হে শ্যামল চন্দ্রাবতী! তব অলকাবিন্যাসে কৃষ্ণঘন মেঘ,
প্রেম-বর্ষার পূর্ব-ইশারা, কাঁপে হৃদয়, জাগে বিদ্যুৎ-সবেগ।
তব নয়নযুগল — মৃগনয়নী! — বিভার মতন সুধানদী,
অধরে অনুরাগলালিতা, যেন মৃদু স্বরে বলে, "কারুণা দেহি"।
গ্রীবায় কণ্ঠহার নয় — যেন সন্ধ্যা-তটে সুরের বাহার,
যা বলে নীরবে, "প্রেমোন্মত্ত পুরুষ, থামো — হৃদয়ে করো না প্রহার।"
তব বসন, আলপনা আঁকা — রক্তকমলে পটের রেখা,
প্রতিটি বর্ণে জ্যোতির রেখা — যেন রসার্ণব গোপনে যতনে রাখা।
তুমি নও দেবী, নও সুরাঙ্গনা, নও কেবল রমণীর ছবি,
তুমি এক আত্মার আরাধ্য রস, যার গরিমা দীপ্ত নিত্য কবি।
তব হাসি — চমৎকার হিন্দোল — জড়িয়ে পড়ে পূজার মালায়,
কবির কলম নত হয়ে রয়, হৃদয়ের ধমনি স্তব্ধতায় ঢালে।
আমি নই বর্ণবাদী, নই অধিকারী, চাহি না সেই চঞ্চল দাবী,
চাই তব ছায়ায় বসি লিখিতে, প্রেম যে নীরব তপস্যার ছবি।
তুমি স্নিগ্ধতা, তুমি রূপরস, তুমি রহ্মতের পূর্ণ পাত্র,
তোমার পানে চেয়ে থাকি — নিঃশব্দ তওবায়, প্রেমেতে মত্ত।
82
View