির কালকে বউমাকে নিয়ে একটু শপিং করতে জাস তো।ওর এখানে তেমন জামা কাপড় নেই।আবির মায়ের মুখের উপর কিছু বলতে পারলো না। মাথা নেরে চলে আসলো নিজের রুমে।
আগের দিনের মতোই তারা তাদের নির্ধারিত স্থানে ঘুমিয়ে গেল।সকালে নাস্তার পর আবির আয়রাকে বললো রেডি থেকো আমি এসে শপিং এ নিয়ে যাব।আয়রা সম্মতি জানালো।
আয়রা রেডি হয়ে বসে আছে সকাল থেকে । দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলো কিন্তু আবিরের আসার কোন নাম নেই।৫টার দিকে এসে বললো চলো। আয়রা আবির কে বললো আপনি একটু নিচে বসুন আমি পাঁচ মিনিটে রেডি হয়ে আসছি। আবির নিচে বসলো আয়রা একটা কালো বোরকা ও নিকাব পড়ে নিচে আসলো বললো চলুন।
আবির:- কোথায়?
আয়রা:- কেন শপিং এ না যাবেন। আমাকে বললেন তৈরী হতে।
আবির:-এভাবে যাবো? আমার সাথে আমি কোন খ্যাত কে নিয়ে যেতে পারবোনা। আমি তোমার সাথে যাবোনা। কিছুক্ষণ পর মায়ের কাছ থেকে বকা খাবে ভেবে বললো চলো। তবে আমার সাথে সাথে যাবা না। আমার পিছনে পিছনে যাবে। যাতে কেউ না বুজে তুমি আমার সাথের বুজেছো??
আয়রা:- জ্বি।
তারা রওনা দিলো আবিরের কথা মতো আয়রা আবিরের থেকে দূরে দূরে রইলো। শপিং শেষে আসার পথে আবিরের দেখা হলো তার বন্ধু সানবির সাথে ।
সানবি:- কিরে বন্ধু এখানে কেন? আর সাথে কি ভাবী নাকি?
বোরকাওয়ালী ই জুটলো শেষমেষ তোর কপালে?
এসব বলে তারা মজা নিচ্ছিলো।
আবির:- ও আমার বউ হতে যাবে কেনো? ওকে আমি চিনিনা।ও আমার সাথের না।
সানবি:- বুজি বুজি সবই বুজি।আর লুকাতে হবে না।
এবার আবির রাগে ফুসতে থাকে। আবির চলে যায় ওখান থেকে। আয়রাকে বললো কোথা থেকে এই চাচী মার্কা মেয়ে এসে জুটলো আমার কাপালে।এর জন্য আমাকে বারবার অপমানিত হতে হচ্ছে।
আবির:- এই মেয়ে শোন আমার জীবন থেকে চলে না। আমার জীবন টা তুই তেজপাতা করে ফেলেছিস।
আয়রা:- আমার দোষটা কি? আমাদের প্রত্যেক মেয়েদের ই উচিত নিজেকে পর্দার আড়লে রাখা । এতে তো আপনার খুশি হওয়ার কথা যে আপনার বউকে অন্য কোন বেগানা পুরুষ দেখলো না।
আবির:- সর এখান থেকে যওসব।
এই বলে আবির চলে গেলো আগে আগে।আয়রা খুবই কষ্ট পেলো। কষ্টে মেয়েটা কান্না করতে লাগলো।
চলবে...............