সবাই যখন ব্যস্ত শহরের কোলাহলে, তখন অর্ণব খুঁজছিল একটু নীরবতা। অফিস, ট্রাফিক, ফোনকল, শোরগোল—সবকিছু তাকে ক্লান্ত করে তুলছিল। একদিন হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিল, “কয়েক দিনের জন্য আমি হারিয়ে যাব। কেবল আমি আর নীরবতা।”
সে বেরিয়ে পড়ল। গন্তব্য ঠিক নেই, কেবল নিজের পায়ের ছাপ ধরে এগিয়ে চলা। শহর পেরিয়ে গ্রাম, তারপর নদী, পাহাড়। শেষমেশ পৌঁছাল এক দূর পাহাড়ের চূড়ায়। সেখানে কোনো শব্দ নেই, কোনো মানুষের কণ্ঠ নেই। চারদিকে কেবল বাতাসের মৃদু শোঁ শোঁ আওয়াজ, আর গাছের পাতার হালকা ঝিরঝির।
প্রথমে অর্ণবকে সেই নীরবতা অচেনা লাগল। মনে হলো, সে কি একাকীত্বে ডুবে যাচ্ছে? কিন্তু ধীরে ধীরে সে বুঝতে পারল—এই নীরবতা কোনো শূন্যতা নয়, বরং এক নতুন ভাষা। সে শুনতে পেল নিজের মনের কথা, যা এতদিন কোলাহলে ঢাকা পড়ে ছিল।
রাতের আকাশে তারার আলোয় ভরে উঠল চারদিক। অর্ণব শুয়ে থাকল এক টিলার উপরে, তার হৃদয়ের ভিতরে জন্ম নিল এক অপার্থিব শান্তি। ভোরবেলায় সূর্যের প্রথম আলো গায়ে মেখে সে মুচকি হাসল।
ফিরে আসার সময় অর্ণব বুঝল, নীরবতা কখনও শূন্য নয়। তা এক যাত্রা, যা মানুষকে নিজেকেই নতুন করে চিনিয়ে দেয়।
সেই থেকে অর্ণব জানে, মাঝে মাঝে কোলাহলের ভিড় থেকে বেরিয়ে “নীরবতার ভ্রমণ”-এ যেতে হয়, যেখানে শব্দের বদলে হৃদয়ের স্বর শোনা যায়।