ChatGPT
গল্পের নাম: "মুতার মরুতে তিন সূর্য"
সালটা ছিল হিজরি ৮ম। মদীনায় বসে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক গভীর দুঃসংবাদ পেলেন। ইসলামের দূত হারেৎ ইবনে উমাইর (রাঃ) যখন বুসরা এলাকার গভর্নরের কাছে ইসলাম প্রচারের জন্য গিয়েছিলেন, তখন রাজ্যের শাসক তার আদব রক্ষা না করে তাকে নির্মমভাবে শহীদ করে।
এ সংবাদ নবীজির হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটাল। কারণ ইসলামের দূতকে হত্যা মানেই একটি শান্তির আহ্বানকে অগ্রাহ্য করা—এটি ছিল যুদ্ধের ঘোষণার সমতুল্য।
তিন হাজার সাহাবিকে প্রস্তুত করা হলো। তাদের মধ্যে ছিলেন সাহসী সৈনিক, কুরআনের হাফিজ, নামাজে অটল মু’মিন। সেনাপতি ঠিক করা হলো – প্রথমে হযরত যায়েদ ইবনে হারিছা (রাঃ), যদি তিনি শহীদ হন তবে হযরত জাফর ইবনে আবু তালিব (রাঃ), এরপর হযরত আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা (রাঃ)।
তারা যখন মুতার প্রান্তরে পৌঁছালেন, দেখে চোখ ছানাবড়া! রোমান বাহিনী এবং তাদের মিত্ররা প্রায় এক লাখেরও বেশি! সাহাবিদের তুলনায় সংখ্যায় ছিল অনেকগুণ বেশি।
কিন্তু তাদের মনে ছিল আল্লাহর ভয়, নবীজির ভালোবাসা, আর শহীদের মর্যাদার প্রত্যাশা।
যুদ্ধ শুরু হলো।
প্রথম সূর্য উঠলো—জায়েদ ইবনে হারিছা (রাঃ)। তিনি ধীরে ধীরে সামনে এগিয়ে গেলেন, জান্নাতের আশায়। শহীদ হলেন, কিন্তু থামলেন না।
এরপর দ্বিতীয় সূর্য—জাফর (রাঃ)। তিনি এক হাতে কালিমার পতাকা, আরেক হাতে তলোয়ার। শত্রুরা যখন তার হাত কাটে, তিনি পতাকা অন্য হাতে তুলে নেন। দুই হাত হারানোর পর বুকে চেপে ধরেন পতাকা। শহীদ হন, কিন্তু পতাকা পড়ে না।
তৃতীয় সূর্য—আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা (রাঃ)। কিছুটা দ্বিধা ছিল মনে, কিন্তু তিনি কুরআনের আয়াত স্মরণ করে সাহসী হয়ে উঠলেন। লড়লেন, শহীদ হলেন, কিন্তু সাহস রেখে গেলেন সহযোদ্ধাদের মাঝে।
এরপর খালিদ ইবনে ওয়ালিদ (রাঃ) সেনাপতি হন এবং কৌশলে সেনাবাহিনীকে রক্ষা করেন। তাঁকে বলা হয় "সাইফুল্লাহ"—আল্লাহর তরবারি।
মদীনায় যখন এ সংবাদ পৌঁছায়, নবীজি কাঁদেন। বলেন, "তোমরা এমন তিন ব্যক্তিকে হারিয়েছ, যারা জান্নাতের ফুল হয়ে গেছে।"