Posts

গল্প

তুমিই শেষ পৃষ্ঠা পর্ব:-০১ লেখক:-বিদ্যুৎ

April 25, 2025

Op Biddut

112
View

লেখক: বিদ্যুৎ

আমি বিদ্যুৎ, পেশায় লেখক, নেশায় ভালোবাসা। কিন্তু ভালোবাসা আমার কাছে কোনো কল্পনার ফুল না—এটা ছিল, আছে… আর থাকবে একটা মেয়ের নামের ভেতর।

নামটা ছিল—রুহি।

তাকে প্রথম দেখি ধানমণ্ডির এক ছোট্ট ক্যাফেতে। আমি তখন ‘ছায়ার দরজা’ নামের একটা বইয়ের প্লট নিয়ে ভাবছি, সামনে চায়ের কাপ, পাশে খাতা-কলম। হঠাৎ দেখি একটা মেয়ে ঢুকলো, বৃষ্টিভেজা চুলে, গায়ে মাটির রঙের শাড়ি, আর চোখে অদ্ভুত এক চাহনি।
সে এসে আমার টেবিলের পাশে দাঁড়িয়ে বলল,
— “তুমি বিদ্যুৎ না?”
আমি অবাক, কিন্তু মাথা নেড়ে বললাম,
— “হুম, আমি।”
সে হেসে বলল,
— “তোমার লেখায় আমি একবার হারিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু আজ তোমার চোখে নিজেকে খুঁজে পেলাম।”

সেই এক লাইনে আমার জীবনের গল্প শুরু।

রুহির সাথে সময় কাটতে লাগল। সে আমার প্রতিটি লেখা পড়ত, মন্তব্য করত, কখনো প্রশংসা, কখনো নির্মম সমালোচনা। আমি প্রতিদিন নতুন কিছু লিখতে চাইতাম, শুধু তার জন্য।

একদিন সে বলল,
— “তুমি জানো, ভালোবাসা মানে কি?”
আমি বললাম, “তুমি।”
সে হেসে বলল, “ভালোবাসা মানে হচ্ছে কাউকে এতটা আপন ভাবা, যেন তার অনুপস্থিতিও একটা উপস্থাপন হয়ে দাঁড়ায় তোমার মনে।”

আমি কিছু বলিনি। শুধু মনে মনে ওর হাতটা ধরে রাখতে চেয়েছিলাম সারাজীবন।

কিন্তু কোনো এক গল্পে যেমন হঠাৎ পৃষ্ঠা উড়ে যায়, তেমনি একদিন রুহিও চলে গেল।

কোনো কারণ ছাড়াই, কোনো বিদায় না জানিয়ে। শুধু রেখে গেল একটা ছোট্ট চিরকুট:

"তুই তো প্রতিটা গল্প শুরু করিস নিজের মতো… এবার শেষটাও নিজেই লিখে নিস।"

আমি সেই রাতেই কেঁদেছিলাম, প্রথমবার। কিন্তু সে চোখের জল নিয়ে আমি লিখে ফেললাম একটা বই। বইয়ের নাম: "তুমিই শেষ পৃষ্ঠা"।

সেই বইয়ের শেষ লাইনটা ছিল:
“তাকে হারিয়েছি না, তাকে ধরে রেখেছি—সব গল্পের শেষে, নীরব এক ভালোবাসায়।”

আর আজ… তিন বছর পর, বইমেলার স্টলে বসে আছি আমি। ভিড়ের মধ্যে হঠাৎ একটা চেনা গন্ধ আসে—জবা ফুলের মত। আমি তাকাই।

রুহি।

সে বইটা হাতে তুলে নেয়। হাসে। বলে,
— “তুই তো লিখে ফেলেছিস শেষ পৃষ্ঠা। এবার কি নতুন গল্প শুরু করবি আমার সঙ্গে?”

আমি হেসে বলি,
— “এবারের গল্পটা আর কল্পনা হবে না… এবার সত্যিই হবে।”

Comments

    Please login to post comment. Login