রাত্রি গভীর। চাঁদের আলোতে ঢাকা পড়েছে অরণ্যের পথ। সায়রা ধীরে ধীরে হেঁটে চলেছে গ্রামের সীমানা পেরিয়ে সেই পুরনো মন্দিরের দিকে। আজও কেউ জানে না, সে কেন প্রতি পূর্ণিমার রাতে সেখানে যায়।
লোকেরা বলে, মন্দিরে নাকি এক অভিশপ্ত আত্মা বাস করে, যে অপেক্ষা করে তার প্রেমিকার জন্য। কিন্তু সায়রার চোখে ছিল অন্যরকম এক আলো। তার মনে গোপন ছিল এক গভীর টান।
পাথরের সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে মন্দিরের দরজার সামনে দাঁড়াতেই হালকা বাতাস বইতে শুরু করল। এক ফিসফিসানি ভেসে এল — “তুমি এলে, সায়রা…”
সায়রা হেসে বলল, “আজও ভুলোনি আমাকে?”
আলো-ছায়ার ভেতর থেকে ধীরে ধীরে ফুটে উঠল এক ছায়ামূর্তি। তার চোখে হাজার বছরের অপেক্ষার ক্লান্তি, কিন্তু মুখে ছিল মধুর এক শান্তি।
“তুমি কথা দিয়েছিলে, পূর্ণিমার রাতে ফিরে আসবে… আমি প্রতীক্ষা করেছি, শতাব্দীর পর শতাব্দী,” কণ্ঠস্বরে ছিল ভালোবাসা আর যন্ত্রণার মিশেল।
সায়রা এগিয়ে এসে ছুঁয়ে দিল তার মুখ। “আমার প্রাণ ছিল তোমার কাছে বাঁধা। এই জন্মেও তাই ফিরে এসেছি তোমার কাছে।”
চাঁদের আলোতে এক মুহূর্তের জন্য তাদের দুইজনকে ঘিরে জ্বলল অপার্থিব এক দীপ্তি। তারপর দু’জনেই মিলিয়ে গেল সেই আলোয়, হারিয়ে গেল সময়ের সীমানার বাইরে।
পরদিন সকালে গ্রামের লোকেরা মন্দিরের সামনে পেল এক লাল গোলাপ, যার পাপড়িতে লেখা ছিল