রাত তখন গভীর। শহরের বাতাস থমকে গেছে। সব আলো নিভে গেলেও একটি জানালায় এখনো আলো জ্বলছে—রহিম চাচার কুঁড়েঘরের জানালায়। তিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত ডাকপিয়ন, কিন্তু তার জীবনটাই যেন এক চিঠির অপেক্ষায় চলে গেছে।
প্রতি রাতে তিনি পুরনো খামগুলোর উপর হাত বুলিয়ে বলেন, “মেহজাবিন... তুই কি জানিস, আমি এখনো তোর লেখা চিঠির অপেক্ষায় আছি?”
মেহজাবিন ছিল তার মেয়ে। একদিন হঠাৎ করেই সে শহর ছেড়ে চলে যায়, বলে যায়নি কোথায়। সেদিনের পর থেকে চাচার জন্য সব সকাল নিঃশব্দ হয়ে যায়।
একদিন সকালে ডাকপিয়নের ব্যাগে একটি চিঠি আসে। প্রেরক—"মেহজাবিন রহমান"। চাচার কাঁপা হাতে খামটা খুলে দেখা যায় একটা ছোট্ট লাইন:
“আব্বা, আমি ফিরে আসছি। এবার আর চিঠির ভরসায় নয়—নিজে এসে তোমার হাত ধরব।”
চাচার চোখে জল নেমে আসে। শহর নিঃশব্দ থাকলেও তার হৃদয়ে তখন বজ্রপাতের মতো আনন্দ ধ্বনিত হচ্ছিল।