Posts

কবিতা

কবির য়াহমদ-এর ৪টি কবিতা

April 25, 2025

কবির য়াহমদ

566
View

উইল
সিঁড়ি দিয়ে নেমে যাচ্ছে বিষাদ মেঘ
সুখসমরে জয়ী হয়েছে সে অদ্য
তাই খাঁজে খাঁজে কিম্ভূত চিহ্ন সবিশেষ,
বোকামোর একটা মাত্রা ছাড়িয়েছে প্রজাপতি
স্বভাব সময়ে বিরুদ্ধপথের যাত্রী কচুরিপানা সদৃশ।

একটা নিবিড় বৃক্ষ ঠায় দাঁড়িয়ে ছিল এতদিন পথের ধারে
তার দিকে দু’কদম এগুতে গেলে-
পিছিয়ে পড়ে কিছুটা সময় চোখের পিঁচুটি ধরে।

কত কাছ দিয়ে সেদিন বইছিল সুরমার জল
অদ্যকার পায়ে হাঁটা পথ বুড়িগঙ্গা তীরে,
খাঁজে খাঁজে জ্যোৎস্না নামে,ক্ষীণকায় সুড়ঙ্গে বঙ্গোপসাগর।

একটা দানপাত্রে আজ সাক্ষী হোক উপস্থিতজন
বিষাদের সর্বস্ব দিয়ে যেতে চাই আজ উইল করে
একপক্ষে রাখা হোক আমাকে, আর আরেকপক্ষে সমূহ বিষাদ!

মধুরস
শুনছো কি আগুন ছোঁয়া চোখ
ঠিকরে বেরিয়ে আসছে চামড়া থেকে
পলাতক মরিচ গাছের রঙ মেখে
সামনে এগিয়ে আসে পেছনের দরোজা দিয়ে।

ওরা পাগল বলে লিখে রেখেছে আজকের সংবাদপত্র
তারা পরোয়া করেনি সামান্যই, কারণ ময়ূরপুচ্ছে আদিখ্যেতা
উষ্ণতা জড়িয়ে রেখেছে জামার ভেতর;
বোতাম আটকানো উষ্ণতা-
বাইরে থেকে ছুঁয়ে দেখে যায় বদমায়েশ বাতাস।

এ যেন রূপকথার গল্প-
চোখ বুজে নিলে প্রবহমান বঙ্গোপসাগর

ঝাঁপ দাও, ওহে ঝাঁপ দাও পর্বতশৃঙ্গ থেকে
দেখ একটা নিবিড় সময় অপেক্ষায় থাকে
মধুরসে সিক্ত হবে বলে!


আকাঙ্ক্ষা 
আমার বোধটুকু জাগিয়ে দেয় বৈরি জাহাজ
দূরত্ব কাহাতক জানে না শিল্প জাদুঘর
বৃত্ত থেকে বৃত্তায়ন হয়ে চন্দ্রবিন্দু-
কোথা গেলে টানা যাবে অভব্যতার রাশ।

সমুদ্রে নেমে আবিষ্কার করেছিলাম নুড়ি সমগ্র
হাতে হাতে ওঠে আসে সভ্যতার ফসিল
উন্মুক্ত বাজারের টুকরিতে বসে হয়েছিলাম সওদাপণ্য
অগুনতি মাথার একটা চোখও হিসেবে আনেনি তখন-
স্বভাব আমি শেষ বিচারে থেকেছিলাম বাতিলসম এক।

আমাকে অবাক করে কাশফুল বন
মাতাল হাওয়া সমানে চালায় গণধর্ষণ
ধর্ষিতা সে, তবু চেনেনি শীৎকার, সহ্যের মালা গায়ে তার
দিবসী আয়োজন মন্ত্রমুগ্ধ; আশ্চর্য জলছাপ।

আজ শরতের আকাশে একঝাঁক পায়রা ডানা মেলুক
আজ হেমন্ত নেমে আসুক আগেভাগেই পূর্বঘোষণা ছাড়া-
আজ বেত হাতে ভুখা ছাত্র পেটাতে ইশকুলে যাক অমিয় মাস্টার!

বিবাহিতজন 
দূরে যাও যত দূরে কাছে আসা হবে সহজাত নিয়মে
কাছে আসো তত কাছে যত কাছে আসা যায় আদি নিয়মে
আজ একটা জোনাকিপোকা সাক্ষী থাকুক নীরব রাতে
আজ টইটুম্বুর সাঁকো পাড়ি দেওয়া হোক অনন্ত সুখ সঙ্গমে।

মাঝরাতে কেন তবে এত আদিখ্যেতা প্রাগৈতিহাসিক ধারা
দৃষ্টান্তসম যা পূর্বপুরুষের তার বহতা ধারা এই উত্তরপুরুষেও
কেউ কবে করেছে কি নিয়মের ব্যত্যয়, শুনেছ কি এমন আজব নিয়ম
তৃণমূলে যাও, ওখানে আছে ফুলের সুঘ্রাণ লুটেপুটে খাও
তবু বলবে না কেউ আজ লুটেরা তুমি- এ যে সহজাত।

ভারবাহী কনুইয়ে ঝড়ের পূর্বাভাস খুলে নিও সব অর্গল
একটা কবিতার তরে জীবনপাত কবিতাই যেখানে উপস্থিত স্বয়ং
ভ্রমণকালের আদিনেশা দেয়ালে দেয়ালে সিগমুন্ড ফ্রয়েড
এ সাক্ষাৎ ছেলেখেলা না; এ যে গুণগ্রাহীদের উপস্থিতি সরব।

আমাকে একটা বর্ধিত রূপ দাও ভ্রমণজাত, শীর্ষ কিংবা অতল
আজ পুরো রাত থমকে যাক, বাহির নয় অন্তরেই খসুক সমূহ বৃষ্টি জল!
 

Comments

    Please login to post comment. Login