আমাদের বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। ছোট্ট পরিসরে, কাছের মানুষদের নিয়ে, রুহির খুব পছন্দের এক লাল ইটের বাড়িতে। সেই বাড়ির উঠোনে সন্ধ্যার আলোয় বাজবে রজনীগন্ধার গন্ধ, আর চারদিকে ভেসে থাকবে আমার লেখা কবিতার কাগজে কাগজে...
সবকিছু ঠিকঠাক। রুহির হাসিতে একরাশ শান্তি। আমার কলম চলছে সুখের বর্ণনায়।
কিন্তু ঠিক সেই সময়েই গল্পে এল এক অচেনা ছায়া।
বিয়ের তিন দিন আগে রুহি একটা ফোন পায়। কথা বলে ফিরে এসে তার মুখটা অদ্ভুত রকম শান্ত, কিন্তু চোখদুটো ফাঁকা।
— “বিদ্যুৎ… একটা কথা বলবো?”
— “হ্যাঁ বলো।”
— “আমার অতীত এখনই থেমে যায়নি।”
আমি অবাক হয়ে তাকালাম।
— “সেই মানুষটা… যার সঙ্গে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছিল, সে ফিরে এসেছে। বলেছে, যদি আমি বিয়ে করি, সে আমার ও তোর জীবনে ঝড় তুলবে।”
আমার মনে হলো কারো যেন কলমটা কেড়ে নিয়ে শেষ লাইনে কালো দাগ টেনে দিল।
আমি ধীরে বললাম,
— “তুই কি ভয় পাস?”
রুহি বলল,
— “ভয় পাই… কিন্তু তোকে হারানোর ভয়টা সবচেয়ে বেশি।”
আমি তার হাত ধরলাম।
— “তুই ভাবিস, আমি তোকে আর হারাবো? আমি সেই লেখক, যে গল্পে কষ্ট রাখলেও, শেষে সবকিছুকে জয় করায় বিশ্বাস রাখে।”
আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম—বিয়েটা হবেই। তবে লোকচক্ষুর আড়ালে, শহরের বাইরে একটা ছোট্ট মন্দিরে। যেখানে কেউ আমাদের গল্পের শেষ লাইনে নাক গলাতে পারবে না।
কিন্তু ঠিক বিয়ের আগের রাতে, আমি পেলাম এক চিঠি।
লাল কালি দিয়ে লেখা:
"তুই যদি রুহিকে বিয়ে করিস, তাহলে তোর গল্পে শুধু শেষ পৃষ্ঠা থাকবে না… থাকবে একটা শেষ অধ্যায়ও।"
আমার বুক কেঁপে উঠল।
আমি জানি, এখন শুরু হবে এক নতুন লড়াই। শুধু ভালোবাসা দিয়ে নয়—বিশ্বাস, সাহস, আর সত্য দিয়ে।
---
চলবে...