উপরে দাঁড়িয়ে থাকা ছায়ামূর্তি ধীরে ধীরে নিচে নামে। চারপাশে বাতাস জমে গিয়ে জমাট বাঁধা অন্ধকারে পরিণত হয়। তার পদচারণায় মন্দিরের পাথর ভেঙে পড়ছে।
ইরো আর রেনজি হতবাক।
কাইজি কাঁপতে কাঁপতে ফিসফিস করে বলে—
“তিনি… ফিরে এসেছেন…!”
ছায়ামূর্তিটি বলে,
“আমি রাইগেন তেনজিন—তোমাদের পিতা। রক্তচক্রের প্রথম বাহক। আমি ছায়াকে সৃষ্টি করেছিলাম, আর আগুন দিয়েছিলাম তোমাদের রক্তে। কিন্তু তোমরা আমাকে হতাশ করেছো।”
ইরো দাঁড়িয়ে যায়, রক্তাক্ত কিন্তু দৃঢ়।
“তুমি… আমাদের জন্ম দিয়েছো শুধু যুদ্ধের জন্য? ভালোবাসার জন্য না?”
রাইগেন:
“ভালোবাসা দুর্বল করে। আমি তোমাদের জন্ম দিয়েছিলাম কারণ আগুন আর ছায়া এক হতে পারে একমাত্র রক্তের মাধ্যমে। কিন্তু তোমরা বিভক্ত হয়ে গেছো।”
রেনজি এবার রাগে ফেটে পড়ে—
“তুমি আমাকে শিশু অবস্থায় ছায়া পরিষদের হাতে তুলে দিয়েছিলে! আমি ভাইয়ের জন্য যেতাম, কিন্তু তুমি… তুমি আমাদের আত্মা চুরি করেছো!”
রাইগেন ঠান্ডা স্বরে বলে—
“তোমরা আমার অস্ত্র। কিন্তু এখন, একটি রক্তচক্রই থাকবে। আর একটি… হবে কোরবানি।”
আঘাত আসে।
রাইগেন আকাশে হাত তোলে, ছায়া আর আগুন একসাথে পাক খায়, তৈরি হয় এক প্রাচীন অস্ত্র—“অগ্নিসূর্য ছায়াবল্লম”।
সে সেটি ছুঁড়ে দেয় ইরোর দিকে!
কিন্তু…
রেনজি ঝাঁপিয়ে পড়ে!
বল্লম বিদ্ধ হয় তার বুকে।
নীরবতা।
ইরো চিৎকার করে উঠে—
“রে-এ-এ-এ-এ-এনজি!!!”
রেনজির মুখে রক্ত, চোখে জল।
সে বলে,
“তুই… তুই আগুন… আগুন আলো দেয়, পোড়ায় না… ভাই… তুই আলোর সন্তান…”
সে ধীরে ধীরে মাটিতে পড়ে যায়। ইরো তার মাথা কোলে রাখে।
রাইগেন ফিসফিস করে,
“তবে এটাই কোরবানি। এখন ইরো, তুই আমার উত্তরাধিকার—আমার শেষ সন্তান। এখন তুই আমার শক্তি গ্রহণ কর, অথবা ছাই হয়ে যা।”
ইরোর ভিতরে সব ভেঙে যায়।
সে রেনজির মুখের দিকে তাকায়। তার হাত শক্ত করে চেপে ধরে।
তার বুকের রক্তচক্র চিহ্ন হঠাৎ ছায়া আর আগুনে একসাথে জ্বলতে শুরু করে।
“রক্তচক্র: সপ্তম স্তর — বিভাজন বিনাশ!”
চারদিক কাঁপে।
পাথর গলে পড়ে।
এক আগুন-ছায়া মিশ্রিত ড্রাগনের মতো শক্তি বের হয় ইরোর শরীর থেকে—রাইগেনের উপর ছুটে যায়!
এক বিশাল বিস্ফোরণ।
রাইগেন ছিটকে পড়ে যায়। তার মুখ পোড়া, চোখ অবাক।
সে বলে,
“তুই… পারলি…!”
শেষ দৃশ্য।
রেনজির দেহ নিঃশ্বাসহীন।
ইরো মাটিতে বসে, চোখে জল।
কাইজি এসে বলে,
“সে তোমার জন্য জীবন দিলো, যেমন একদিন তুই would've done for him…”
ইরো চোখ মুছে উঠে দাঁড়ায়।
তার মুখে এক নতুন আলো।
এক নতুন সংকল্প।
“রক্তচক্রের যুগ শেষ। এবার শুরু হবে নতুন ইতিহাস—আলো ও ছায়ার মিলনের ইতিহাস।”
চলবে…