একটা ছোট্ট গ্রাম, নাম তার রঙপুর। গ্রামের প্রতিটি মানুষ যেন রঙের মধ্যে বাঁচে। লাল সূর্যোদয়, নীল নদী, সবুজ ক্ষেত আর হলুদ সরিষা মিলে রঙপুর যেন এক স্বপ্নপুরী। সেই গ্রামে থাকত এক মেয়ে, নাম তার ইচ্ছে। নামের মতোই তার মনটাও ছিল অদ্ভুত কল্পনায় ভরা।
ইচ্ছে ছোটবেলা থেকে এক অদ্ভুত ক্ষমতা নিয়ে জন্মেছিল। সে যা ভাবত, তাই আঁকতে পারত, আর তার আঁকা জিনিসগুলো বাস্তবে রঙিন হয়ে উঠত। একদিন সে খাতায় একটি রঙিন পাখি আঁকল, পরক্ষণেই সেই পাখি উড়ে গিয়ে জানালার পাশে বসে ডেকে উঠল। মা প্রথমে বিশ্বাস করেননি, কিন্তু ধীরে ধীরে গ্রামের সবাই জানতে পারল—ইচ্ছে শুধু আঁকে না, তার আঁকা জীবিত হয়।
একদিন গ্রামের উপর নেমে এলো কালো মেঘ। বৃষ্টি না হয়ে শুরু হলো ঝড়, বিদ্যুৎ, আর ধ্বংস। গ্রামের সবাই ভয় পেয়ে গুহায় লুকাল। কিন্তু ইচ্ছে জানাল, "আমি রঙ দিয়ে অন্ধকার মুছে দিতে পারি!"
সে হাতে তুলে নিল তার রঙিন তুলি আর কাগজ। আঁকল এক বিশাল রঙিন রামধনু, যেখানে সাত রঙ মিলেমিশে হাসছে। ঝড় যতই তাণ্ডব চালাক, ইচ্ছে তার তুলির প্রতিটি টানে রঙ ঢালতে থাকল আকাশে। একসময় সেই রামধনু বাস্তব হয়ে ছড়িয়ে পড়ল আকাশ জুড়ে, কালো মেঘকে সরিয়ে দিল। ঝড় থেমে গেল। গ্রামে ফিরে এলো শান্তি।
সেদিন থেকে সবাই ইচ্ছে কে বলত—ইচ্ছে রঙিন, যে তার স্বপ্নের রঙ দিয়ে পুরো পৃথিবী রঙিন করে দিতে পারে। আর ইচ্ছে জানত, সত্যিকারের জাদু লুকিয়ে থাকে নিজের মনের ভেতর সেই রঙিন ইচ্ছেগুলোতে।