অধ্যায় ১: নিঃশব্দ আগমন
রেইনরার শান্ত দুপুরে হঠাৎ আকাশ কালো হয়ে এল। বাতাস থেমে গেল। গাছগুলো কাঁপতে লাগল এক অসম্ভব নিস্তব্ধতায়। রাহুল তখন দ্বীপের ‘আয়না বনে’ রক্ষকদের পুরোনো নিদর্শন খুঁজছিল।
তখনই সে টের পেল এক অদ্ভুত পরিবর্তন। বাতাসের মাঝে ছিল এক বেখাপ্পা ঘ্রাণ—ধাতব, জ্বালাময়। এমন কিছু সে আগে কখনও অনুভব করেনি।
এক পাথরের নিচে সে খুঁজে পেল একটি ভাঙা লকেট। লকেটের ভেতরে এক চুলগোঁফওয়ালা ছেলের ছবি—পাশে এক লেখাঃ
“বাঁচাও আমাদের... স্মৃতির বাইরে কেউ আছে…”
রাহুল চমকে উঠল। “স্মৃতির বাইরে...?”
তার মানে দ্বীপের বাইরেও কিছু লুকিয়ে আছে, কিছু এমন যা এই দ্বীপ চায় না কেউ জানুক?
অধ্যায় ২: নিষিদ্ধ প্রান্তর
রেইনা ফিরে এসেছে। তার মুখে গভীর চিন্তা।
“তুমি এটা পেলে কোথা থেকে?” সে প্রশ্ন করল লকেটটা দেখে।
“আয়না বনের পাথরের নিচে।”
রেইনা কিছুক্ষণ চুপ, তারপর বলল, “তুমি যদি সত্যিই উত্তরসূরি হতে চাও, তবে তোমাকে যেতে হবে ‘নিষিদ্ধ প্রান্তরে’। ওখানে রয়েছে এমন কিছু যা রেইনরার ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা হয়েছিল।”
“কিন্তু কেন?” রাহুল জিজ্ঞেস করল।
“কারণ সেখানে লুকিয়ে আছে রেইনরার ব্যর্থতা।”
অধ্যায় ৩: ছায়াদের রাজ্য
নিষিদ্ধ প্রান্তর যেন এক মৃত অঞ্চল। গাছগুলো পোড়া, বাতাস গন্ধহীন, আর আলো যেন সেখানে পৌঁছায় না।
কিন্তু সেখানে পৌঁছেই রাহুল দেখল, এক গুহার মুখে অপেক্ষা করছে কয়েকজন ছায়ার মতো মানুষ।
তারা বলল, “তুমি এসেছো... আমরা জানতাম তুমি আসবে।”
“তোমরা কারা?” রাহুল চমকে জিজ্ঞেস করল।
“আমরা পুরনো রক্ষক। আমাদের ভুলের জন্য রেইনরা দুই ভাগে ভাগ হয়েছিল। আমরা বহিষ্কৃত। কিন্তু এখন আবার সেই ভুল ফিরে আসছে। কারণ ‘ঘড়ির লোক’ ফিরে এসেছে।”
“ঘড়ির লোক?” রাহুল যেন সেই নাম শুনেই শিউরে উঠল।
“হ্যাঁ,” তারা বলল, “এক বিজ্ঞানী, যিনি সময় নিয়ন্ত্রণের পেছনে পাগল হয়ে রেইনরাকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল।”
অধ্যায় ৪: সময়চক্রের ফাঁদে
রাহুল এবার সময়ের ভেতর ঢুকে পড়ল। এক গোপন গুহায় ছিল প্রাচীন ‘সময়চক্র’—এক যন্ত্র, যেটা দিয়ে রেইনরার স্মৃতি সময়ের বাইরে সংরক্ষিত ছিল।
কিন্তু সেখানে সে মুখোমুখি হলো এক রোবোটিক ছায়ামানবের—ঘড়ির লোক!
“তুমি অনেক দেরি করে ফেলেছো,” সে বলল, “এই দ্বীপ আমি আবার তৈরি করবো—মেশিনের শক্তিতে, স্মৃতিহীন মানুষে!”
রাহুল বলল, “মানুষের স্মৃতি নিয়েই তার অস্তিত্ব। তুমি ভুল!”
তখনই শুরু হলো ভয়ংকর এক যুদ্ধে—রাহুল তার চিহ্নশক্তি দিয়ে সময়চক্রের নকল রূপগুলোকে ভেঙে দিচ্ছে, আর ঘড়ির লোক সময় বদলে দিচ্ছে বারবার।
অবশেষে, রাহুল এক স্মৃতি ব্যবহার করল—তার মায়ের কণ্ঠ, তার ভালোবাসা, তার সব অনুভব—যা যন্ত্র জানে না।
এই আবেগই সময়চক্র ভেঙে দেয়।
অধ্যায় ৫: নতুন সূর্যোদয়
ঘড়ির লোক পরাজিত। রেইনরা আবার আলোয় ভরে গেল।
রেইনা বলল, “তুমি শুধু রক্ষক নও, তুমি ইতিহাসের রচয়িতা।”
রাহুল এক পাহাড়চূড়ায় দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় দেখছিল।
তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল নতুন প্রজন্ম—রেইনরার ভবিষ্যৎ উত্তরসূরিরা।
তার হৃদয়ে শান্তি। তার যাত্রা শেষ নয়, কিন্তু দায়িত্ব শুরু হলো সত্যিকারভাবে।
শেষাংশ: আবার ডাক আসবে
বহু দূরে, এক মানব বিজ্ঞানী মহাকাশ থেকে এক দ্বীপের সংকেত ধরল।
সে হেসে বলল, “রেইনরা আবার সক্রিয় হয়েছে। এবার আমি নিজে যাবো।”
তার চোখে লাল আলো জ্বলছে।
চিহ্নধারীর যাত্রা শেষ, কিন্তু রেইনরার কাহিনি—শুধু শুরু…
চলবে