(সিনেমাস্তান ক্রনিকলস – পর্ব ১)
বর্ষা বিপ্লবের পর সিনেমাস্তানের সর্বোচ্চ পরিষদ ঘোষণা দিল—
"প্রশ্ন রোগে ভুগছে জাতি, চাই জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি!"
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নাম বদলে রাখা হলো “প্রশংসা ও ইতিবাচক মন্ত্রণালয়”।
সবার জন্য বাধ্যতামূলক হলো “প্রশ্ননিরোধক টিকা”—
টিকার নাম: "ফারুকভ্যাক্স"
উপকারিতা:
প্রশ্ন করলে গায়ে জ্বর আসে।
সন্দেহ করলে চোখে অন্ধকার নামে।
বিশ্লেষণ করতে গেলে হাঁপানি শুরু হয়।
স্কুলে, অফিসে, সিনেমা হলে—সব জায়গায় ক্যাম্প বসে গেল। এক ছাত্র বলল,
“স্যার, গণতন্ত্র মানেই তো প্রশ্ন করার অধিকার।”
সাথে সাথে ইঞ্জেকশন—ছাত্র এখন জাতীয় কবিতা প্রতিযোগিতায় প্রশংসা-ভিত্তিক গদ্য লিখে পুরস্কার জিতছে।
রাস্তায় এক বৃদ্ধ দাঁড়িয়ে মর্মান্তিকভাবে বললেন,
“আমার ছেলেকে গুম করেছে, আমি বিচার চাই।”
পুলিশ তাঁকে ধরে নিয়ে গেল “নেগেটিভিটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে”, যেখানে শেখানো হয়:
“শোক নয়, প্রশংসা করো!”
“বিচার নয়, বাঁধাকপির দাম কমেছে এটা বলো!”
“সত্য নয়, আবেগে ভেসে যাও!”
প্রশংসা মন্ত্রণালয় মাসে একবার “জাতীয় প্রশংসা দিবস” পালন করে। সেদিন সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে বলতে হয়—
"ধন্যবাদ, সিনেমাস্তান! আমার কোনো প্রশ্ন নেই!"
গল্পের শেষ দৃশ্যে দেখা যায়,
একজন সাবেক সাংবাদিক টিকা না নিয়ে জঙ্গলে পালিয়ে গেছে। সে রাতের আঁধারে এক দেয়ালে লিখে যায়—
“প্রশ্ন করতে পারি না মানে আমি বেঁচে নেই।”
ক্যামেরা ধীরে ধীরে জুম আউট হয়।
পেছনে ভেসে আসে ফারুকভ্যাক্সের বিজ্ঞাপন—
“ভবিষ্যৎ নিরাপদ, প্রশ্ন করলে মহাবিপদ।”
লেখক: সাংবাদিক
২৯ এপ্রিল ২০২৫