অধ্যায় ১: প্রস্তুতির রাত
ঘড়ির কাঁটা রাত ২টা ছুঁই ছুঁই করছে। টেবিলের উপর ছড়ানো বইয়ের পৃষ্ঠাগুলো যেন নিঃশব্দে হাসছে আমার দিকে তাকিয়ে। গণিত, ইংরেজি, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়—সব বিষয়ের বই একসাথে পড়ার চেষ্টা করতে গিয়ে মাথাটা কেমন যেন হালকা লাগছে।
আমি রাফি, দশম শ্রেণির ছাত্র। আগামীকাল জীবনের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা—এসএসসি। মা চুপচাপ বসে আছেন জানালার পাশে, হাতে তসবিহ। আমি জানি, তিনি নামাজ পড়ে আমার জন্য দোয়া করছেন।
কিন্তু আমার মনটা আজ অদ্ভুত চঞ্চল। প্রশ্ন আসবে কী? আমি পারবো তো? এত বছরের পড়া কী একরাতে মনে রাখা যায়?
অধ্যায় ২: পরীক্ষার সকাল
ভোরের আজান শুনে ঘুম ভাঙে। ঘুম বললে ভুল হবে, চোখ বন্ধ করলেও ঘুম আসেনি। মা গরম দুধ আর একটা ডিম নিয়ে হাজির হন।
"পেট ভরে খেয়ে যাস, পরীক্ষায় মাথা কাজ করবে," মা বলেন।
বাবা সাইকেলে বসিয়ে নিয়ে গেলেন পরীক্ষা কেন্দ্রে। রাস্তায় দেখি আরও অনেক ছাত্র-ছাত্রী, কেউ মুখস্ত করছে, কেউ চুপচাপ তাকিয়ে আছে শূন্য চোখে।
পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে বুকটা কেমন ধুকপুক করছে। মনে হচ্ছে যেন এক বিশাল যুদ্ধে নামছি।
অধ্যায় ৩: খাতা খুললেই যুদ্ধ
প্রথম পত্র বাংলা। প্রশ্ন হাতে পেয়েই আমার হাত কাঁপে। ধীরে ধীরে চোখ বুলিয়ে দেখি—হ্যাঁ, কিছু প্রশ্ন চেনা। ভেতরে একটা সাহস ফিরে আসে। সময় চলে যাচ্ছে, আমি লিখে যাচ্ছি, যেন সময়টাই আমার শত্রু।
দুই ঘণ্টার শেষে খাতা জমা দিয়ে বের হই। মনে হয় আমি যেন এক পাহাড় ডিঙিয়েছি।
অধ্যায় ৪: ফলাফল ও উপলব্ধি
পরীক্ষার ২ মাস পর। ফল প্রকাশের দিন। অনলাইনেই রোল দিয়ে রেজাল্ট দেখি—‘A+’। চোখে পানি এসে যায়। মা আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেন, বাবা ফোনে সবাইকে খবর দেন।
আমি বুঝি, একটি পরীক্ষা শুধু লেখার নয়—এটা সাহস, আত্মবিশ্বাস, কষ্ট আর অপেক্ষার পরীক্ষা।
---
শেষ কথা: পরীক্ষা জীবনের একটা অধ্যায়, কিন্তু তা আমাদের গড়ে তোলে পরবর্তী অধ্যায়ের জন্য। পরিশ্রম করলে তার ফল পাওয়া যায়, আর পরীক্ষাই আমাদের শেখায়—জীবনও একটা দীর্ঘ পরীক্ষা।