রুহি এখন প্রতিদিন আমার গল্পের পাতায়, জীবনের সকালে, রাতের চায়ের কাপে। আমাদের জীবন যেন একটা গল্প নয়, বরং একটা চলমান উপন্যাস—যার প্রতিটি অধ্যায়ে মিশে আছে বিশ্বাস, কষ্ট, সাহস আর… ভালোবাসা।
সেদিন হঠাৎ করে রুহি বলল,
— “বিদ্যুৎ, তুই কি কোনোদিন আমার আগের জীবনটা জানতে চাসনি?”
আমি চুপ করলাম কিছুক্ষণ। তারপর বললাম,
— “তুই তো আমাকে তোর নতুন জীবনের শুরুতে এনেছিস। আগেরটা জানলে কী করব?”
সে হেসে বলল,
— “কারণ কিছু জিনিস জেনে রাখা ভালো… যাতে তুই কখনো ভুল বুঝিস না।”
রুহি তারপর তার ব্যাগ থেকে একটা ছোট্ট ডায়েরি বের করল। কালো মলাটের পুরনো সেই ডায়েরির ভেতর ছিল তার হারানো দিনগুলোর গল্প—বিয়ের জন্য চাপ, পরিবারের প্রতিনিয়ত মানসিক টানাপোড়েন, পালিয়ে বেড়ানোর দিনরাত্রি, এমনকি আত্মহত্যার কাছাকাছি চলে যাওয়া এক রাতের কাহিনী।
আমার গলা শুকিয়ে গেল।
সে বলল,
— “আমি তখনও বেঁচে ছিলাম, কারণ তুই লিখে গেছিলি—‘ভালোবাসা শব্দ ছাড়াও বলা যায়’… তোর প্রতিটা বাক্য আমাকে থামিয়ে রাখত।”
আমি ডায়েরিটা বন্ধ করলাম। ধরা গলায় বললাম,
— “তোর সব দুঃখ আমি এবার গল্পে মুছে দেব, তোর জীবনে আলো হয়ে থাকব।”
রুহি আমার দিকে তাকিয়ে বলল,
— “তুই কি এবার… সত্যি সত্যি গল্পটা শেষ করতে চাস?”
আমি বললাম,
— “না রুহি। এবার আমি চাই, গল্পটা শুরু হোক... তোকে আমার স্ত্রী হিসেবে পাশে নিয়ে।”
রুহির চোখে জল এসে গেল। কিন্তু সে হাসল—একটা নিশ্চিন্ত, নির্ভার, সত্যিকারের ভালোবাসার হাসি।
---
চলবে...