আকাশটা ছিল পরিষ্কার, নীলের মাঝে যেন রঙ তুলির ছোঁয়া। সকালবেলার হালকা ঠান্ডা বাতাসে মনটা ভরে উঠছিল এক অজানা আনন্দে। আমরা যখন স্টেশন ছাড়লাম, শহরের কোলাহল পেছনে পড়ে রইল। ট্রেনের জানালা দিয়ে বাইরের দৃশ্যগুলো একে একে বদলে যাচ্ছিল—দালান-কোঠা, জনসমুদ্র পেরিয়ে প্রকৃতির সবুজে রঙিন হচ্ছিল চারপাশ।
গন্তব্য ছিল একটি পাহাড়ি গ্রাম—নির্জন, শান্ত, অথচ অপার সৌন্দর্যে ভরা। পৌঁছানোর মুহূর্তটা যেন এক স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছিল। পাহাড়ের পাদদেশে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে থাকলাম অনেকক্ষণ। নিচে ছোট নদীটা স্রোতের শব্দে যেন গান গাইছিল।
গ্রামের মানুষজন ছিল অতিথিপরায়ণ। এক চাচা আমাদের থাকার ব্যবস্থা করে দিলেন কাঠের তৈরি ছোট একটি কুটিরে। চারপাশে বুনো ফুলের গন্ধ, পাখির ডাক, আর পাহাড়ি ঝর্ণার কলকল শব্দ—সব মিলিয়ে এক অনন্য অভিজ্ঞতা।
পরদিন সকালবেলায় হাঁটতে বেরিয়ে পড়লাম। পায়ে চলা পথ ধরে উপরে উঠে যাচ্ছিলাম, যতই ওপরে উঠছিলাম ততই বদলে যাচ্ছিল দৃশ্যপট। এক সময় উপরের ফাঁকা জায়গায় দাঁড়িয়ে নিচের পুরো গ্রামটাকে দেখা যাচ্ছিল। মেঘ যেন হাতছানি দিচ্ছে, একটু হাত বাড়ালেই ছুঁয়ে ফেলা যাবে।
সেই পাহাড়ি ভ্রমণ শুধু প্রকৃতিকে দেখা নয়, ছিল আত্মার সঙ্গে এক নতুন পরিচয়ের শুরু। শহরের কোলাহলের বাইরে প্রকৃতির কোলে কিছু সময় কাটানো যেন নতুন করে বাঁচার উপলব্ধি এনে দেয়।