আজ রবিবার সকাল থেকে খুব বৃষ্টি পড়ছে মনে হয় ওরা আজ আর গল্প শুনতে আসবে না। সতীশ ঠাকুরদার কাছে আজ মনে হয় গল্প শোনা হবেনা , তাই আজ আমার খুব মন খারাপ হচ্ছে সারা সপ্তাহে একদিনই তো গল্প বলেন। ওরা যদি না আসে তাহলে আমারও গল্প শোনা হবে না, দেখি সন্ধ্যা হতে তো এখনো কিছুটা সময় বাকি আছে বৃষ্টি কমে নাকি, বৃষ্টি কমলে ওরা আসবেই। সন্ধ্যা হয়ে এলো তবুও বৃষ্টি থামলো না, কিন্তু বৃষ্টির জোর একটু কমে এসেছে। হঠাৎ করে শুনতে পেলাম ; দরজার করা নাড়ার আওয়াজ কেউ মনে হয় এসেছে। কোরান আসছে আর ডেকে ডেকে বলছে জয় দরজা খোল তাড়াতাড়ি দরজা খোল । আমি খুব খুশি হয়ে গেলাম, আর দরজা খোলার জন্য দৌড়ে গেলাম।
আমি বললাম খুলছি খুলছি এবার কি তরজা ভেঙে ফেলবি। তাই বলে আমি দরজা খুলে দিলাম। দরজা খুলে দেখি শানু আর ময়না এসেছে, আমি জিজ্ঞাসা করলাম গোপু আসবেনা ?
শানু বলল হ্যাঁ এই তো এলো বলে।
আমাদের বাড়িটা কাঠ দিয়ে বানানো উপরে টিনের চাল, দক্ষিণ দিকে মুখ করে আমাদের বাড়ি। বাড়িতে তিনটে বারান্দা দক্ষিণে সামনের-পশ্চিমে পাশের আর উত্তর দিকে পেছনের বারান্দা । ওদেরকে পশ্চিমের দিকের বারান্দায় নিয়ে গেলাম, আগেই ওখানে মাদুর পেতে রেখেছিলাম। ওদেরকে বসিয়ে রেখে আমি ঘরের ভেতরে ঠাকুরদা কে ডাকতে চলে গেলাম । আমাদের ঘরের ভেতরে দুটো রুম , পেছনের বারান্দায় দুটো রুম আর পাশের বারান্দায় একটা রুম। আমি গিয়ে দেখি ঠাকুরদা হুকো আর ভাই জগন্নাথ কে নিয়ে ঠাকুরদা আসচে ।
ঠাকুরদা কে দেখে বললাম তুমি জাও আমি আসছি আমি মার কাছে গিয়ে বললাম মা আমার বন্ধুরা এসেছে তুমি চা মুড়ি দাও, এই বলে আমি গল্প শুনতে চলে আসলাম।
আমি এসে দেখলাম ওরা ঠাকুরদার কাছে আবদার করেছে আজকে খুব বৃষ্টি পড়ছে তাই আমরা একটা খুব ভয়ানক ভূতের গল্প শুনতে চাই। হুম হুম বলে ঠাকুরদা হুকো তে গুরু গুরু শব্দ করে দুটো টান দিয়ে একটু ভাবছে। একটু পর আবার হুকোতে গুরু গম্ভীর দুটো টান দিয়ে বলতে শুরু করল।
আজকে তোমাদের গলাকাটা দাদার গল্প বলবো।
ময়না বলল গলাকাটা তো গলা কাটাই হয় । আবার দাদা কি করে হলো ? মানে কিছু বুঝতে পারলাম না।
সতীশ ঠাকুরদা একটু মুচকি হেসে বলল গল্পটা মন দিয়ে শোনো, তখন বুঝতে পারবে।
চলবে