এক ছিলো মায়াবি নামের এক বুদ্ধিমতী মেয়ে। সে ছোট এক গ্রামে থাকতো, যেখানে সবাই তাকে পছন্দ করতো, কারণ সে খুব সাহায্যপ্রবণ ছিলো। তবে গ্রামের বাইরে এক দুষ্ট জাদুকর থাকতো, যার নাম কালনাগ। সে চেয়েছিলো গ্রামের সবাইকে নিজের দাসে পরিণত করতে।
একদিন কালনাগ এক মায়াবী কুয়াশা ছড়িয়ে দিলো গ্রামের চারপাশে। গ্রামের মানুষজন একে একে ঘুমিয়ে পড়লো, আর তাদের স্বপ্নে কালনাগ তার অশুভ শক্তি ছড়াতে লাগলো। সবাই অসুস্থ হয়ে পড়তে লাগলো।
কিন্তু মায়াবি তখনো জেগে ছিলো। সে বুঝতে পারলো, কোনো জাদু এইসব ঘটাচ্ছে। সে গ্রামের বুড়ো জাদুকরের কাছে গেলো সাহায্য চাইতে। বুড়ো জাদুকর বললো, “এই কালনাগকে হারানোর একমাত্র উপায় হলো ‘চাল’ – তবে সেটা কোনো সাধারণ চাল নয়, সেটা হলো ‘বুদ্ধির চাল’। তোমাকে এমন এক চাল খেলতে হবে যা তার জাদুর জাল ভেঙে দেবে।”
মায়াবি ভাবলো, কীভাবে সেই চাল খেলা যায়। সে ঠিক করলো কালনাগের সাথে এক দাবা খেলার আহ্বান জানাবে। কালনাগ হাসতে হাসতে রাজি হলো, কারণ সে মনে করেছিলো কোনো মেয়েই তাকে হারাতে পারবে না।
খেলা শুরু হলো। কালনাগ একের পর এক আক্রমণাত্মক চাল দিতে লাগলো। মায়াবি শান্তভাবে প্রতিটি চালের জবাব দিলো। সবাই দূর থেকে সেই খেলা দেখছিলো। শেষ পর্যন্ত মায়াবি এমন এক ‘চাল’ দিলো, যেখানে কালনাগের রাজার কোনো উপায় রইলো না বাঁচার। সে চেকমেট হয়ে গেলো।
সেই সাথে কালনাগের জাদু ভেঙে গেলো। কুয়াশা মিলিয়ে গেলো, গ্রামবাসীরা জেগে উঠলো। কালনাগ তার শক্তি হারিয়ে পালিয়ে গেলো অন্ধকারে।
মায়াবি শুধু দাবার খেলায় নয়, নিজের বুদ্ধি, ধৈর্য আর সাহসের মধ্য দিয়ে গ্রামের সবাইকে রক্ষা করলো। সেইদিন থেকে “মায়াবির চাল” বলতে সবাই বুঝতো বুদ্ধির বিজয়কে।