পাহাড়ের চূড়ায় এক গোপন পথ। কুয়াশায় ঢাকা সেই পথের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে একটি প্রাচীন পাথরের দরজা—ভাঙাচোরা আর শ্যাওলায় ঢেকে যাওয়া। ইরো, কাইজি আর চোখবাঁধা ছায়াযোদ্ধা মেয়ে নোরা পৌঁছে এসেছে ‘হারানো গ্রন্থাগার’-এর সামনে।
নোরা ধীরে বলে,
“এই গ্রন্থাগার রক্ষা করে এক প্রাচীন চক্র—‘রক্তপ্রহরী’। প্রবেশ করতে হলে তোমার রক্তের ছাপ দরকার, ইরো।”
ইরোর বুকের আগুনচিহ্ন যেন গরম হয়ে উঠল। সে দরজার মাঝখানে হাত রাখল।
গমগম করে কেঁপে উঠল পাহাড়।
পাথরের দরজা দ্বিখণ্ডিত হলো, আর সেগুলোর ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে এলো এক অন্ধকার আলো—যেন অতীতের স্মৃতি গলে গলে নামছে সামনে।
তারা তিনজন ভিতরে প্রবেশ করল। ভেতরটা বিশাল, ধুলোমাখা, আর অসংখ্য স্ক্রল আর বইয়ে ঠাসা। বাতাস ভারী, এবং কোথাও একটা গুমোট চিৎকার যেন চেপে রাখা হয়েছে।
কাইজি একটা পুরনো স্ক্রল খুলে পড়ল:
> “ইগেন রক্তচক্র বাহক একদিন ফিরবে, আগুন হবে অস্ত্র আর ছায়া হবে সঙ্গী। সে হারিয়েছিলো তার রক্তসম্পর্কীয় ভাই, যাকে চুরি করে নিয়েছিলো ছায়ার শাসক।”
ইরোর চোখ ছলছল করে ওঠে।
সে কাঁপা গলায় বলল,
“আমার... ভাই?”
নোরা এগিয়ে এসে বলল,
“হ্যাঁ, ইরো। তার নাম ছিলো রেনজি তেনজিন। এবং সে এখন ছায়া পরিষদের অধিনায়ক।”
ঠিক তখনই ছায়ার ভেতর থেকে জেগে উঠল এক দানবীয় ছায়াপ্রতিমা—চোখ জ্বলছে রক্তের মতো, হাতে ছায়ার বর্শা।
নোরা চিৎকার করে বলল,
“এটা ‘রক্তপ্রহরী’! তোমার শক্তি প্রমাণ করতে হবে এখনই!”
---
লড়াই শুরু।
ইরো প্রথমে দ্বিধাগ্রস্ত। তার চক্র অস্থির, আগুন ছিটকে যাচ্ছে চারদিকে। কাইজি আর নোরা একসাথে ঝাঁপিয়ে পড়ল সেই দানবের দিকে। কিন্তু দানব গর্জে উঠল, আর নোরা আছড়ে পড়ল দেয়ালে—অজ্ঞান!
ইরো রাগে ফুঁসতে থাকে। বুকের চিহ্ন জ্বলতে জ্বলতে ছড়িয়ে পড়ে দুই হাত পর্যন্ত।
তার মুখে উঠে আসে নতুন এক মন্ত্র—নিজেও জানে না, কোথা থেকে এল:
> “রক্তচক্র শিখা: তৃতীয় স্তর—আগ্নিযাত্রা!”
তার শরীর ঘিরে আগুনের ডানার মতো কিছু গজিয়ে ওঠে। চোখদুটি আগুনে জ্বলতে থাকে। এক লাফে সে আঘাত করে রক্তপ্রহরীর বুকে। সেই ছায়াদানব চিৎকার করে গলে যায় ছায়ার মধ্যে।
---
নিরবতা।
ইরো হাঁপাচ্ছে। তার গায়ে পোড়া পোড়া গন্ধ।
নোরা ধীরে উঠে বলে,
“তুমি সফল। তুমি রক্তের উত্তরাধিকারী।”
কাইজি ফিসফিস করে বলে,
“তুমি এখনো জানো না… রেনজি বেঁচে আছে, এবং সে জানে তুমি আসছো।”
ইরো চোখ তুলে বলে,
“তাহলে আমিই শেষ করব যা শুরু হয়েছিলো আগুন আর ছায়ার মিলনে।”
---
চলবে…