আমাদের নতুন গল্প শুরু হয়েছে, ঠিক যেন বৃষ্টির পরে খোলা আকাশের মত।
আমি আর রুহি এখন নিয়মিত দেখা করি—কখনো ক্যাফেতে, কখনো পার্কে, আবার কখনো কেবল হাঁটতে হাঁটতে শহরের নির্জন গলিতে।
রুহি বলেছিল,
— “আগে তুই গল্প লিখতিস আমার জন্য। এখন লিখিস আমার পাশে বসে, আমায় নিয়ে।”
আমি হেসে বলি,
— “তুই এখন শুধু চরিত্র না… তুইই আমার কলম।”
একদিন সন্ধ্যাবেলা, আমরা গেলাম পুরনো সেই লাইব্রেরিতে, যেখানে আমি প্রথম রুহিকে কল্পনায় তৈরি করেছিলাম। লাইব্রেরির এক কোণে বসে সে হঠাৎ বলল,
— “বিদ্যুৎ, আমি তোকে একটা জিনিস অনেকদিন ধরে বলতে চাই।”
আমি একটু চমকে উঠলাম।
সে চোখ নামিয়ে বলল,
— “তুই যখন তোর গল্পের শেষে লিখেছিলি—‘তাকে হারাইনি, তাকে ধরে রেখেছি সব গল্পের শেষে’—সেই লাইনে আমি কেঁদেছিলাম। তখন আমি জানতাম, তুই আমাকে এখনো ভালোবাসিস।”
আমি চুপ করেছিলাম।
তারপর রুহি আবার বলল,
— “কিন্তু একটা কথা তুই জানিস না।”
আমি তাকালাম তার দিকে।
সে বলল,
— “আমি চলে যাওয়ার এক বছর পর… আমার বিয়ে ঠিক হয়েছিল।”
হাতটা কেঁপে উঠল আমার। বুকের ভেতর কি যেন থমকে গেল।
— “কিন্তু আমি বিয়ে করিনি। আমি পালিয়ে এসেছিলাম… কারণ আমি জানতাম, তোকে ছাড়া কোনো গল্প লেখা যাবে না।”
আমার চোখ ভিজে গিয়েছিল। আমি আর কিছু বলিনি, শুধু তার হাতটা ধরলাম।
এইবার আর ছেড়ে দেব না।
সেদিন, লাইব্রেরির সেই ছোট্ট টেবিলে বসে, আমি শুরু করলাম এক নতুন গল্পের প্রথম লাইন—
“এই গল্পে কোনো বিচ্ছেদ নেই। এই গল্প শুধু জোড়া লাগা গল্প।”
---
চলবে...