ঠিক তখনই নীলা বলে উঠল,
— “আপনি নাকি সকালে নিপা আর নিপার বান্ধবীকে চড় মেরেছেন?”
আমি হালকা হেসে বললাম,
— “হুম, তো? কী হয়েছে?”
— “সত্যি? আপনি তাদের চড় মেরেছেন?” — নীলা কিছুটা বিস্ময়ে।
— “হুম, সত্যি মেরেছি। কিন্তু ওরা কি এই নিয়ে আপনাকে কিছু বলেছে?” — আমি।
নীলা নরম সুরে বলল,
— “হুম।”
— “কী বলেছে?” — আমি এবার কিছুটা রাগী সুরে।
নীলা বলতে লাগল,
— “আপনি ভার্সিটি থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর আমি ক্লাসরুম থেকে বেরোচ্ছিলাম, তখন নিপা আর ওর বান্ধবীরা এসে আমাকে জিজ্ঞেস করল, ‘এই তোর নাগর, মিস্টার ক্ষেত কোথায়?’ আমি অবাক হয়ে ভাবছিলাম, এরা হঠাৎ ইকবালকে নিয়ে কথা বলছে কেন! বুঝতে পারলাম, এরা সব জেনে গেছে… কিন্তু যদি আমি কিছু বলি, তাহলে এরা নিপাকে বলবে, আর তারপর হয়তো আপনাকে ভার্সিটি থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করবে। তাই আমি বললাম, ‘আমি জানি না।’ তখন ওরা বলল, ‘ওকে, মিস্টার ক্ষেতকে বলে দিস, আজই ভার্সিটি ছাড়তে হবে।’ এরপর আমি আপনাকে খুঁজতে বের হই।”
ঠিক তখনই নীল, নীলার এক বন্ধু, এসে বলল,
— “এই নীলা, শুনেছিস? নিপার গায়ে হাত তুলেছে ঐ ক্ষেতটা!”
— “কী বলছিস?” — নীলা অবাক।
— “আরে তুই জানিস না? আমি ভাবছিলাম তুই সব জানিস!” — নীল।
— “না, আমি কিছুই জানি না…” — নীলা বিস্ময়ে।
— “কী যে বলিস, তোর তো ওর সাথে ভালো বন্ধুত্ব… আর তুই বলছিস কিছু জানিস না?” — নীল।
নীলার সন্দেহ বাড়তে থাকে। এরপর নীল চলে যায়, আর নীলা সরাসরি ইকবালের কাছে আসে সব বলার জন্য।
আমি (ইকবাল) বললাম,
— “কী! নিপার এত বড় সাহস! আমিও দেখব, কীভাবে ও আর ওর বাবা আমাকে ভার্সিটি থেকে বের করে!”
নীলা শান্ত করার চেষ্টা করে,
— “আরে আপনি এত উত্তেজিত হচ্ছেন কেন? আর আপনি কেনই বা ওদের গায়ে হাত তুললেন?”
— “তো, তুলব না? ওরা যে কতটা বেয়াদবি করছিল, তাই করেছি!” — আমি।
— “তাই বলে হাত তুলতে হবে?” — নীলা।
শেষে নীলা বলল,
— “আচ্ছা, ঠিক আছে, এখন চলুন আপনার বাসায়। কিছুদিন ভার্সিটিতে যাবেন না। সব ঠান্ডা হয়ে গেলে আমি জানাবো।”
আমি কিছুটা গম্ভীরভাবে বললাম,
— “আমি ওদের ভয়ে ভার্সিটিতে যাবো না?”
— “আহা, এমন নয়… কেবল কয়েকদিন… আচ্ছা, না চাইলে না। আপনার ইচ্ছা!” — নীলা রাগ করে চলে যেতে চাইলে আমি ডাক দিলাম,
— “আরে, আপনি রাগ করছেন কেন? আচ্ছা আচ্ছা, ঠিক আছে, আপনার কথা রাখবো।”
নীলা হাসি মুখে বলল,
— “তাহলে চলুন।”
আমি আর নীলা হাঁটতে হাঁটতে চললাম। মনে মনে ভাবছিলাম,
“আমি আপনার কথা পুরোপুরি রাখতে পারবো না… কালই দেখা হবে কে কাকে তাড়ায়!”
নীলা বলল,
— “আপনার বাসা কোন দিকে?”
আমি একটু চিন্তিতভাবে বললাম,
— “আপনিও যাবেন নাকি?”
— “কি বলেন! আপনাকে বিশ্বাস নেই, তাই আমি আপনাকে পৌঁছে দেবো।” — নীলা।
আমি হাসিমুখে বললাম,
— “আসলে আমার আব্বু বলেছেন, যেন কোনো ছেলে-মেয়ে বন্ধু না করি ভার্সিটিতে, তাই…”
— “ও বুঝেছি! আচ্ছা, ঠিক আছে। অন্যদিন যাবো। আর হ্যাঁ, সোজা বাসায় যাবেন কিন্তু!” — নীলা।
— “হুম, বুঝেছি!” — আমি।
নীলা দূর থেকে দাঁড়িয়ে দেখছিল আমি ঠিকঠাক যাচ্ছি কিনা। আমি বারবার পেছনে তাকাচ্ছিলাম… শেষে তাড়াহুড়ো করে চলে এলাম।
রাতে কোনোভাবে সময় পার করে, সকালে হালকা নাস্তা করে আমি আবার বের হলাম ভার্সিটির দিকে।
ভার্সিটির গেট দিয়ে ঢুকতেই…
চলবে…