টুথপেস্ট বিপ্লব
অধ্যায় ১: অদ্ভুত সকাল
ছোট্ট গ্রাম হরিপুরে এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটলো এক সকালে। গ্রামের সব দোকান থেকে হঠাৎ করে টুথপেস্ট গায়েব! হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন। বাজারে গিয়ে কেউ পায় না পছন্দের ব্র্যান্ডের কোনো টুথপেস্ট—না কোলগেট, না পেপসোডেন্ট, না কোনো দেশি-বিদেশি কিছু।
গ্রামের সবচেয়ে বুদ্ধিমান মানুষ, মানে আমাদের কাকা—মোতাহার কাকা, কফির কাপ হাতে বললেন,
“আমি তো আগেই বলছিলাম, এই টুথপেস্টের পেছনে কোনো আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র আছে!”
সবাই হাসতে হাসতে উড়িয়ে দিলেও, কাকার চোখে ছিল রহস্যের ঝিলিক।
অধ্যায় ২: জুতোয় পেস্ট!
টুথপেস্ট না পেয়ে গ্রামের মানুষজন নানা কৌশল বের করতে লাগল। কেউ কয়লা ঘষছে দাঁতে, কেউ লবণ দিয়ে, কেউ তো শুকনো নিমপাতা চিবিয়ে হেঁসে পড়ছে—যেন কোনো দানব বেরিয়ে আসবে দাঁতের ফাঁক থেকে।
একদিন হরিপুর স্কুলের পিয়ন হাকিম চাচা ভুল করে টুথপেস্ট ভেবে তার জুতার পলিশ দাঁতে লাগিয়ে ফেললেন। দাঁত তো চকচকে হল ঠিকই, কিন্তু সেই হাসির ভিডিও উঠল ফেসবুকে আর ভাইরাল হয়ে গেল—“জুতো পলিশ দাঁত মজবুত করে?”
অধ্যায় ৩: তাজা টুথপেস্ট আবিষ্কার!
হরিপুরের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে নীলা হঠাৎ করেই তৈরি করে ফেলল এক ধরনের ঘরোয়া টুথপেস্ট—নারকেল তেল, লবণ, পুদিনা পাতা আর তুলসী দিয়ে।
নীলার বাবা চিৎকার করে উঠলেন, “এই যে! আমার দাঁতের ব্যথা তো কমে গেল!”
সেই থেকে গ্রামে এক নতুন বিপ্লবের সূচনা—টুথপেস্ট বিপ্লব!
গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে এখন ঘরোয়া টুথপেস্ট তৈরি হচ্ছে। কেউ নাম দিল “নীলপেস্ট”, কেউ “হরিম্যাজিক”। নীলা হয়ে উঠল গ্রামের নায়িকা।
অধ্যায় ৪: শহর থেকে আগমন
তিন সপ্তাহ পর শহর থেকে এক টুথপেস্ট কোম্পানির লোক আসল। তারা বলল, “আমাদের গুদামে ভুলে করে হরিপুরের সব টুথপেস্টের চালান পাঠানোই হয়নি!”
তখন গ্রামের লোকজন বলল, “থাক থাক, আমরা এখন নিজেরাই তৈরি করি। তোমাদের কেমিক্যাল আমরা আর নেব না।”
শহরের লোক অবাক, “এই গ্রামে টুথপেস্ট তৈরি হয়?”
নীলার তৈরি “নীলপেস্ট” এখন পুরো জেলায় ছড়িয়ে পড়ছে।
অধ্যায় ৫: শেষ হাসি
একদিন মোতাহার কাকা নিজের দাঁত ঘষতে ঘষতে বললেন,
“দেখেছো তো, আমি না বলছিলাম এটা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র। ওরা ভুলে চালান পাঠায়নি না, ইচ্ছা করেই পরীক্ষা করছিল।”
হাসতে হাসতে সবাই বলল,
“ঠিক কাকা, তুমি তো জেমস বন্ডের মতো!”
মোতাহার কাকা হাসলেন, কিন্তু তার মনে সত্যিই সন্দেহ ছিল—আসলে এই ঘটনা হয়তো ছিল অন্য কিছু...
আর সে রহস্য জানে শুধু কাকা আর তার সেই পুরোনো ডায়েরি।