এক ছোট শহরের ছেলে, রাফি, প্রতিদিন স্কুলে হেঁটে যেত। তার পায়ে এক জোড়া পুরোনো, ফাটা জুতো। বন্ধুদের নতুন জুতোর ঝকঝকে উজ্জ্বলতা তার চোখে লাগে, কিন্তু সে কিছু বলে না। শুধু মনে মনে ভাবে, “কবে আমারও এমন জুতো হবে?”
একদিন স্কুল থেকে ফেরার পথে সে এক জুতার দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। শো-রুমে নতুন নতুন জুতোর ঝিলিক। দোকানের মালিক, এক বৃদ্ধ, তাকে দেখে জিজ্ঞেস করলেন,
—“কী ছেলে, ভেতরে আসবি?”
রাফি লজ্জায় মাথা নুইয়ে বলল,
—“দেখছিলাম শুধু… আমার কেনার সামর্থ্য নেই।”
বৃদ্ধ হাসলেন।
—“শুধু নতুন জুতোই কি দরকার, না জুতোর সঙ্গে সাহসও দরকার?”
রাফি কিছু বলতে পারল না। বৃদ্ধ ভেতর থেকে একটা জুতো বের করলেন। জুতোর গায়ে লেখা
—“এই জুতো যে পরে, সে আত্মবিশ্বাস পায়। এটা নিস। দাম দিতে হবে না। শুধু একটা শর্ত—যখনই হাল ছেড়ে দিতে ইচ্ছে করবে, মনে রাখবি এই জুতোর নাম।”
রাফি সেই জুতো পরে বাড়ি ফিরল। পরদিন স্কুলে সেই জুতো পরে হাজির। কেউ বিশেষ লক্ষ্য করল না, কিন্তু রাফি মনে করল সবাই তাকিয়ে দেখছে। হেঁটে যাওয়ার সময় তার ভেতর অন্যরকম এক শক্তি। ক্লাসে হাত তুলল প্রশ্নের উত্তর দিতে, খেলাধুলায় প্রথম হলো, এমনকি সেই বন্ধুরাও আজ তাকে খেয়াল করল।
দিন যায়, মাস যায়। একদিন সেই জুতো পুরোনো হয়ে যায়। মা নতুন জুতো কিনে দেন। রাফি পুরোনো জুতো জুতার তাকের এক কোণে রেখে দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, চাকরি, নিজের কোম্পানি খুলে ফেলে রাফি।
অনেক বছর পর একদিন সে শহরে ফিরে সেই পুরোনো দোকানটায় গেল। দোকান বন্ধ, শুধু একটুকরো কাগজ দরজায় লাগানো:
“যে আত্মবিশ্বাস পায়, সে নতুন জুতোর চেয়ে অনেক বেশি জেতে।”
রাফি মুচকি হাসি দিয়ে নিজের জুতোর দিকে তাকাল। আজ তার পায়ে দামি ব্র্যান্ডের জুতো। কিন্তু ভেতরে সে সেই প্রথম “Confidence” লেখা জুতোর শক্তিই অনুভব করল।
আর তখনই সে বুঝল—আত্মবিশ্বাস কোনো জুতোর মধ্যে নয়, নিজের মধ্যে থাকে। শুধু একবার বিশ্বাস করতে হয়।
কেমন লাগল গল্পটা? আরও দীর্ঘ বা অন্য কোনো থিমে গল্প চাইলে বলো!